‘রানি মা আছে? কোন সে রানি’ স্লোগানে ইলা মিত্রের জন্ম শতবর্ষ উদ্যাপন
Published: 18th, October 2025 GMT
নববধূ বিনোদিনী তাঁর শাশুড়ি মেহেরুনের এক হাত ধরে রেখেছেন শক্ত করে। এদিকে ছোট্ট মেয়েকে ঘাড়ে নিয়েছেন সুবল। কমলা টুডুর কোলে খিলখিল করে হাসছে তাঁর মেয়ে। তাঁরা এগিয়ে চলেছেন শুভযাত্রায়। ঘড়িতে বাজে বেলা ১১টা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের মোড়ে বেজে উঠল টামাক, মাদল, ঢাক-ঢোল, করতাল। চড়া গলায় স্লোগান উঠল, ‘রানি মা আছে? কোন সে রানি?’ জবাবে জনতার কণ্ঠে শোনা গেল ‘ইলা মিত্র, ইলা মিত্র, কৃষকের রানি ইলা মিত্র, বাঙালির রানি ইলা মিত্র’, ‘শুভ শুভ শুভ দিন, ইলা মিত্রের জন্মদিন’।
তেভাগা আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেত্রী ইলা মিত্রের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আজ শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বাঙালি কৃষক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল এই শোভাযাত্রা। এতে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই ছিলেন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কৃষক। তাঁরা এসেছেন নাচোলসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে।
আরও পড়ুন‘ইলা মিত্র: কাঁটাতারে প্রজাপতি’৩ ঘণ্টা আগেফায়ার সার্ভিস মোড় থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূর থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর পার্কে গিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে শেষ হয়। আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই বাদ্য বাজিয়ে কৃষকেরা নেচে নেন। তারপর জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো মূল আনুষ্ঠানিকতা।
সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক বঙ্গপাল সরদার। তিনি বললেন, ‘ইলা মিত্র আমাদের লড়াই করে বাঁচতে শিখিয়ে গেছেন। আমাদের লড়াই করে বাঁচতে হবে। সেই লড়াই এখনো করে যেতে হবে। আমরা কি আমাদের অধিকার পেয়েছি? পাইনি। এখনো সেই লড়াই করেই যেতে হবে।’
আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই বাদ্য বাজিয়ে কৃষকেরা নেচে নেন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশে কারখানা চালু করল স্মার্টফোন নির্মাতা অনার
গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে এআই প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্টফোন তৈরির কারখানা চালু করেছে চীনের স্মার্টফোন নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান অনার। চীনের পাঁচটি অঞ্চল ও ইন্দোনেশিয়ার পর বাংলাদেশে নিজস্ব ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন তৈরি কার্যক্রম শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এ কারখানার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। এ সময় কারখানা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) পরিচালক মো. নূরন্নবী, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া, অনারের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট জর্জ ঝেং এবং গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের প্রেসিডেন্ট ডেরিক ডেং উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে কারখানাটিতে একটি প্রোডাকশন লাইন দিয়ে প্রতিদিন দেড় হাজার ফোন তৈরি করা হবে। এক বছরের মধ্যেই আরও চারটি লাইন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে, ফলে দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে। কারখানাটিতে তৈরি প্রতিটি ফোনেই ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা থাকবে। ফলে বাংলাদেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের প্রযুক্তি সক্ষমতা তুলে ধরা যাবে। কারখানায় যন্ত্রাংশ সংযোজনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলোতে এআই প্রযুক্তিচালিত অটোমেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, ফলে ফোনগুলোর মান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে ডিজিটাল রূপান্তর যাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। এখন আমাদের নিজেদের দক্ষতার যে ঘাটতি রয়েছে, তা কমাতে হবে। ডিভাইসের সহজলভ্যতা আরও বাড়াতে হবে, পাশাপাশি তরুণদের জন্য মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান তৈরির দিকেও নজর দিতে হবে। এই কারখানা চালুর মাধ্যমে দেশে দক্ষ জনবল তৈরি হবে, দক্ষতা-বিনিময়ের সুযোগ বাড়বে এবং নতুন উদ্যোক্তারা উৎসাহিত হবেন। সরকারের ডিজিটাল গভর্নেন্স কাঠামো বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে এবং স্মার্টফোন ব্যবহারের হার বৃদ্ধি করবে।’
অনারের স্মার্টফোন তৈরির কারখানা