রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আরবি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৩ মাস পার হলেও প্রকাশ হয়নি। দ্রুত ফলাফল প্রকাশের দাবিতে অফিস রুমে ও বিভাগের গেটে তালা দিয়েছে বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের তৃতীয় তলার দুপুর ১২টার দিকে এ দাবিতে তাদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের হয়রানি রোধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন হবে: উপাচার্য

শিক্ষক নিবন্ধনের বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষায় প্রথম কুবি ছাত্রী

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের চতুর্থ বষের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হয়। অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ১ মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশের কথা। কিন্তু ৩ মাস অপেক্ষা করার পরও ফলাফল প্রকাশিত না হওয়ায় দফা দফায় পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও বিভাগের সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করা হয়। কিন্তু কোনো অগ্রগতি আসেনি। এ আগেও প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফলাফল দিতে ৫ মাস সময় নেয় বিভাগের পরীক্ষা কমিটি।

এ সময় তারা ‘রেজাল্ট দিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘চাইতে গেলাম ফলাফল, হয়ে গেলাম বেয়াদব’, ‘তুমি কে আমি কে, বেয়াদব বেয়াদব’, ‘হুমকিদাতার কালো হাত, ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘রেজাল্ট আমাদের অধিকার, দিতে হবে দিতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন বলেন, “বিভাগের পক্ষ থেকে সোমবার (২৫ আগস্ট) ফল প্রকাশের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আরো সময় লাগবে। এক পর্যায়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড.

মো. বেলাল হোসেন আমাদের হুমকি দেন। তিনি বলেন, ‘সাত দিনের মধ্যেও রেজাল্ট দেব না, যা পারো তোমরা করো।”

এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি আরবি বিভাগে অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসেন বলেন, “রেজাল্ট দিতে দেরি হচ্ছে। কিন্তু আমরা বারবার চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত হয়। আমরা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করছি, কিন্তু দেরি হওয়াতে শিক্ষার্থীরা একটু ক্ষিপ্ত হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে আমরা রেজাল্ট দেওয়ার চেষ্টা করবো।”

সার্বিক বিষয়ে আরবি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আরবি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রথম সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে গতকাল কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি, সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ফলাফল প্রকাশ করা হবে।”

সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে বিলম্বের বিষয়ে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে যেন পরীক্ষার পর যথাসময়ের মধ্যেই ফলাফল প্রকাশ করা যায়, সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পর ক ষ কম ট র বর ষ র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ

সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।

এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।

তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।

আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।

অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।

অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।

অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।

আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।

এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।

আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ‍্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’

আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগে

যতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।

এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।

তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
  • সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী