ভোলায় বিএনপি–বিজেপির সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত অর্ধশত
Published: 1st, November 2025 GMT
ভোলায় বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি–আন্দালিভ রহমান পার্থ) সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ভোলা শহরের নতুন বাজার এলাকায় আজ শনিবার দুপুরে ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।
এর মধ্যে এক পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকও রয়েছেন। তাঁরা হলেন– ভোলা সদর থানার উপপরিদর্শক আউয়াল, দৈনিক আজকের ভোলার সহ-সম্পাদক ও বাংলাবাজার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এম শাহরিয়ার ঝিলন, নিউজ২৪ –এর ক্যামেরাপরসন রানা ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নতুন বাজারে বিজেপি জেলা কার্যালয়ের সামনে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে নতুন বাজার থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি গাড়ি, দোকান ও রাজনৈতিক দলের পোস্টার–ব্যানার ভাঙচুর করা হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে নতুন বাজার ও বিজেপি জেলা কার্যালয় এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ভোলা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষে আহত অন্তত ২০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে দুই দলই দাবি করছে, তাদের অন্তত ৫০ জন করে আহত হয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য কয়েকজনকে বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাত মো.
দুই দলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
সংঘর্ষের পর ভোলা জেলা বিএনপি তাদের কার্যালয়ে বেলা দুইটায় সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রাইসুল আলম অভিযোগ করে বলেন, তাঁদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে পেছন দিক থেকে বিজেপির কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালান। তিনি বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাদের ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক বলেন, তাঁদের সদর উপজেলা কমিটির সদস্যসচিব মো. হেলাল উদ্দিনকে বিজেপির নেতারা কটাক্ষ করায় তাঁরা আজ প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। সকাল ১০টায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি বাংলা স্কুল মোড়ে গেলে দুটি বোমা বিস্ফোরণ ও গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। এ সময় তাঁদের লক্ষ্য করে বিজেপির কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপরই সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বিএনপির অন্তত ২৫ জন আহত হন।
সম্প্রতি ভোলার বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির বিরুদ্ধে ঝাড়ুমিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। এর প্রতিবাদে আজ প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করে বিজেপি। দলের ভোলা জেলার সাধারণ সম্পাদক মোতাসিম বিল্লাহ বলেন, বিজেপির নেতা–কর্মীরা প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ে সভা করছিলেন। এ সময় বিএনপির নেতা–কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালিয়েছেন। এতে তাঁদের ২৪ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
ভোলা বিজেপির প্রচার সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির একটি পক্ষ আমাদের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ সভায় বিএনপির লোক এসে ভাঙচুর করেছেন।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আহত হয় ছ ন নত ন ব জ র পর স থ ত ব এনপ র য় ব এনপ জন আহত স ঘর ষ কর ম র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনার জন্য চীনের সহযোগিতা চাইলো দক্ষিণ কোরিয়া
পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়ার সাথে আলোচনা পুনরায় শুরু করতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাহায্য চেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউং। শনিবার দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়ংজু শহরে এশিয়া-প্যাসিফিক নেতাদের ফোরামের পর এক রাষ্ট্রীয় শীর্ষ সম্মেলন এবং নৈশভোজে চীনা প্রেসিডেন্টের কাছে এই অনুরোধ করেছেন তিনি।
জবাবে শি লিকে জানিয়েছেন, তিনি সহযোগিতা আরো বিস্তৃত করতে এবং তাদের মুখোমুখি চ্যালেঞ্জগুলো যৌথভাবে মোকাবেলা করতে ইচ্ছুক।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, শীর্ষ সম্মেলনের আগে শি বলেছেন, বেইজিং সিউলের সাথে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি অবিচ্ছেদ্য সহযোগী অংশীদার হিসেবে দেখে।
জুন মাসে আকস্মিক নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত লি চীনকে না চটিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছেন এবং উত্তর কোরিয়ার সাথে উত্তেজনা কমাতে চাইছেন।
চীন এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সাম্প্রতিক উচ্চ পর্যায়ে বৈঠকের উল্লেখ করে লি বলেন, “উত্তর কোরিয়ার সাথে সম্পর্কের জন্য যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে সে সম্পর্কে আমি খুবই ইতিবাচক।”
তিনি বলেছেন, “আমি আশা করি দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীন এই অনুকূল পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সাথে কৌশলগত যোগাযোগ জোরদার করবে এবং সংলাপ পুনরায় শুরু করবে।”
লি উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের জন্য পর্যায়ক্রমে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যার শুরুতে পারমাণবিক অস্ত্রের আরো উন্নয়ন স্থগিত করার বিষয়টি রয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ