চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিটিসিএলের ৩৩ লাখ টাকা বকেয়া, মামলার সুপারিশ
Published: 4th, September 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকারি ও বেসরকরি গ্রাহকদের কাছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ৩৩ লাখ টাকা টেলিফোনের বিল বকেয়া রয়েছে। মোট বকেয়া বিলের মধ্যে ৮৫ দশমিক ৮১ শতাংশ ব্যক্তিগত এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে ১৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। দীর্ঘদিন ধরে বিপুল পরিমাণ বিল অনাদায়ী থাকায় প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও গ্রাহকরা বিল পরিশোধে উদাসীন থাকছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এজন্য বিটিসিএল ৮ গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে বকেয়া বিল আদায় আরো কঠিন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিটিসিএলের পরীসংখ্যান মতে- গ্রাহকের কাছে প্রতিষ্ঠানটির টেলিফোন বিল বকেয়া রয়েছে মোট ৩৩ লাখ ৬ হাজার ৫৫৯ টাকা। এরমধ্যে ৪৪৮টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া রয়েছে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৫০৯ টাকা। ব্যক্তি মালিকানাধীন টেলিফোন সংযোগ নেওয়া গ্রাহকের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে ২৮ লাখ ৩৭ হাজার ৫০ টাকা।
সূত্র জানায়, বিটিসিএলের সংযোগ বর্তমানে চালু রয়েছে এমন ২৮০ গ্রাহকের কাছে টেলিফোন বিল বকেয়া রয়েছে ৩ লাখ ২৬ হাজার ৪৮০ টাকা। আগে সচল ছিল বর্তমানে সংযোগ বন্ধ রয়েছে এমন ৩৬৩ গ্রাহকের কাছে টেলিফোনের বিল বকেয়া রয়েছে ২১ লাখ ৯২ হাজার ৮২০ টাকা। এছাড়া ৩ লাখ ১৯ হাজার ৭৫০ টাকা টেলিফোন বিল না দেওয়ায় ৮ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলাও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
৫৫৮ গ্রাহককে নোটিশ:
বছরের পর বছর টেলিফোন বিল বকেয়া রাখায় ৫৫৮ গ্রাহককে নোটিশ দিয়েছে বিটিসিএল। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিল পরিশোধ না করলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, আগে টেলিফোনের সংযোগ সচল ছিল বর্তমানে তা বন্ধ এমন ৩৬৩ গ্রাহকের বিরুদ্ধে ফাইল প্রস্তুত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত টেলিফোনের বিল বকেয়া রাখায় আরো ২২২ গ্রাহকের বিরুদ্ধে একাধিকবার নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিল পরিশোধ না করলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৭ গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ:
১৮৮৫ সালের টেলিগ্রাফ আইন ৭ (ক) কার্যবিধি অনুযায়ী ৩৮৬-১ (ক) ধারা মোতাবেক বিল পরিশোধ না করলে ব্যক্তি পর্যায়ে বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে বিটিসিএল। মামলার আওতামুক্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। ইতোমধ্যে টেলিফোনের বিল বকেয়া রাখায় নতুন মামলার জন্য কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ১৭ গ্রাহকের বিরুদ্ধে ফাইল প্রস্তুত করার জন্য রাজশাহী রাজস্ব অফিসে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাজ শেষেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
যা বলছেন সংশ্লিষ্টরা:
গ্রাহকদের টেলিফোন বিল পরিশোধ না করার প্রবণতা সরকারি রাজস্ব আদায়ে বাধা সৃষ্টির পাশাপাশি বিটিসিএলের সেবার মান উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। টেলিযোগাযোগ সেবার ধারাবাহিকতা এবং প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সক্ষমতা বজায় রাখতে দ্রুত এসব বকেয়া বিল আদায় করা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিটিসিএলের কনিষ্ঠ অফিস সহকারী মো.
চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিটিসিএলের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল কাদের বলেন, “জেলার সরকারি ও বেসরকরি গ্রাহকের কাছে ৩৩ লাখ টাকারও বেশি টেলিফোন বিল বকেয়া রয়েছে। এসব বকেয়া বিল আদায়ের জন্য প্রত্যেক গ্রাহককে প্রতিমাসে নোটিশ প্রদান করা হয়। আমাদের লোকজন সরজমিনে গিয়েও বিল পরিশোধের তাগিদ দিয়ে আসেন। এরপরেও গ্রাহকরা নিয়মিত বকেয়া বিল পরিশোধ করেন না।”
তিনি আরো বলেন, “বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে ব্যক্তি পর্যায়ে বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে বিটিসিএল। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এসব মামলা করার সুযোগ নেই। ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠান টেলিফোন বিল প্রদানে গড়িমসি করে। যুগ যুগ ধরে বিশাল অঙের বিল বকেয়া থাকলেও আদায় করা সম্ভব হয় না। ব্যক্তি গ্রাহকের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় সর্বোচ্চ রায় হতে পারে বিলের সমপরিমাণ মাল ক্রোক। ১৪০ বছর আগে চালু হওয়া এই আইন অনুসারে বিটিসিএল পরিচালিত হওয়ায় বকেয়া উদ্ধার করা সম্ভব হয় না।”
ঢাকা/মেহেদী/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ল ফ ন র ব ল বক য় গ র হক র ব র দ ধ ট ল ফ ন ব ল বক য় প ইনব বগঞ জ ব ল পর শ ধ ন গ র হক র ক ছ ব ট স এল র ৩৩ ল খ ব সরক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫