Risingbd:
2025-07-05@23:53:08 GMT

তাদের আছে শুধু হাড় আর চামড়া

Published: 5th, July 2025 GMT

তাদের আছে শুধু হাড় আর চামড়া

গাজার চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, শিশু দুধের তীব্র ঘাটতির মধ্যে শত শত শিশু মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ ইসরায়েল মানবিক সাহায্যের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে।

খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আহমেদ আল-ফাররা জানিয়েছেন, তার ওয়ার্ডে মাত্র এক সপ্তাহের জন্য শিশু ফর্মুলা অবশিষ্ট রয়েছে। ডাক্তার ইতিমধ্যেই অকাল জন্মগ্রহণকারী শিশুদের জন্য বিশেষায়িত ফর্মুলা শেষ করে দিয়েছেন এবং নিয়মিত ফর্মুলা ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। 

আল-ফাররা ফোনে গার্ডিয়ানকে বলেন, “আমি বর্ণনা করতে পারছি না যে পরিস্থিতি কতটা খারাপ। এই মুহূর্তে, আমাদের কাছে প্রায় এক সপ্তাহের জন্য পর্যাপ্ত ফর্মুলা আছে। তবে হাসপাতালের বাইরেও শিশুরা দুধ পাচ্ছে না। এটি বিপর্যয়কর।”

গাজায় শিশু খাদ্যের মজুদ কমে গেছে কারণ ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সামান্য সাহায্য ছাড়া বাকি সবই বন্ধ করে দিয়েছে। বিতর্কিত মার্কিন-ইসরায়েল-সমর্থিত বেসরকারি সংস্থা গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনএর মাধ্যমে আসা খাদ্য সহায়তায় শিশুদের ফর্মুলা দুধ নেই।

আল-নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী ২৭ বছর বয়সী পাঁচ সন্তানের মা হানা আল-তাওয়েল জানান, তিনি নিজে পর্যাপ্ত খাবার না পাওয়ায় বুকের দুধ খাওয়াতে পারছিলেন না। তার ১৩ মাস বয়সী সন্তানের জন্য ফর্মুলা দুধ খুঁজে পেতে তিনি হিমশিম খাচ্ছিলেন।

তিনি বলেন, “আমার ছেলের জন্মের পর থেকেই দুধের সমস্যা শুরু হয়, কারণ আমার অপুষ্টি এবং সাধারণ দুর্বলতার কারণে আমি আমার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারিনি।”

ডাক্তাররা আল-তাওয়েলকে জানিয়েছেন, তার ছেলে অপুষ্টির কারণে খর্বকায় রোগে ভুগছে এবং তিনি লক্ষ্য করেছেন যে তার ছেলে তার অন্যান্য বাচ্চাদের তুলনায় ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তাওয়েল বলেন, “আমি যখন ঘুম থেকে উঠি তখন আমার পাশে একটি ছোট রুটির টুকরো রাখার চেষ্টা করি। কারণ সে প্রায়ই খাবার চাইতে ঘুম থেকে ওঠে। আমার বাচ্চাদের জন্য আমি দুঃখ এবং ভয় অনুভব করি, আমি ভয় পাই যে তারা ক্ষুধা, তৃষ্ণা এবং রোগে মারা যাবে।”

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইতিমধ্যেই ৬৬ জন ফিলিস্তিনি শিশু অনাহারে মারা গেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইসরায়েলকে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে অনাহার ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে, যা তাদের মতে ‘ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর’ একটি কৌশল।
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য ফর ম ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য কাতারে প্রতিনিধি দল পাঠাবে ইসরায়েল

গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তির সর্বশেষ প্রস্তাব নিয়ে হামাসের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা করার জন্য রোববার কাতারে একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল।

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার রাতের শেষদিকে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর জানায়, তিনি আলোচকদের নির্দেশ দিয়েছেন—  তারা যাতে মধ্যস্থতাকারীদের আলোচনার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে।

তবে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের দেওয়া যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় হামাস যে পরিবর্তনের শর্ত দিয়েছে, সেটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে আখ্যা দিয়েছেন নেতানিয়াহু।

গত শুক্রবার রাতে হামাস জানায়, তারা ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া’ দেখিয়েছে এবং তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত।

তবে একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানান, হামাস যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে এমন কিছু সংশোধন চেয়েছে যার মধ্যে একটি হলো— স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা ব্যর্থ হলেও নিশ্চিত করতে হবে যে, নতুন করে কোনো হামলা হবে না।

গাজার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার ইসরায়েলি হামলা ও গুলিতে অন্তত ৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

খান ইউনিস শহরের একটি হাসপাতালের বরাতে জানানো হয়, আল-মাওয়াসি এলাকায় তাঁবুগুলোর ওপর বোমা হামলায় এক চিকিৎসক ও তাঁর তিন সন্তানসহ সাতজন নিহত হন।

এদিকে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিতর্কিত ত্রাণ বিতরণ সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের দুই মার্কিন কর্মী খান ইউনিস এলাকায় একটি গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছেন বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার জন্য হামাসকে দায়ী করেছে। যদিও হামাস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে ভয়াবহ হামলা চালায় হামাস। এর জবাবে সেদিন থেকে গাজায় তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, তখন থেকে এ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৫৭ হাজার ৩৩৮ জন নিহত হয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ