আইএইএ ইরানের পরমাণু স্থাপনা আর পরিদর্শন করতে পারবে না, যদি না...
Published: 2nd, July 2025 GMT
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করতে গত সপ্তাহে ইরানের পার্লামেন্টে পাস হওয়া একটি বিলে আজ বুধবার অনুমোদন দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে আইএইএর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সহযোগিতার সম্পর্ক স্থগিত করল ইরান।
গত মাসে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর তেহরান আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধের হুমকি দেয়। তাদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক সংস্থাটি পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ নিয়েছে এবং ইসরায়েলের বিমান হামলার পক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরছে।
এর এক দিন আগে আইএইএর পরিচালনা পর্ষদ ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) অধীনে নিজেদের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনার পক্ষে ভোট দেয়।
আরও পড়ুনইরানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংস নিয়ে ট্রাম্প কি তাহলে মিথ্যা বলেছেন৩০ জুন ২০২৫নতুন আইনে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আইএইএর যেকোনো পরিদর্শনের জন্য তেহরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন লাগবে।
আরও পড়ুনইরানের ‘সরিয়ে ফেলা’ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কি আর খুঁজে পাওয়া যাবে০১ জুলাই ২০২৫এদিকে সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বোমা বর্ষণে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ফর্দো গুরুতর ও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুননতুন আলোচনায় বসতে যুক্তরাষ্ট্রকে আগেই হামলার হুমকি থেকে সরে আসতে হবে: ইরান৩০ জুন ২০২৫আরও পড়ুনইরান কয়েক মাসের মধ্যেই সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করতে পারে: আইএইএ২৯ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় কৃষি ব্যাংক লুটের ঘটনায় মামলা, নেই গ্রেপ্তার
কৃষি ব্যাংক খুলনার রূপসা ঘাট শাখার ভল্ট ভেঙে ১৬ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ব্যাংকটির ওই শাখার ব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে শনিবার (১৬ আগস্ট) রাতে রূপসা থানায় মামলাটি করেন।
এদিকে, ঘটনার দুইদিন অতিবাহিত হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক তিন নিরাপত্তা প্রহরীকে থানায় রাখা হয়েছে।
গত শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে ব্যাংকের টাকা লুট করে সন্ত্রাসীরা। ওইদিন রাতে ব্যাংকের তিনজন নিরাপত্তা প্রহরীকে আটক করে সংশ্লিষ্ট থানায় নেওয়া হয়। ব্যাংকের এই শাখা কার্যালয়টি পূর্ব রূপসা পেট্রোল পাম্প ও পূর্ব রূপসা বাসস্ট্যান্ড পুলিশ ফাঁড়ির কাছে খুলনা-মোংলা মহাড়কের পাশে অবস্থিত। ব্যাংকে চুরির খবরে এলাকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
আরো পড়ুন:
পঞ্চগড়ে ছাত্রদল কর্মী হত্যা, গ্রেপ্তার ২ আসামি কারাগারে
সরকার উৎখাতের যড়যন্ত্রের মামলায় আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
সিসিটিভির ফুটেজ থেকে জানা গেছে, গত শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এই দুই ঘণ্টার মধ্যে ব্যাংকের বিভিন্ন গেটের ছয়টি তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে সন্ত্রাসীরা। তারা ব্যাংকের ভেতরের চারটি সিসিটিভি ক্যামেরা কাপড় দিয়ে ঢেকে ক্যাশ কাউন্টারে প্রবেশ করে। ভল্টের তালা ভেঙে সেখানে রক্ষিত ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকার মধ্যে ১ হাজার ৪২০ টাকা রেখে বাকি টাকা নিয়ে যায় তারা। সিসিটিভি ফুটেজে একজন সন্ত্রাসীকে দেখা গেলেও মুখে কাপড় দিয়ে বাঁধা থাকায় তাকে চিহ্নিত করা যায়নি।
সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করতে ব্যাংকের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ব্যাংকের তিন নিরাপত্তা প্রহরী আফজাল হোসেন, আবুল কাশেম ও তরিকুল ইসলাম এখনো পুলিশ হেফাজতে আছেন।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরী আবুল কাশেম শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ব্যাংকের প্রধান গেট খোলা দেখতে পেয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানালে রূপসা থানার ওমি মো. মাহফুজুর রহমান ও স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। রাতেই ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, খুলনা জেলা ডিবি পুলিশের টিম, ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাতে ব্যাংকের তিনজন নিরাপত্তা প্রহরীকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে রুবেল নামে এক ওয়ার্কশপ কর্মচারীকে আটক করে থানায় রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে কৃষি ব্যাংকের খুলনা বিভাগীয় অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “ব্যাংকের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করার নিয়ম থাকলেও এখনো করা হয়নি। আজ রবিবার (১৭ আগস্ট) করা হতে পারে।”
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক তিন নিরাপত্তা প্রহরীকে মামলায় আসামি করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা কারো নামে মামলা দেইনি। পুলিশ তাদের তিনজনসহ আরো একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ ব্যাপারে পুলিশ ভালো বলতে পারবে।”
কৃষি ব্যাংকের রূপসা ঘাট শাখার ম্যানেজার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “গত বৃহস্পতিবার অফিস শেষে আমরা সবাই বাড়ি চলে যাই। শুক্রবার রাত ১০টায় নিরাপত্তা প্রহরীর মাধ্যমে জানতে পারি, ব্যাংকে চুরি হয়েছে। সন্ত্রাসীরা গেটের তালা ও ভেতরের ভল্ট ভেঙে ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকার মধ্যে ১ হাজার ৪২০ টাকা রেখে বাকি টাকা নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছি।”
খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আল-বেরুনী বলেন, “প্রকৃত তথ্য উদঘাটনে জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে।”
খুলনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মুক্ত রায় চৌধুরী বলেন, “মূল ঘটনা উদঘাটনে কাজ চলছে। দ্রুত এ ঘটনার রহস্য যাতে বের করা যায় এজন্য আমাদের টিম কাজ করছে।”
রূপসা থানার ওসি মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ব্যাংকের তিন নিরাপত্তা প্রহরীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যাংকের ম্যানেজার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ