সেন্টমার্টিন থেকে ৪০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি
Published: 11th, September 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন সাগর থেকে আবারো জেলেদের ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এবার পাঁচটি মাছ ধরার ট্রলারসহ অন্তত ৪০ জন জেলেকে তুলে নিয়ে গেছে তারা।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব সাগর থেকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ পৌর বোট মালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ।
তিনি জানান, ট্রলারগুলোর মধ্যে তিনটির মালিক টেকনাফ পৌর এলাকার এবং দুটির মালিক শাহপরীরদ্বীপের বাসিন্দা। তবে ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের নাম-পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা জেলেদের বরাত দিয়ে তিনি আরো বলেন, “বিকেলে ২০ থেকে ৩০টি ট্রলারে জেলেরা মাছ ধরছিলেন। এসময় দুটি স্পিডবোটে আরাকান আর্মির সদস্যরা এসে অস্ত্রের মুখে পাঁচটি ট্রলারসহ অন্তত ৪০ জনকে ধরে নিয়ে যান।”
টেকনাফ পৌর বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, “ঘটনার খবর পাওয়ার পর বিজিবি, কোস্টগার্ড ও প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তবে সঠিক সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি জানা গেছে। বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।”
এর আগে ৫ থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে আরও ১৩টি ট্রলারসহ ৮১ জন জেলেকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। তাদের অনেকের এখনও খোঁজ মেলেনি।
শাহপরীরদ্বীপের ট্রলার মালিক সাইফুল ইসলাম জানান, তার ট্রলারটি মাছ ধরতে গিয়ে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আর ফেরেনি। পরে ‘গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্ক’ নামের একটি ফেসবুক পেজে আটক জেলেদের ছবি প্রকাশিত হলে তিনি তার ট্রলারের দুই জেলেকে শনাক্ত করেন। তার ট্রলারে ১০ জন জেলে ছিল।
শাহপরীরদ্বীপ জেটিঘাট বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল গফুর বলেন, শাহপরীরদ্বীপ ঘাটের একটি এবং টেকনাফ কায়ুকখালী ঘাটের দুটি ট্রলার আরাকান আর্মি আটক করেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া শাহপরীরদ্বীপ ঘাটের আরো দুটি ট্রলার আটকের খবর পাওয়া গেছে, তবে মালিকদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে মোট ৩২৫ জন জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। বিজিবির প্রচেষ্টায় কয়েক দফায় ১৮৯ জন জেলে ও ২৭টি নৌযান ফেরত এসেছে।
ঢাকা/তারেকুর/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আর ক ন আর ম জন জ ল
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ