বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন,“আমি বিশ্বাস করি বিএনপিই একমাত্র দল যারা দেশকে রক্ষা করতে পারবে। এজন্য দলের নেতাকর্মীদের অতীতের মতো ভবিষ্যতেও ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক থাকতে হবে।”

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে জিয়া পরিষদ অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির উদ্যোগে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম ও ২৪ গণঅভ্যুত্থান শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

নুরের ওপর হামলা উদ্দেশ্যমূলক: মির্জা আব্বাস

বিএনপির জনসভায় অপু বিশ্বাস, ‘আমি বগুড়ার মেয়ে’

দুদু বলেন, “শেখ হাসিনা ও তার দোষররা সীমাহীন লুটপাট করে ব্যাংক সেক্টরকে একেবারেই  ধ্বংস করে ফেলেছে। সেই টাকা ফেরত আনবেন এই প্রতিশ্রুতি বর্তমান সরকার প্রধান দিয়েছিলেন। এখনো তিনি সে প্রতিশ্রুতির মধ্যেই আছেন এবং আমাদের একটা দৃঢ় বিশ্বাস আছে যেহেতু তিনি আরো চার, পাঁচ, ছয় মাস থাকবে তার যে ভাবমূর্তি মানে ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূসের যে ভাবমূর্তি দেশে  বিদেশে সবাই তো  তাকে চেনে, বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান তাকে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে তাদের দেশে নিয়ে যান মানে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন এটার জন্য নয়, আগে থেকে তিনি সম্মানিত ছিলেন। তাই আশা করি তিনি টাকা ফেরত আনতে পারবেন।”

তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি দেশে একটি নির্বাচিত সরকার  প্রতিষ্ঠা করতে পারি তাহলে সেই সরকার তার আরথ্য কাজের অংশ হিসেবে বিদেশ থেকে পাচারকৃত টাকা নিয়ে আসতে পারবে। সেই সরকার পরীক্ষিত হবে। গত ১৫-১৬ বছর আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যে দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ জিয়া। এখন যিনি পরিচালনা করছেন এবং পরীক্ষিত নেতা তারেক রহমান তিনি যখন সরকার পরিচালনায় আসবেন তখন আমি নিশ্চিত এই টাকার বড় অংশই দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে।”

বিএনপির এই নেতা দাবি করেন,“দেশে ভুয়া নির্বাচনের সূচনা, নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে ফেলা হয়েছিল স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে। সেই সময় শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে বিরোধী প্রার্থীদের বিজয় কেড়ে নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা করা হয়।”

দুদুর অভিযোগ, “শেখ হাসিনা সেই ধারাকেই অনুসরণ করে ২০০৮ সালের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন।”

তিনি বলেন, “গণতন্ত্র মানেই সুষ্ঠু নির্বাচন। শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরে সেই নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন।গণহত্যা, ব্যাংক লুটপাট ও ভোটচুরির জন্য তার জবাবদিহি করতে হবে।”

তিনি আরো বলেন,“শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর ধরে যা করেছে আদতে তিনি বাংলাদেশ স্বাধীনতাকে মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করেছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান বিষয় ছিল স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র। আর গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে একটি ভালো নির্বাচন। সেই নির্বাচন সে করতে দেইনি, ভোট চুরি করেছে। তাই এই ভোট চুরি জন্য, গণহত্যার জন্য, ব্যাংক ডাকাতির জন্য তার ফাঁসি হওয়া উচিৎ। সে দেশটা খোকলা বানিয়ে দিয়ে গেছে। তাই যেকোনভাবে তাকে দেশে ফেরত এনে তার বিচার করে, সাজা কার্যকর করতে হবে।”

শামসুজ্জামান দুদু বলেন,“বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য বারবার নির্যাতন সহ্য করেছেন, অথচ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো কটূক্তি করেননি।একইভাবে তারেক রহমান দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নিজেকে পরীক্ষিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।”

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মো.

সুজাউদ্দৌলার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ মো. ওবায়দুল হক, অগ্রণী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ, কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ গণতন ত র র জন য কর ছ ন সরক র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান

জাতিসংঘের মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান বলেছেন, ‘আমাদের যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে, তার একটি হলো ঠিক এই মুহূর্তে বাংলাদেশ একটি স্বাভাবিক গণতন্ত্রের দেশ নয়। এখানে গণতন্ত্র চলছে না। কার্যত এটা পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে।’

টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট (টিজিআই) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে আইরিন খান এ কথা বলেন। বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে গত বুধবার ‘আইন থেকে অধিকার: বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণে ডিজিটাল স্বাধীনতার সুরক্ষা’ শীর্ষক এ ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। গতকাল রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ওয়েবিনারে বিদ্যমান ও নতুন সাইবার আইন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া এবং নাগরিকদের ওপর নজরদারিসহ ডিজিটাল সুশাসন-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় ও উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা হয়। টিজিআই–এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে নজরদারি সরঞ্জাম কেনার জন্য ১৯ কোটি ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় করেছে।

ওয়েবিনারে সূচনা বক্তব্য দেন টিজিআই–এর নির্বাহী পরিচালক সাবহানাজ রশীদ দিয়া। গত বছরের জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশে বেশ কিছু সংস্কার হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সাবহানাজ রশীদ বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো বিষয়গুলোর ব্যাপারে কিছু উল্লেখযোগ্য তদন্ত, কমিশন ও প্রক্রিয়া করা হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে আমরা নির্বিচার গ্রেপ্তার হতেও দেখেছি।’

টিজিআই–এর নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। অতীতে আমাদের বিশ্লেষণে আমরা দেখেছি, এই আইন বাংলাদেশে নজরদারির সবচেয়ে সহায়ক এবং একই সঙ্গে এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করেছে।’

আলোচনায় বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা খাতের বিষয়গুলো নিয়ে আইরিন খান বলেন, ‘আমাদের একটি অন্তর্বর্তী সরকার আছে, যার কর্তৃত্ব সীমিত। আমাদের একটি নিরাপত্তা খাত আছে; এই একটি মাত্র খাতে অভ্যুত্থান ও পরিবর্তনের কোনো প্রভাব পড়েনি। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা খাতে সংস্কার নিশ্চিত করতে আমরা কী করতে পারি?’

জাতিসংঘের বিশেষ এই র‍্যাপোর্টিয়ার বলেন, ‘এই রূপান্তর বাস্তবায়নের জন্য নিরাপত্তা খাতকেই সহায়তা করতে এগিয়ে আসতে হবে (বর্তমান সরকারকে)। এখনো তাদের কাছে সব ধরনের (নজরদারি) সরঞ্জাম রয়েছে। আর সে কারণে পরবর্তী সরকারের নেতৃত্ব কে দেবে, তা নির্ধারণে অন্য সবার চেয়ে তাদের বাড়তি সুবিধা রয়েছে।’

পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ডিজিটাল পরিসরে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় বর্তমান সরকার কী করতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনায় আইরিন খান বলেন, ‘ডিজিটাল নিয়ে ভাবুন। আমি মনে করি না, সরকার তা করছে। তবে অন্য সবাই ডিজিটাল নিয়ে ভাবছে। তাই সরকারের ডিজিটাল নিয়ে এবং ডিজিটাল পরিসরে কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে ভাবা দরকার। (ইন্টারনেট) কোম্পানিগুলোকে ডাকুন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন এবং ডিজিটাল পরিসর কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা মানুষকে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকেও বুঝতে দিন।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিনের প্রোগ্রাম অফিসার ডায়নাহ ফন ডার গেস্ট বলেন, ‘আমি মনে করি, নজরদারি নিজে থেকে অবৈধ নয়। সর্বত্র রাষ্ট্রগুলোর জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধের তদন্ত করা এবং নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু নজরদারি যখন ব্যাপক, অস্বচ্ছ ও অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়, তখন তা একটি বিপজ্জনক সীমা অতিক্রম করে।’

ওয়েবিনারে বলা হয়, বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ডিজিটাল স্বাধীনতা যেমন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্যে প্রবেশাধিকার এবং অনলাইনে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে সাইবার আইন ও এর প্রয়োগের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ; ডিজিটাল পরিসরে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং মানুষের অধিকার সুরক্ষায় সংস্কারের সম্ভাবনা নিয়ে এতে আলোচনা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের ‘কঠোরতম ভাষায়’ নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • ‘গাজায় গণহত্যা চলছে, আমি সেই গণহত্যার নিন্দা করছি’
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ