নতুন বলরুম নির্মাণের স্বার্থে হোয়াইট হাউসের ইস্ট উইং পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হবে: ট্রাম্প
Published: 23rd, October 2025 GMT
পরিকল্পিত নতুন বলরুম নির্মাণের জন্য হোয়াইট হাউসের ইস্ট উইং পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্ত তাঁর পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী। কারণ, একসময় তিনি বলেছিলেন, নতুন বলরুম নির্মাণ প্রকল্পের কারণে হোয়াইট হাউসের কোনো স্থাপনার ক্ষতি হবে না।
হোয়াইট হাউসের ইস্ট উইং ফার্স্ট লেডি ও তাঁর কর্মচারীদের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গত সোমবার এটির একাংশ ভাঙার কাজ শুরু হয়। এই কাজের কিছু ছবি সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ওই প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। যদিও এর দুই দিন পর ইস্ট উইং পুরোপুরি ভেঙে ফেলার বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়।
গতকাল বুধবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘কাজটি যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য আমাদের বিদ্যমান কাঠামো ভেঙে ফেলতে হচ্ছে।’
একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, ইস্ট উইং ভাঙার কাজ দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে পারি, পুরো ইস্ট উইং আধুনিকীকরণ ও সংস্কার করা হবে। সম্ভবত বলরুম নির্মাণ প্রকল্পের সুবিধার জন্য এটি করা হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনাটির একটি অংশ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তে ডেমোক্র্যাটের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ট্রাম্প প্রশাসন এই কাজের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম মানছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
হোয়াইট হাউস অবশ্য এসব সমালোচনাকে ‘উসকানিমূলক ক্ষোভ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
১৯৪২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের সময় হোয়াইট হাউসের ইস্ট উইংয়ের সর্বশেষ সংস্করণটি তৈরি করা হয়। ইতিহাসজুড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা হোয়াইট হাউস ও এর আশপাশের এলাকা সংস্কার ও সম্প্রসারণ করেছেন। তবে ট্রাম্পের এসব পরিবর্তন গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসের অবমাননা মার্কিন জনগণের প্রতি অবমাননা এবং আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।’
ওয়াশিংটন ডিসি ও প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্মাণকাজ তদারকি করে ন্যাশনাল ক্যাপিটাল প্ল্যানিং কমিশনে (এনসিপিসি)। হোয়াইট হাউস গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, বলরুম নির্মাণ পরিকল্পনাটি পর্যালোচনার জন্য এই কমিশনে জমা দেওয়া হবে। যদিও এর আগেই ইস্ট উইং ভাঙার কাজ শুরু হয়ে গেছে।
ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস স্টাফ সেক্রেটারি উইল শার্ফ এনসিপিসির চেয়ারম্যান। তিনি গতকাল রয়টার্সকে বলেন, তিনি বলরুম নির্মাণ পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন না। পরিকল্পনাটি যখন কমিশনের সামনে আসবে, তখন তিনি বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে দেখবেন।
গতকাল ট্রাম্প বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩০ কোটি ডলার। জুলাইয়ে ঘোষিত এ প্রকল্পের প্রাথমিক বাজেট ছিল ২০ কোটি ডলার। তিনি বলেন, তিনি এবং অন্যান্য দাতারা বলরুমের অর্থায়ন করছেন, তবে তিনি সম্পূর্ণ আর্থিক তথ্য প্রকাশ করেননি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বলর ম ন র ম ণ প প রকল প র র জন য গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নগর আজ ঢাকা, একটি স্থানে দূষণ ভয়াবহ
বিশ্বের ১২৭টি নগরীর মধ্যে আজ সোমবার সকালে প্রথম স্থানে আছে রাজধানী ঢাকা। চলতি ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে প্রতিদিন বায়ুর মান ভয়ানক খারাপ থাকছে। আর ঢাকার একটি স্থানে দূষণের যে অবস্থা, তাকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বলা হয়।
আজ সকাল পৌনে ৯টার দিকে ঢাকার বায়ুমান ২৭১। ২৬০ স্কোর নিয়ে বিশ্বের নগরীগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছে মিসরের রাজধানী কায়রো। তৃতীয় স্থানে আছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। এর বায়ুর মান ২৪৯।
বায়ুদূষণের এ পরিস্থিতি তুলে ধরেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। প্রতিষ্ঠানটি বায়ুদূষণের অবস্থা নিয়মিত তুলে ধরে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয়, সতর্ক করে।
সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন গত শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বায়ুর নগরী ছিল। পরিদন সাপ্তাহিক ছুদির দ্বিতীয় দিনেও ঢাকার অবস্থান ছিল প্রথম দিকে।
বায়ুর মান ২০০-এর বেশি হলে তাকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। আর ৩০০-এর বেশি হলে তা ‘দুর্যোগপূর্ণ’। এর মধ্যে গত ২৮ নভেম্বর ঢাকার বায়ুমান ৩০০ অতিক্রম করেছিল।
দেশে বায়ুদূষণ মোকাবিলায় বিভিন্ন সময় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এখনো নানা উদ্যোগ-কথাবার্তা শোনা যায়। কিন্তু বায়ুদূষণ পরিস্থিতি দিন দিন খারাপই হচ্ছে। এটা শুধু যে ঢাকায় তা নয়, সারা দেশে। কোনো কোনো দিন ঢাকাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে দেশের অন্যান্য শহরের বায়ুদূষণ।
ঢাকার ৮ স্থানে বায়ুদূষণ বেশি
বায়ুর মান যদি সর্বোচ্চ হয় বা খুব খারাপ হয়, তবে তাকে দুর্যোগপূর্ণ বলা হয়। রাজধানীর একটি স্থানে আজ এমন অবস্থা আছে। সেই স্থানটি হলো গোড়ান। সেখানকার বায়ুর মান ৩৮৮। ঢাকার আর সাত স্থানেও বায়ুর মান খুব অস্বাস্থ্যকর। স্থানগুলো হলো দক্ষিণ পল্লবী (২৯৪), মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং (২৮০), বে’জ এজ ওয়াটার (২৭২), বেচারাম দেউড়ি (২৭২), কল্যাণপুর (২৭০), গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (২৪৩) ও শান্তা ফোরাম (২৩৩)।
চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে ধারাবাহিকভাবে ঢাকা বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষের দিকে থাকছে। ঢাকার বায়ুমান খুব অস্বাস্থ্যকর দেখা যাচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই। আজ তা খুবই অস্বাস্থ্যকর।
সুরক্ষায় নগরবাসী যা করবেন
আইকিউএয়ারের পরামর্শ অনুযায়ী, আজ ঢাকায় বায়ুর যে মান, তাতে বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। বাড়ির বাইরে গিয়ে ব্যায়াম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আর ঘরের জানালাগুলো যতটা সম্ভব বন্ধ রাখতে হবে।