বিরামপুরে স্বেচ্ছাশ্রমে দুর্ভোগের রাস্তা সংস্কার করলেন ভ্যানচালকরা
Published: 6th, September 2025 GMT
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী কাটলা–দাউদপুর গ্রামের ইজিবাইক ও ভ্যানচালকরা এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে অন্ধকারে মুঠোফোন ও ইজিবাইকের আলো জ্বেলে ১২ থেকে ১৩ জন ভ্যান ও ইজিবাইক চালক হাতে কোদাল তুলে নেমে পড়েন কাঁচা রাস্তা সংস্কারে। কেউ গর্ত ভরাট করছেন, কেউ খাটিয়ার সাহায্যে মাটি সমান করছেন। পথচারীরা তাদের এই মহৎ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
আরো পড়ুন:
বেহাল সড়কে চরম ভোগান্তি
সড়ক যেন চষা ক্ষেত
স্থানীয়রা জানান, কাটলা–দাউদপুর গ্রামের প্রায় ২ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১০ ফুট প্রশস্ত এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষ চলাচল করে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বর্ষাকালে রাস্তাটি কাদা ও গর্তে ভরে যায়। এতে ইজিবাইক, ভ্যান, মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল চলাচল একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ে। রোগী পরিবহন, শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া, বাজারে যাতায়াতসহ সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকে না।
গ্রামের সাধারণ মানুষের দাবি, স্বেচ্ছাশ্রমে সাময়িক মেরামত হলেও স্থায়ী সমাধান হবে না। তাই সরকারের জরুরি ভিত্তিতে রাস্তা পাকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
ভ্যানচালক আবুল হোসেন বলেন, “বর্ষাকালে এই রাস্তা দিয়ে ভ্যান চালানো যায় না, বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না, রোগী নেওয়া যায় না। একদিন ভ্যান চালাতে না পারলে আমাদের মুখে খাবার ওঠে না। তাই নিজেরাই কাজ করছি।”
ইজিবাইক চালক আবুল কালাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ভ্যান চালিয়ে খাই, না চালালে খাওয়া নাই। সপ্তাহে ১ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হয়। রাস্তায় দুর্ঘটনায় গাড়ি উল্টে যায়। চেয়ারম্যান–মেম্বাররা বিষয়টি আমলে নেয় না। ভোট দেই, তবু রাস্তা পাকা হয় না।”
স্থানীয় শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেলে স্কুলে যাই। প্রায়ই কাদা–পানিতে ভিজতে হয়। ভ্যানচালকদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। তবে সরকারকেও দ্রুত রাস্তা পাকাকরণের উদ্যোগ নিতে হবে।”
গরু খামারি মোজাফফর হোসেন বলেন, “২৫টি গরু নিয়ে খামার করেছিলাম। কিন্তু রাস্তার দুর্ভোগে ব্যবসায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক উদ্যোক্তাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।”
স্থানীয় মসজিদের ইমাম রেদওয়ানুল করিম বলেন, “বর্ষায় এই রাস্তা দিয়ে হাঁটা–চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। অসুস্থ মানুষ ডাক্তারের কাছে যেতে পারে না। যারা রাত জেগে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছে, তারা অবশ্যই আল্লাহর কাছে সাদাকায়ে জারিয়ার সওয়াব পাবেন।”
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এই র স ত উদ য গ
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার
ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।
আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।
বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।
অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।
আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।