আইসিইউতে চিকিৎসাধীন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের হুঁশ ফিরেছে।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল ৭টা ৫ মিনিটে তার ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানানো হয়।
স্ট্যাটাসে জানানো হয়েছে, ‘নুরুল হক নুরের ওপর গতরাতে হামলার পর এখন পর্যন্ত তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এখন তার কিছুটা হুঁশ ফিরেছে। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’
স্ট্যাটাসের সঙ্গে নুরের দুটি ছবিও প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যায়, তিনি হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছেন, নাকে ব্যান্ডেজ বাঁধা এবং মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো।
গণঅধিকারের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন শুক্রবার (২৯ আগস্ট) মধ্যরাতে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে কথা বলার সময় এই তথ্য দেন। তিনি বলেন, “আমাদের নেতা নুরুল হক নুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক; তিনি বাঁচবেন কি মরবেন; তা আমরা জানি না।”
রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেলের ওয়ানস্টপ ইমারজেন্সি সেন্টার (ওসিসি) থেকে আইসিইউতে নেওয়া হয় নুরকে। তিনি আইসিইউর ৯ নম্বর বেডে চিকিৎসা পাচ্ছেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে কথা বলার সময় রাশেদ খাঁন বলেন, চিকিৎসকরা তাদের জানিয়েছেন- নুরুল হক নুর নাক ও চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। ওসিসিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আইসিইউতে রেফার করা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টা না গেলে তার অবস্থা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।
বিজয়নগরে লাঠিচার্জে আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যাওয়া নুরুল হক নুরকে তার নেতাকর্মীদের উদ্ধার করে কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। রাশেদ খাঁন বলেছেন, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না; তাই তাকে ঢাকা মেডিকেলে আনতে হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেলে আনার পর সেখানে সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম আসেন। আসিফ নজরুল এলে তাকে দেখে বিক্ষোভ করেন গণঅধিকারের নেতাকর্মীরা; একপর্যায়ে তিনি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
অবশ্য প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণঅধিকারের রাশেদ খাঁনের সঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তিনি বলেন, নুরুল হক নুর সেমি-কন্সাস অবস্থায় আছেন বলে চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন। একইসঙ্গে গণধিকারের নেতাকর্মী ও নুরের ওপর হামলার সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাওয়ার সময় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবিতে তারা এই বিক্ষোভ মিছিল বের করেছিল। গণঅধিকারের দাবি, তাদের মিছিলের পেছন থেকে হামলা করেছে জাতীয় পার্টি। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির পাল্টা অভিযোগ, তাদের প্রধান কার্যালয়ে হামলা হয়েছে ওই মিছিল থেকে।
এ নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ঢিল ছোড়াছুড়ির একপর্যায়ে কাকরাইল-বিজয়নগরে দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হন দুই দলের নেতাকর্মীরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিতে মাঠে আসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। উভয় পক্ষকে সরে যেতে নির্দেশ দিলেও গণঅধিকারের সভাপতি নুর সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। এ অবস্থায় তার ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
রক্তাক্ত অবস্থায় নুরুল হক নুরকে কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ঢাকা মেডিকেলে যাওয়ার আগে ফেসবুক পোস্ট দিয়ে তোপের মুখে পড়েন আসিফ নজরুল। সরকারে থেকে কোনো হামলার জন্য নিন্দা জানানো কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। আরো অসংখ্য মানুষ এই উপদেষ্টার সমালোচনা করেন।
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ল হক ন র গণঅধ ক র র র ন ত কর ম আইস ইউত অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫