পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত শাবানা মাহমুদকে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তিনিই প্রথম মুসলিম নারী, যিনি যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

ফ্ল্যাট কেলেঙ্কারির কারণে অ্যাঞ্জেলা রেনার উপপ্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করার পর মন্ত্রিসভায় এ রদবদলের ঘোষণাটি এলো। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিবাসন, পুলিশ ও জাতীয় নিরাপত্তা প্রশাসন তত্ত্বাবধান করে।

আরো পড়ুন:

বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ মানুষ তিনি

ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালে প্রস্তুত যুক্তরাজ্য-ফ্রান্স-জার্মানি

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা জাতিকে রক্ষা করেছেন। আজ আমরা একটি নতুন অধ্যায় শুরু করছি। আমরা নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদকে স্বাগত জানাই।”

নিজের এক্স পোস্টে শাবানা লিখেছেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আমার জন্য সম্মানের। সরকারের প্রথম দায়িত্ব হলো তার নাগরিকদের নিরাপত্তা। দায়িত্ব পালনকালে প্রতিদিন আমি সেই উদ্দেশ্যেই নিবেদিত থাকব।”

শাবানা মাহমুদ ১৯৮০ সালে বার্মিংহামে কাশ্মীরি-পাকিস্তানি বাবা-মা জুবাইদা ও মাহমুদ আহমেদের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা-মা মূলত আজাদ কাশ্মীরের মিরপুরের বাসিন্দা, কিন্তু কয়েক দশক আগে লুধারের কাছে ঝিলামের বোহরিয়া গ্রামে চলে আসেন। শাবানা তার শৈশবকাল সৌদি আরবে কাটান। এরপর তিনি যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে তিনি অক্সফোর্ডের লিংকন কলেজ থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন এবং পরে ব্যারিস্টার হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেন।

শাবানা মাহমুদ ২০১০ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তিনি বার্মিংহাম লেডিউড থেকে এমপি নির্বাচিত হন, যা তার রাজনৈতিক জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। তিনি যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী মুসলিম এমপিদের একজন। তারপর তিনি ছায়া অর্থমন্ত্রী এবং কারাগারের ছায়া মন্ত্রীসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে তিনি পদত্যাগ করেন কিন্তু কেয়ার স্টারমারের অধীনে ফিরে আসেন। ২০২৩ সালে তিনি ছায়া বিচারমন্ত্রী ছিলেন এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টির জয়ের পর, বিচারমন্ত্রী এবং লর্ড চ্যান্সেলর হন।

বিচারমন্ত্রী থাকাকালে তিনি কারাগারের ভিড় কমাতে ‘আগাম মুক্তি কর্মসূচি’ চালু করেন এবং কঠোর নির্বাসন আইনের পক্ষে ছিলেন। কঠোর নির্বাসন ব্যবস্থা উন্মোচন করার সময় তিনি বলেছিলেন, “আপনি যদি আমাদের আতিথেয়তার অপব্যবহার করেন এবং আমাদের আইন ভঙ্গ করেন, তাহলে আমরা আপনাকে বিতাড়িত করব।”

এদিকে রদবদলের অংশ হিসেবে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিকে উপ-প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৫৩ বছর বয়সী ল্যামি তার নতুন দায়িত্বের পাশাপাশি দুটি পদকে একত্রিত করে বিচারমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করবেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর জ য য ক তর জ য র ব চ রমন ত র স বর ষ ট র মন ত র র মন ত প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা 

সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ