জুলাই সনদ শুধু কাগজে নয়, বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা থাকতে হবে
Published: 22nd, October 2025 GMT
জুলাই সনদ শুধু কাগজে নয়, বাস্তবায়নের নির্ভরযোগ্যতা থাকতে হবে। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পরিষ্কার না হলে স্বাক্ষর অর্থহীন হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। বৈঠকে জুলাই গণহত্যা-বিচার, ‘জুলাই সনদ’, নির্বাচন কমিশন, জন প্রশাসন, উপদেষ্টা পরিষদ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণাসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
আরো পড়ুন:
ভ্রান্ত তথ্য নির্বাচনের আগে বড় চ্যালেঞ্জ: প্রধান উপদেষ্টা
যমুনায় জামায়াতের প্রতিনিধি দল
নাহিদ ইসলাম বলেন, “প্রথমে কখন, কীভাবে ও কার মাধ্যমে এই সনদ বাস্তবায়িত হবে, তার একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে। এরপরই আমরা সিদ্ধান্ত নেব, স্বাক্ষর করব কি না।”
তিনি আরো বলেন,“সনদ বাস্তবায়নে যদি সংবিধানবিরোধী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তবে তার বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার ভিত্তিতে এই সনদ কার্যকর করতে হবে এবং প্রয়োজনে গণভোটের ব্যবস্থা রাখতে হবে।”
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশন কি সত্যিই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারছে, সেটি স্পষ্ট নয়। কিছু ক্ষেত্রে দলীয় প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “সরকারের দায়িত্ব হলো সবার জন্য সমান প্রতিযোগিতার পরিবেশ ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করা।”
প্রশাসনে বদলি ও পদায়ন অনেক ক্ষেত্রেই যোগ্যতার ভিত্তিতে নয় বরং রাজনৈতিক বিবেচনায় হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম বলেন,“এতে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদেও এমন সদস্য আছেন, যারা রাজনৈতিকভাবে সংযুক্ত বা প্রভাবিত।”
তিনি আরো বলেন, “প্রশাসন ও উপদেষ্টা পরিষদ যেন পার্টি রাজনীতির বাহক না হয়ে স্বচ্ছ ও দক্ষভাবে কাজ করে, সেটিই এখন জরুরি।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে নই। তবে বর্তমান সরকার যেন নিরপেক্ষভাবে তত্ত্বাবধায়ক-সদৃশ দায়িত্ব পালন করে, সেটাই আমরা চাই।”
তিনি আরো বলেন, “যেহেতু জুলাই সনদ এখনও আলোচনার পর্যায়ে, তাই এখনই নতুন সরকার বা উপদেষ্টা পরিষদ সম্পূর্ণ পরিবর্তন করা আইনগতভাবে উপযুক্ত নয়। এ বিষয়ে এনসিপি সংবিধান সংস্কার, গণভোট এবং আইন প্রক্রিয়ার রূপরেখা চেয়েছে।”
নির্বাচন কমিশন এনসিপিকে নিবন্ধন ও ‘শাপলা’ প্রতীক না দেয়, তবে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “এটি শুধু প্রতীকের বিষয় নয়, বরং কমিশনের ন্যায্যতা ও নিরপেক্ষতার প্রশ্ন।”
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মামলার প্রসঙ্গ টেনে নাহিদ ইসলাম প্রশ্ন তোলেন,“নির্বাচন কমিশন কি নির্বাচনের প্রস্তুতিতে যথেষ্ট কার্যকর ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।”
ঢাকা/রায়হান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হ দ ইসল ম ড ম হ ম মদ ইউন স জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প ন হ দ ইসল ম ব জ ল ই সনদ উপদ ষ ট সরক র এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগর আজ ঢাকা, একটি স্থানে দূষণ ভয়াবহ
বিশ্বের ১২৭টি নগরীর মধ্যে আজ সোমবার সকালে প্রথম স্থানে আছে রাজধানী ঢাকা। চলতি ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে প্রতিদিন বায়ুর মান ভয়ানক খারাপ থাকছে। আর ঢাকার একটি স্থানে দূষণের যে অবস্থা, তাকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বলা হয়।
আজ সকাল পৌনে ৯টার দিকে ঢাকার বায়ুমান ২৭১। ২৬০ স্কোর নিয়ে বিশ্বের নগরীগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছে মিসরের রাজধানী কায়রো। তৃতীয় স্থানে আছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। এর বায়ুর মান ২৪৯।
বায়ুদূষণের এ পরিস্থিতি তুলে ধরেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। প্রতিষ্ঠানটি বায়ুদূষণের অবস্থা নিয়মিত তুলে ধরে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয়, সতর্ক করে।
সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন গত শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বায়ুর নগরী ছিল। পরিদন সাপ্তাহিক ছুদির দ্বিতীয় দিনেও ঢাকার অবস্থান ছিল প্রথম দিকে।
বায়ুর মান ২০০-এর বেশি হলে তাকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। আর ৩০০-এর বেশি হলে তা ‘দুর্যোগপূর্ণ’। এর মধ্যে গত ২৮ নভেম্বর ঢাকার বায়ুমান ৩০০ অতিক্রম করেছিল।
দেশে বায়ুদূষণ মোকাবিলায় বিভিন্ন সময় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এখনো নানা উদ্যোগ-কথাবার্তা শোনা যায়। কিন্তু বায়ুদূষণ পরিস্থিতি দিন দিন খারাপই হচ্ছে। এটা শুধু যে ঢাকায় তা নয়, সারা দেশে। কোনো কোনো দিন ঢাকাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে দেশের অন্যান্য শহরের বায়ুদূষণ।
ঢাকার ৮ স্থানে বায়ুদূষণ বেশি
বায়ুর মান যদি সর্বোচ্চ হয় বা খুব খারাপ হয়, তবে তাকে দুর্যোগপূর্ণ বলা হয়। রাজধানীর একটি স্থানে আজ এমন অবস্থা আছে। সেই স্থানটি হলো গোড়ান। সেখানকার বায়ুর মান ৩৮৮। ঢাকার আর সাত স্থানেও বায়ুর মান খুব অস্বাস্থ্যকর। স্থানগুলো হলো দক্ষিণ পল্লবী (২৯৪), মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং (২৮০), বে’জ এজ ওয়াটার (২৭২), বেচারাম দেউড়ি (২৭২), কল্যাণপুর (২৭০), গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (২৪৩) ও শান্তা ফোরাম (২৩৩)।
চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে ধারাবাহিকভাবে ঢাকা বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষের দিকে থাকছে। ঢাকার বায়ুমান খুব অস্বাস্থ্যকর দেখা যাচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই। আজ তা খুবই অস্বাস্থ্যকর।
সুরক্ষায় নগরবাসী যা করবেন
আইকিউএয়ারের পরামর্শ অনুযায়ী, আজ ঢাকায় বায়ুর যে মান, তাতে বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। বাড়ির বাইরে গিয়ে ব্যায়াম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আর ঘরের জানালাগুলো যতটা সম্ভব বন্ধ রাখতে হবে।