2025-11-03@22:29:39 GMT
إجمالي نتائج البحث: 28
«আর ইসর য় ল র»:
ইসরায়েল দশকের পর দশক ধরে চরম অবিচার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে যুদ্ধ ও দখলদারি চালিয়ে আসছে, তা যুক্তরাষ্ট্র ও বাকি বিশ্বের বাসিন্দারা এই প্রথমবারের মতো সর্বাংশে উপলব্ধি করতে পারছেন।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন সাধারণ মিডিয়ার গৎবাঁধা দৃষ্টিভঙ্গি উড়িয়ে দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সেই সত্যগুলো প্রকাশ করেছে, যা আগে দীর্ঘদিন ধরে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। সাধারণ ‘মূলধারার’ সংবাদমাধ্যমে আগে ইসরায়েলকে আক্রমণের শিকার ও ফিলিস্তিনকে আক্রমণকারী হিসেবে দেখানো হতো।আমেরিকানদের এই জনমতের পরিবর্তনকে প্রথম দিকে অনলাইনে সক্রিয় অল্প কিছু কিশোরের ‘ক্ষণস্থায়ী রোগের’ ফল সাব্যস্ত করে উপেক্ষা করা হয়েছিল। কিছু জায়নবাদী নেতা এটিকে একেবারেই পাত্তা দেননি, কারণ তাঁরা পশ্চিমা মিডিয়ায় দীর্ঘদিনের প্রভাবের কারণে মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তাঁরা ভেবেছিলেন, প্রচলিত মিডিয়া ও নির্বাচিত কর্মকর্তাদের যেহেতু তাঁরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছেন, সেহেতু জনগণের মতামত কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। তাঁরা...
যুদ্ধবিরতির আওতায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস গতকাল মঙ্গলবার আরও দুজন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে। একই দিনে ইসরায়েল ১৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দীর মরদেহ ফেরত দিয়েছে। তবে হামাসের অভিযোগ, ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করছে। কারণ, তারা এখনো মিসরের সঙ্গে সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ রাফা সীমান্তটি নতুন করে খুলে দিচ্ছে না।গতকাল মঙ্গলবার রাতে দুই ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। আজ বুধবার ভোর নাগাদ তাঁদের পরিচয় শনাক্ত হয়। তাঁরা হলেন ৮৫ বছর বয়সী বেসামরিক নাগরিক আরিয়ে জালমানোভিচ ও ৩৮ বছর বয়সী সেনাসদস্য তামির আদার।আরও পড়ুনমধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশ গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে: ট্রাম্প৪ ঘণ্টা আগেআন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরসি) বলেছে, গাজায় হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহগুলো প্রথমে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তারা মরদেহগুলো ইসরায়েলের...
শেষ পর্যন্ত আমরা যদি গাজায় ফিলিস্তিনি বিজয়ের কথা বলি, তবে এটি ফিলিস্তিনি জনগণের, তাঁদের অবিনাশী মনোবল এবং দল, মতাদর্শ ও রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকা গভীর শিকড়যুক্ত প্রতিরোধের এক গৌরবোজ্জ্বল সাফল্য।দশকের পর দশক ধরে প্রচলিত ধারণা ছিল যে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি দখলদারির ‘সমাধান’ কেবল একটি সুশৃঙ্খল আলোচনানির্ভর প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সম্ভব। ‘শুধু সংলাপই শান্তি আনতে পারে’—এই বাক্য রাজনৈতিক অঙ্গন, একাডেমিক প্ল্যাটফর্ম, গণমাধ্যম এবং অনুরূপ সব জায়গায় অবিরাম প্রচারিত হয়েছে।এ ধারণাকে কেন্দ্র করে একটি বিশাল শিল্পগোষ্ঠীর জন্ম হয়, যা নাটকীয়ভাবে বিস্তৃত হয় ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বাধীন প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) এবং ইসরায়েল সরকারের মধ্যে অসলো চুক্তি স্বাক্ষরের সময় ও তার পরবর্তী বছরগুলোতে।‘শান্তি’র অবসানসমস্যা কখনোই ‘সংলাপ’, ‘শান্তি’ এমনকি ‘বেদনাদায়ক আপস’-এর মৌলিক ধারণার সঙ্গে ছিল না, যা ১৯৯৩ থেকে ২০০০-এর দশকের শুরুর দিক পর্যন্ত ‘শান্তিপ্রক্রিয়া’র সময়টিতে নিরন্তর...
দীর্ঘ দুই বছরের ধ্বংসযজ্ঞ ও বাস্তুচ্যুত জীবনের পর অবশেষে গাজাবাসীরা ফিরছেন নিজেদের বিধ্বস্ত ঘরে। ফেরার এই পথ সুখের নয়— চারপাশে ধ্বংসস্তূপ, প্রিয়জন হারানোর বেদনা আর অজানা ভবিষ্যতের আশঙ্কা নিয়েই তারা ফিরছেন বাড়িতে। শুক্রবার গাজায় যুদ্ধবিরতি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। আরো পড়ুন: গাজা শান্তি পরিকল্পনায় সম্মত হামাস-ইসরায়েল, আগামী কয়েকদিনে যা ঘটবে গাজা শান্তি চুক্তি নিয়ে যা বলছেন বিশ্বনেতারা গাজা উপত্যকায় নিজেদের বাড়িতে ফেরার পথে ফিলিস্তিনিরা মিশ্র অনুভূতির কথা জানিয়েছেন বার্তা সংস্থা এএফপিকে। ৩২ বছর বয়সী আমির আবু ইইয়াদে বলেন, “আমরা এই অবস্থার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। যদিও আমরা ফিরছি ক্ষত আর বেদনা নিয়ে।” ৩৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ মরতাজা জানান, তিনি প্রার্থনা করছেন যেন গাজা নগরীতে ফিরে গিয়ে দেখেন তার বাড়ি ধ্বংস হয়নি। তিনি বলেন,...
জাতিসংঘের পরমাণু কর্মসূচিবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা তাঁর দেশের জন্য আর ‘প্রাসঙ্গিক নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।গতকাল রোববার ইরানের পররাষ্টমন্ত্রী বলেন, ‘কায়রোতে আইএইএর সঙ্গে আমাদের সহযোগিতার যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে, তা আর প্রাসঙ্গিক নয়।’গত মাসে কায়রোতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ও ইরানের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। চুক্তিতে ইরানের পরমাণু প্রকল্পে আইএইএর পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ বিষয়ে একটি নতুন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছিল। জুনে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করেছিল তেহরান।আরও পড়ুনআইএইএ ইরানের পরমাণু স্থাপনা আর পরিদর্শন করতে পারবে না, যদি না...০২ জুলাই ২০২৫পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে ইরানের ওপর অস্ত্র ও অন্যান্য যেসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আছে, গত সপ্তাহে সেগুলো পুনর্বহালের ঘোষণা দেয় জাতিসংঘ। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের...
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে গতকাল সোমবার বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, নেতারা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনের ‘কাছাকাছি’ পৌঁছে গেছেন।হোয়াইট হাউসে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প এ সম্পর্কে বলেন, অন্ততপক্ষে, খুব, খুবই কাছাকাছি।ট্রাম্প গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং ফিলিস্তিনি অঞ্চলে এখনো জিম্মি থাকা ইসরায়েলি নাগরিকদদের মুক্তি নিশ্চিত করতে নতুন করে ‘২০ দফা গাজা পরিকল্পনা’ প্রকাশ করেছেন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো আল-জাজিরাকে বলেছে, হামাসের আলোচক দল ট্রাম্পের পরিকল্পনাটি নিয়ে পর্যালোচনা করছে।ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর গতকালের বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:নেতানিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ট্রাম্প।সংবাদ সম্মেলন শুরু হতেই ট্রাম্প বলেন, ‘সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। এটি একটি বড় দিন, খুবই সুন্দর দিন, সম্ভবত সভ্যতার ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর একটি এটি। আমি শুধু গাজার কথা বলছি না। গাজা একটি বিষয়, কিন্তু আমরা গাজাকে ছাপিয়ে আরও অনেক...
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি মনে করেন, এ শহরের পেনশন তহবিল ইসরায়েলি বন্ডে বিনিয়োগ করা উচিত নয়। কারণ, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন ভাঙছে।গত সপ্তাহে সিবিএস নিউইয়র্কের সঙ্গে ওই সাক্ষাৎকার দেন মামদানি। সেখানে সাংবাদিক মারসিয়া ক্রেমারের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।মারসিয়া ক্রেমার মামদানিকে জিজ্ঞাসা করেন, মেয়র হলে তিনি কি শহরের পেনশন তহবিলের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষকে বলবেন, ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসা করা প্রতিষ্ঠান বা ইসরায়েলি বন্ড থেকে বিনিয়োগ সরাতে? নিউইয়র্ক সিটি ঐতিহাসিকভাবে এ দুই ক্ষেত্রেই বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে আসছে।মামদানি জবাবে বলেন, ‘আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক আইনভঙ্গের কাজে আমাদের কোনো তহবিলের জড়িত থাকা উচিত নয়।’মামদানি আরও বলেন, বর্তমান সিটি কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডার ইসরায়েলি বন্ড নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। ‘আমি মনে করি, ইসরায়েলি বন্ড নিয়ে...
গাজায় জাতিগত নিধন অভিযান চালানোর ইসরায়েলি পরিকল্পনা দ্রুতগতিতেই এগোচ্ছে, হয়তো প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দ্রুত। পদ্ধতিগতভাবে পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি চলছে গাজার মানুষকে সুচিন্তিতভাবে অনাহারে রাখা। এই অনাহারে রাখার নীতির ফল দ্রুতই কার্যকর, কারণ ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে মৃত্যুর সংখ্যাটা বোমাবর্ষণে নিহত মানুষের সংখ্যার চেয়ে তেমন পিছিয়ে পড়ছে না। খাবারের অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় যেসব মানুষ মারা পড়েননি, তাঁদের তো অনাহারে প্রাণ ত্যাগ করার আশঙ্কা অনেক বেশি।বলতেই হয় যে ইচ্ছা করে অনাহারে রাখার হাতিয়ারটা বেশ কাজ করছে। গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) তো একটা ট্র্যাজিক বা বিয়োগান্ত সাফল্যে রূপ নিয়েছে। শুধু জিএইচএফ বিতরণকৃত খাবারের থলে সংগ্রহের জন্য অপেক্ষারত শত শত গাজাবাসীই গুলিতে নিহত হননি, বরং যাঁরা খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে যেতে পারেননি, তাঁরাও অনাহারে মারা যাচ্ছেন। আর তাঁদের বেশির ভাগেই নবজাতক ও শিশু।আরও...
এটা কোনো সতর্কবার্তা নয়। গাজায় দুর্ভিক্ষ ইতিমধ্যে এসে গেছে। এটা কোনো রূপক অর্থ নয়, কোনো ভবিষ্যদ্বাণীও নয়। এটা প্রতিদিনের বাস্তবতা। এটা সেই শিশু, যে ঘুম থেকে উঠে বিস্কুট চায় কিন্তু বিস্কুট আর নেই। এটা সেই ছাত্র, যে ক্ষুধায় অজ্ঞান হওয়ার উপক্রম হলেও পরীক্ষার জন্য পড়ে। আরো পড়ুন: গাজা যুদ্ধে প্রশ্নের মুখে বিবিসির সম্পাদকীয় নীতি হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতির জন্য মার্কিন প্রস্তাবে রাজি ইসরায়েল এটা সেই মা, যে তার ছেলেকে বোঝাতে পারে না কেন ঘরে রুটি নেই। আর এটা সেই নীরবতা, যে নীরবতা এই ভয়াবহতা সম্ভব করে তুলেছে। দুর্ভিক্ষের সন্তানরা নূর, আমার বড় বোন তাসনিমের মেয়ে, তিন বছর বয়স; সে জন্মেছিল ২০২১ সালের ১১ মে। আমার বোনের ছেলে, ইয্য আলদিন, জন্মেছিল ২০২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর;...
আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কূটনীতির আজব ঘটনাপ্রবাহে যেন আর বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, একের পর এক উদ্ভট ঘটনা ঘটেই চলেছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন। গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান গণহত্যায় যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেই লোক এখন এমন এক ব্যক্তিকে শান্তির জন্য বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারের প্রার্থী করছেন, যিনি কিনা এই গণহত্যার প্রধান পৃষ্ঠপোষক।গত মার্চে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি ইসরায়েলকে ‘গাজায় কাজ শেষ করতে যা কিছু দরকার’ তার জন্য সবকিছু পাঠাবেন। সেই ‘সবকিছুর’ মধ্যে রয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের মারাত্মক অস্ত্র ও অন্যান্য সহায়তা। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজার এই ছোট্ট ভূখণ্ডে শুধু আনুষ্ঠানিক নথিপত্রের হিসাবমতে, প্রায় ৬০ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে কত...
২০২৩ সালের ৬ অক্টোবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় আমার ফুফু দোয়া, যিনি গাজার একজন কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীদের জন্য নতুন কিছু পাঠ্য কার্যক্রম প্রস্তুতির কাজ শেষ করেছিলেন। পরদিন সকালে শিশুদের কাছ থেকে সেই কাজগুলোর প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য তিনি ছিলেন ভীষণ উচ্ছ্বসিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, পরদিন ৭ অক্টোবর যেন সব স্বাভাবিক জীবনের সমাপ্তি টেনে নিল। শুরু হলো এমন এক যুদ্ধ, যা সবকিছু চূর্ণবিচূর্ণ করে দিল।সেই দিন থেকে, ইসরায়েলি বিমান হামলা গাজার প্রতিটি কোনায় আঘাত হানতে শুরু করে—বাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল, এমনকি কিন্ডারগার্টেনের শ্রেণিকক্ষও রেহাই পায়নি। আমার ফুফুর বাড়িটিও মাটির সঙ্গে মিশে যায়, যেখানে চাপা পড়ে যায় তাঁর পাঠদানের উপকরণ আর সেই খেলনাগুলো—যেগুলো তিনি তাঁর প্রিয় ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিনেছিলেন, যেসব শিশুর বেঁচে থাকার পূর্ণ অধিকার ছিল।গত শীতে, যখন ইসরায়েলি বাহিনী তাঁদের পাড়া ছেড়ে সরে যায়, তখন দোয়া স্মৃতির...
গাজার চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, শিশু দুধের তীব্র ঘাটতির মধ্যে শত শত শিশু মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ ইসরায়েল মানবিক সাহায্যের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে। খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আহমেদ আল-ফাররা জানিয়েছেন, তার ওয়ার্ডে মাত্র এক সপ্তাহের জন্য শিশু ফর্মুলা অবশিষ্ট রয়েছে। ডাক্তার ইতিমধ্যেই অকাল জন্মগ্রহণকারী শিশুদের জন্য বিশেষায়িত ফর্মুলা শেষ করে দিয়েছেন এবং নিয়মিত ফর্মুলা ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। আল-ফাররা ফোনে গার্ডিয়ানকে বলেন, “আমি বর্ণনা করতে পারছি না যে পরিস্থিতি কতটা খারাপ। এই মুহূর্তে, আমাদের কাছে প্রায় এক সপ্তাহের জন্য পর্যাপ্ত ফর্মুলা আছে। তবে হাসপাতালের বাইরেও শিশুরা দুধ পাচ্ছে না। এটি বিপর্যয়কর।” গাজায় শিশু খাদ্যের মজুদ কমে গেছে কারণ ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সামান্য সাহায্য ছাড়া বাকি সবই বন্ধ করে দিয়েছে। বিতর্কিত মার্কিন-ইসরায়েল-সমর্থিত...
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করতে গত সপ্তাহে ইরানের পার্লামেন্টে পাস হওয়া একটি বিলে আজ বুধবার অনুমোদন দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আইএইএর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সহযোগিতার সম্পর্ক স্থগিত করল ইরান।গত মাসে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর তেহরান আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধের হুমকি দেয়। তাদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক সংস্থাটি পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ নিয়েছে এবং ইসরায়েলের বিমান হামলার পক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরছে।এর এক দিন আগে আইএইএর পরিচালনা পর্ষদ ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) অধীনে নিজেদের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনার পক্ষে ভোট দেয়।আরও পড়ুনইরানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংস নিয়ে ট্রাম্প কি তাহলে মিথ্যা বলেছেন৩০ জুন ২০২৫নতুন আইনে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আইএইএর যেকোনো পরিদর্শনের...
ইরানের ইসলামি প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ নেতা, ৮৬ বছর বয়সী আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি, ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর থেকে কোনো এক অজ্ঞাত বাংকারে আত্মগোপনে আছেন। তবে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি ১২ দিনের এই সংঘাতে ইরান ‘বিজয়ী’ হয়েছে দাবি করে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং ইসরায়েলকে ‘প্রায় চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেওয়া গেছে’ বলেও উল্লেখ করেছেন। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার তার এই ভিডিও বার্তা প্রকাশ পায়। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ইসরায়েলের হামলা থেকে বাঁচতে সম্পূর্ণ একাকী অবস্থায় কোথাও লুকিয়ে আছেন এবং বাইরের জগতের সঙ্গে খুব কম যোগাযোগ রাখছেন। এমনকি অনেক উঁচু পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারাও তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারছেন না বলে মনে হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কাতারের আমিরের মধ্যস্থতায় একটি দুর্বল যুদ্ধবিরতি হলেও নিশ্চিতভাবে তাকে এখনও সাবধানতা বজায়...
১৯৪০ সালের ১৪ নভেম্বর ব্রিটেনের কভেন্ট্রি শহরে লুফটওয়াফে (জার্মান বিমানবাহিনী) যে বিমান হামলা চালায়, সেটিকে তারা এক চমকপ্রদ প্রযুক্তিগত সাফল্য হিসেবে নিয়েছিল। জার্মান প্রচারমাধ্যম দাবি করেছিল, এটি ছিল ‘পুরো যুদ্ধে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা’।নাৎসি জার্মানির প্রধান প্রচারমন্ত্রী জোসেফ গোয়েবলস এ হামলায় এতটাই আনন্দিত হয়েছিলেন যে তিনি ওই হামলার নামে ‘টু কভেনট্রেট’ নামে একটি নতুন শব্দ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তারপর খুব বেশি দিন না গড়াতেই জার্মানির সেই বিজয়ের আনন্দ ফিকে হয়ে যায়। কারণ, ব্রিটিশরা খুব দ্রুত অ্যারো ইঞ্জিন ও বিমান যন্ত্রাংশ উৎপাদনের কারখানাগুলো তাদের গোপন কারখানায় সরিয়ে ফেলে। ব্রিটিশদের উৎপাদনক্ষমতা কিছুটা ব্যাহত হলেও ধ্বংস হয়নি। কয়েক মাসের মধ্যেই এসব কারখানা আবার সম্পূর্ণ উৎপাদনে ফিরে যায়।আজ আমরা জানি, জার্মানদের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল ব্রিটিশদের মনোবলকে খাটো করে দেখা। ব্রিটিশরা দ্রুতই পাল্টা আঘাত হানার...
ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনাকে সংবিধানের চরম লঙ্ঘন বলেছেন মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স।বার্নি স্যান্ডার্স বলেন, ‘আমি একমত। আমি আপনাদের একটা কথা বলতে চাই, এই মাত্র যে খবরটা শুনলাম, যেটা আপনারাও শুনলেন, সেটা শুধু উদ্বেগজনকই নয়; বরং চরমভাবে সংবিধানবিরোধী।’স্যান্ডার্স আরও বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন, এ দেশকে যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা কেবল মার্কিন কংগ্রেসের আছে। প্রেসিডেন্টের সেই অধিকার নেই।’গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় মার্কিন বোমারু বিমান।বার্নি স্যান্ডার্সসহ কয়েক নেতা ট্রাম্পের ইরানে হামলার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানালেও এখন পর্যন্ত ডেমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেননি।যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্রেটিক ককাসের নেতা হাকিম জেফরিজ এবং সিনেটের নেতা সিনেটর চাক শুমার—দুজনই এখনো কোনো বিবৃতি দেননি।দুজনই ইসরায়েলের সরব সমর্থক এবং ইরানের বিষয়ে কঠোর ও আগ্রাসী...
সব দিক থেকেই মনে হচ্ছে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো এক সন্ধিক্ষণে আছে। এই মুহূর্তে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোকে কৌশলগত প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নিতে হবে। তা না হলে কেবল ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজই বাকি থাকবে। এক দশকের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করছে এই অঞ্চলে তাদের বেশি শক্তি খরচের জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে মোড় ঘোরানো (পিভট টু এশিয়া) নীতির প্রবক্তা। এর পর থেকে প্রতিটি মার্কিন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরে আসার চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রতিবারই এই অঞ্চলে কোনো না কোনো সংকটে তারা আবার জড়িয়ে পড়েছে। অনেক সময় সেই সংকট তাদের তৈরি করা নয়। তা পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণেও ছিল না।ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুতে কৌশলগতভাবে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরে আসার একটা বাস্তব সুযোগ তৈরি হয়েছিল। তাঁর প্রশাসন নব্য-রক্ষণশীল প্রভাব কমিয়ে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’...
‘আমার প্রচণ্ড রাগ হচ্ছিল’—বলছিলেন ৬৭ বছর বয়সী আরব ইসরায়েল কাসেম আবু আল-হিজা। ইরানের ছোড়া একটা ক্ষেপণাস্ত্র গত শনিবার উত্তর ইসরায়েলের তামরা শহরে কাসেমের বাড়িতে আঘাত হেনেছিল। সিমেন্টের ছাদটা ভেঙে পড়েছিল ঘরের ভেতরেই। ওই এক হামলাতেই কাসেমের পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বাড়ির ভেতর থেকে বই, জামাকাপড়, বাচ্চাদের খেলনা, আর দেহের টুকরা অংশগুলো উড়ে এসে রাস্তায় পড়েছিল। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন কাসেমের মেয়ে ৪৫ বছর বয়সী মানার খাতিব, দুই নাতনি ২০ বছরের শাদা আর ১৩ বছরের হালা আর তাদের ৪১ বছর বয়সী খালা মানাল খাতিব।তাঁরা সবাই একই সঙ্গে বাড়ির ভেতরেই কংক্রিটের ঢালাই করা একটা ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটা সরাসরি এসে পড়েছিল ওই ঘরেই।উত্তর ইসরায়েলের যে তামরা শহরে কাসেম ও তাঁর পরিবার থাকতেন, সেখানকার বেশির ভাগ বাসিন্দাই আরব।ওই চারজনের...
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ‘অস্তিত্ব আর থাকা উচিত নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের সোরোকা হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, “আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ‘আর থাকতে (বেঁচে) দেওয়া যাবে না’।” তেল আবিবের কাছে হলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কথা বলন। স্থানীয় গণমাধ্যম ও এএফপির বরাতে এ সংবাদ প্রকাশ করেছে বিবিসি। ইসরায়েল কাৎজ বলেন, তিনি (আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি) ইসরায়েল রাষ্ট্রের ধ্বংসকে লক্ষ্য বলে মনে করেন। এই ধরনের ব্যক্তির অস্তিত্ব আর থাকতে দেওয়া যাবে না। ইসরায়েল কাটজ বলেন, ‘খামেনি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন তিনি ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে চান। তিনি ব্যক্তিগতভাবে ইসরায়েলের হাসপাতালগুলোতে গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তিনি ইসরায়েল রাষ্ট্রের ধ্বংসকে একটি লক্ষ্য বলে মনে করেন। এই ধরনের ব্যক্তিকে আর...
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। সশস্ত্র সংঘাতের কারণে অশান্ত দিন কাটাচ্ছেন সেখানকার মানুষ। কিন্তু এবার ঝুঁকি আরও বেশি। ইসরায়েল নিজেকে সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে ফেলেছে। কোনো প্রক্সি বা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে নয়, এবারের সংঘাত পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ইরানের সঙ্গে। স্পষ্ট করে বলতে গেলে, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত ১৩ জুন শুরু হয়নি। ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত দুই দেশ সরাসরি হামলা চালায়। তার আগে কয়েক দশক ধরে তারা মূলত গোয়েন্দা অভিযান, সাইবার আক্রমণ ও আঞ্চলিক প্রক্সিদের সমর্থনের মাধ্যমে ‘ছায়া যুদ্ধ’ পরিচালনা করেছিল। কিন্তু এখন ইসরায়েলের হামলায় সংঘাতটি প্রকাশ্য যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। প্রতি মুহূর্তে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি পরিবর্তিত হচ্ছে। এটি ইউক্রেনীয় সংঘাতের মতো হবে না। কারণ, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে দ্বন্দ্ব নেই। তাই স্থল অভিযানের সম্ভাবনা কম। তবে মধ্যপ্রাচ্যে একমাত্র মিত্র হিসেবে পরিচিত ইরানের এ দুঃসময়ে...
টানা তিন দিন ধরে ইসরায়েলের হামলা মোকাবিলা করে যাচ্ছে ইরান। ইতিমধ্যে সামরিক নেতৃত্বের বেশ কয়েকজন সদস্যসহ ২৪০ জনের বেশি ইরানি নিহত হয়েছেন। তবে ইরান একক প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে যেভাবে পাল্টা আঘাত হেনেছে, তা ইসরায়েল আগে কখনো অনুভব করেনি। ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বৃহত্তম শহরগুলো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করতে সক্ষম হয়েছে, যার মধ্যে আছে তেল আবিব ও হাইফার মতো শহরও। ইসরায়েল-ইরান উভয় পক্ষ কে কার কতটা ক্ষতি করেছে এবং ঠিক কোন স্থানগুলোয় আঘাত হেনেছে, অনেক ক্ষেত্রে তা স্পষ্ট নয়। কারণ, সামরিক হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সঠিকভাবে পাওয়া কঠিন। উভয় পক্ষের কাছে কত ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুত আছে এবং ইসরায়েল ও ইরান কত দিন এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে, তা–ও জানা কঠিন।আমরা যা জানি, তা হলো ইরানের কাছে আছে মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি।...
মাত্র ১০ দিন পরে ছিল পারনিয়া আব্বাসির ২৪তম জন্মদিন। নিজের জন্মদিন উদ্যাপন পরিকল্পনা কি করে ফেলছিলেন এই তরুণী, হয়তো আরও একটি চমৎকার কবিতা তাঁর কলম থেকে বেরিয়ে আসত। কিন্তু এসব কিছু আর হলো না; বরং রক্তে ভেসে যাওয়া গোলাপি রঙের ম্যাট্রেসের ওপর বিশাল বিশাল কংক্রিট খণ্ডের স্তূপের নিচ থেকে বেরিয়ে আসা কয়েক গোছা চুলে পরিণত হয়েছেন পারনিয়া। নিজের নোট বইয়ে পারনিয়ার লেখা শেষ কবিতা ছিল— ‘আমি পুড়ে যাই, আমি বিবর্ণ হয়ে যাই, আমি এক নীরব তারা হয়ে উঠি, যে তোমার আকাশে ধোঁয়া হয়ে যায়...’মাত্র ২৩ বছর বয়সে সত্যি সত্যি নীরব তারা হয়ে গেছেন ইরানের উদীয়মান এই কবি। গত শুক্রবার ভোররাতে তেহরানে ইসরায়েলের হামলায় পারনিয়ার পরিবারের সব সদস্য নিহত হন।সেদিন সকালেই হয়তো পারনিয়ার সঙ্গে দেখা হতো তাঁর প্রিয় বান্ধবী মরিয়মের। কান্নাজড়ানো...
গাজা ভূখণ্ডে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির আলোচনায় আর কোনো আগ্রহ নেই বলে জানিয়েছে হামাস। গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান বাড়ানো এবং এলাকাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য দখলে রাখার ঘোষণার পর এই মন্তব্য করেন হামাসের শীর্ষ নেতা বাসেম নাইম। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাইম বলেন, “ইসরায়েল যখন ‘অনাহার যুদ্ধ’ চালিয়ে যাচ্ছে, তখন নতুন কোনো প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা অর্থহীন।” ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের মূল লক্ষ্য হলো হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং সংগঠনটিকে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত ও বিলুপ্ত করা। সোমবার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা গাজার ২১ লাখের বেশি মানুষকে স্থানচ্যুত করে পুরো ভূখণ্ড দখল করে নিতে চায় এবং মানবিক সহায়তা কেবলমাত্র সামরিক ঘাঁটি থেকে বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে বিতরণের পরিকল্পনা করেছে। তারা আরও জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান...
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও সিভিল ডিফেন্সের ১৫ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁরা যোদ্ধা ছিলেন না। সন্ত্রাসীও ছিলেন না। তাঁদের কাছে কোনো রকেট বা অস্ত্র ছিল না। তাঁরা ছিলেন ত্রাণকর্মী, মানবতার সেবক। যখন যেখানে বোমা ফেলা হচ্ছিল, সেখানেই তাঁরা আহতদের সাহায্য করতে ছুটে গিয়েছিলেন। তাঁরা নিজের জীবন বাজি রেখে অন্যদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন।এর আগে গত ২৩ মার্চ গাজার দক্ষিণে রাফা এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী একটি অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবার গাড়ির বহরকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে আটজন রেড ক্রিসেন্টের কর্মী, ছয়জন ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের কর্মী এবং একজন জাতিসংঘের কর্মী নিহত হন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছিল, এই গাড়িগুলো ছিল অপরিচিত। সন্দেহ করা হয়েছিল, গাড়ির মধ্যে যোদ্ধারা ছিলেন, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ছিল।রিফাত রাদওয়ান নামে নিহত চিকিৎসাকর্মীদের একজনের মোবাইল ফোন থেকে...
আমরা গাজার মানুষ বারবার হুমকির মুখে পড়েছি। আমরা আমাদের ‘সাফ’ করে দেওয়ার হুমকি শুনেছি; গণহত্যার হুমকি শুনেছি। আমাদের ওপর ‘জাহান্নাম’ নামিয়ে আনার হুমকি শুনেছি। আসলে আমরা তো ইতিমধ্যেই জাহান্নাম পার করেছি। ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে ১৯ মার্চ ২০২৫—গণহত্যার এই দহনকালে গাজার ২০ লাখ ফিলিস্তিনির মতো আমিও বেঁচে আছি।সত্যি বলতে, আমি বেঁচে আছি জীবনকে আঁকড়ে ধরে নয়, বরং ‘লাইফ’ (জীবন) শব্দ থেকে ‘এফ’ ফেলে দিয়ে ‘লাই’ (মিথ্যা) ধরে রেখে বেঁচে আছি। যত বেশি নিজেকে মিথ্যা বলেছি, ততই আমার নাজুক অস্তিত্ব টিকেছে। প্রথম মিথ্যাটার কথা এখনো মনে পড়ে। সেটা গণহত্যারও অনেক আগের কথা।২০০৮-০৯ সালে ইসরায়েলের গাজা আক্রমণের পর নিজেকে বলেছিলাম, ‘আর কখনো এমন যুদ্ধ দেখব না।’ সেটি একেবারেই শিশুসুলভ মিথ্যা ছিল। এরপর ২০১২ সালেও যুদ্ধ দেখলাম। ২০১৪ সালে দেখলাম। ২০২১ সালে দেখলাম।...
কয়েক দিন পরেই প্রথম জন্মদিন ছিল ফুটফুটে শিশু বানান আল–সালোউতের। আরেক শিশু হুর আল–সালোউতের বয়স এক বছর হয়েছে। কবে সে গুটি গুটি পায়ে হাঁটা শুরু করবে, সে অপেক্ষায় ছিলেন মা-বাবা। আর ঈদ কবে আসবে, কী কেনাকাটা করবে—তা নিয়ে ছোট্ট সালমাহ এসলিয়েহ যেন আরও চঞ্চল হয়ে উঠেছিল। সালমাহের ঈদ আর আসবে না। হুর আল–সালোউতের প্রথম হাঁটা, আধো আধো বুলিতে কথা শোনার অপেক্ষা শেষ হবে না কোনো দিন। ইসরায়েলের নির্মম হামলা মা-বাবার কোল থেকে কেড়ে নিয়েছে ফিলিস্তিনের গাজার এই শিশুদের। শুধু এই তিনজন নয়, ১৭ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ফিলিস্তিনের উপত্যকাটিতে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ১৮ হাজার শিশু। গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি শুরু হয়েছিল যুদ্ধবিরতি। এরপর সেখানকার শিশুদের দুর্দশা কিছুটা কমেছিল। তবে গত মঙ্গলবার ভোররাতে (সাহ্রির আগে) গাজায় আবার নৃশংস...
যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় গত শনিবার গাজা থেকে আরও ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণ অঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে আড়াই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল।ওই জিম্মিদের অনেকেই যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় মুক্তি পেয়েছেন। কেউ কেউ গাজায় মারা গেছেন। কয়েকটি মৃতদেহ ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া জিম্মিদের কতজন মুক্তি পেয়েছেন, কতজন মারা গেছেন এবং আর কত জিম্মি এখনো জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে তার একটি হিসাব দিয়েছে আল-জাজিরা।আল-জাজিরার হিসাব অনুযায়ী সেদিন ইসরায়েল থেকে ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, নেপালসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকেরা ছিলেন।আল-জাজিরা বলেছে, যুদ্ধবিরতির মধ্যে বন্দিবিনিময় এবং অন্যান্য চুক্তির মাধ্যমে...
