জাতিসংঘের পরমাণু কর্মসূচিবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা তাঁর দেশের জন্য আর ‘প্রাসঙ্গিক নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।

গতকাল রোববার ইরানের পররাষ্টমন্ত্রী বলেন, ‘কায়রোতে আইএইএর সঙ্গে আমাদের সহযোগিতার যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে, তা আর প্রাসঙ্গিক নয়।’

গত মাসে কায়রোতে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ও ইরানের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। চুক্তিতে ইরানের পরমাণু প্রকল্পে আইএইএর  পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ বিষয়ে একটি নতুন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছিল। জুনে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করেছিল তেহরান।

আরও পড়ুনআইএইএ ইরানের পরমাণু স্থাপনা আর পরিদর্শন করতে পারবে না, যদি না.

..০২ জুলাই ২০২৫

পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে ইরানের ওপর অস্ত্র ও অন্যান্য যেসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আছে, গত সপ্তাহে সেগুলো পুনর্বহালের ঘোষণা দেয় জাতিসংঘ। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশ ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের এ উদ্যোগ নেয়। ২০১৫ সালে যেসব দেশ ইরানের সঙ্গে ‘ইরান পারমাণবিক চুক্তিতে’ স্বাক্ষর করে তাদের মধ্যে এই তিন দেশও রয়েছে।

এসব দেশ এখন তেহরানের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ এনে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ তেহরান প্রত্যাখ্যান করেছে।

আরও পড়ুনইরানে আবারও জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫এই তিন ইউরোপীয় দেশ মনে করেছিল, তাদের হাতে ক্ষমতা রয়েছে, তাই তারা (নিষেধাজ্ঞা) পুনর্বহালের হুমকি দিচ্ছিল। এখন তারা ওই ক্ষমতা ব্যবহার করে ফেলেছে এবং ফলাফল দেখেছেআব্বাস আরাগচি, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

গতকাল রোববার তেহরানে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে আরাগচি আরও বলেন, এই তিন ইউরোপীয় দেশ মনে করেছিল, তাদের হাতে ক্ষমতা রয়েছে। তাই তারা (নিষেধাজ্ঞা) পুনর্বহালের হুমকি দিচ্ছিল। এখন তারা ওই ক্ষমতা ব্যবহার করে ফেলেছে এবং ফলাফল দেখেছে। এই তিন ইউরোপীয় দেশ স্পষ্টভাবে তাদের গুরুত্ব কমিয়ে এনেছে এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা করার যুক্তি প্রায় শূন্যে নামিয়ে দিয়েছে।

আরাগচি আরও বলেন,  ভবিষ্যতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো আলোচনায় ইউরোপীয় এই তিন দেশের ভূমিকা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ হবে।

আরও পড়ুনইরানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংস নিয়ে ট্রাম্প কি তাহলে মিথ্যা বলেছেন৩০ জুন ২০২৫

দ্বিচারিতা

তেহরান আইএইএর বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ করেছে। তারা বলেছে, সংস্থাটি পরমাণু অস্ত্র বিস্তাররোধ চুক্তির (এনপিটি) আওতায় দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশগুলো বহুদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টার অভিযোগ করে আসছে। তাদের এই দাবির ইন্ধনদাতা ইসরায়েল। তেহরান সব সময় তাদের ওই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। বরং দেশটি জোর দিয়ে বলেছে, তাদের পারমাণবিক প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পূর্ণরূপে বেসামরিক। এনপিটির অধীনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার তাদের রয়েছে।

ইরানের পার্লামেন্টের কয়েকজন সদস্য এনপিটি চুক্তি থেকে সম্পূর্ণ সরে আসার প্রস্তাব তুলেছিলেন। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তাঁর দেশ চুক্তির শর্ত অনুসরণ করে যাবে।

আরও পড়ুনপারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার কথা নাকচ করে দিলেন খামেনি২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সহয গ ত র পরম ণ এই ত ন য ক তর ইউর প ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান নাম নিয়ে যারা ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বদদ্বীনি, কুফরি ও ভ্রান্ততার বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরামকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে যারা মুসলমান নাম নিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে হেফাজত আমির এ কথা বলেন। জাতীয় উলামা কাউন্সিল বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ‘জাতীয় উলামা সম্মেলন-২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।

জাতীয় উলামা কাউন্সিলের সভাপতি ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনেক আলেম-উলামা অংশ নেবেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উলামায়ে কেরামের পরস্পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কাম্য নয়।’

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘ইসলামি রাজনীতিতে সব সময় প্রতিপক্ষের মুখোমুখি দাঁড়ানো যায় না। সঠিক সময়ের অপেক্ষা করে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভূমিকা রাখতে হয়। আজ ইসলামি রাজনীতির সোনালি সময় চলছে। আমরা যদি সুযোগ কাজে না লাগাই, তাহলে সামনে বড় ধরনের ভোগান্তি তৈরি হবে।’

মুন্সিগঞ্জের জামি’আ ইসলামিয়া হালীমিয়া মাদ্রাসার প্রধান ও মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনে বাতিলের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়তে লড়তে মরব, কিন্তু বিভক্ত হব না ইনশা আল্লাহ।’ তিনি বলেন, ১৬ নভেম্বরের কাদিয়ানিবিরোধী আন্দোলন শেষ হয়নি, শুরু হয়েছে মাত্র। সরকারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, পরেরবার আর সুযোগ দেওয়া হবে না।

হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। যারা কাজ করতে চায়, তাদের বাধা দেব না। আমরা নিজেরা নিজেদের শত্রু হব না, ইনশা আল্লাহ।’

সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, জাতীয় উলামা কাউন্সিলের মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা সালাহুদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুশতাক আহমদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ