যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় গত শনিবার গাজা থেকে আরও ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণ অঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে আড়াই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল।

ওই জিম্মিদের অনেকেই যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় মুক্তি পেয়েছেন। কেউ কেউ গাজায় মারা গেছেন। কয়েকটি মৃতদেহ ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া জিম্মিদের কতজন মুক্তি পেয়েছেন, কতজন মারা গেছেন এবং আর কত জিম্মি এখনো জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে তার একটি হিসাব দিয়েছে আল-জাজিরা।

আল-জাজিরার হিসাব অনুযায়ী সেদিন ইসরায়েল থেকে ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, নেপালসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকেরা ছিলেন।

আল-জাজিরা বলেছে, যুদ্ধবিরতির মধ্যে বন্দিবিনিময় এবং অন্যান্য চুক্তির মাধ্যমে ১৩৮ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস।

তার মধ্যে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে সাত দিনের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চলে। সে সময় হামাস ১০৫ থেকে ১০৭ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয়।

গত বৃহস্পতিবার চার জিম্মির মৃতদেহ ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে হামাস।

গাজা অভিযান চালানোর সময় ইসরায়েলি সেনারা ৪০ জিম্মির মৃতদেহ উদ্ধার করেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ গাজায় ইসরায়েলের অভিযানের সময় ইসরায়েলি সেনাদের হাতে নিহত হন। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী-আইডিএফ তাদের সেই ‘ভুলবশত’ হামলার কথা স্বীকার করেছে।

আরও পড়ুনছয় জিম্মিকে ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিলেন না নেতানিয়াহু৯ ঘণ্টা আগে

হামাস দাবি করেছে, গাজায় যেসব জিম্মি নিহত হয়েছেন তাদের বেশির ভাগই ইসরায়েলি হামলার মধ্যে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন।

গাজায় আরও ৬১ জন জিম্মি থাকার কথা। এই ৬১ জিম্মির মধ্যে ৩১ জনকে মৃত ঘোষণা করেছে ইসরায়েল।

গাজায় অভিযানের সময় ইসরায়েলি সেনারা আট জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করে।

আল–জাজিরার খবরে আরও বলা হয়েছে, গাজায় এখনো যে কজন জিম্মি রয়েছেন তাঁদের মধ্যে পাঁচজন ইসরায়েলের নাগরিক নন। ওই পাঁচজনের মধ্যে তিনজন থাইল্যান্ড, একজন নেপাল এবং একজন তানজানিয়ার নাগরিক। ধারণা করা হয়, জিম্মি থাইল্যান্ডের একজন এবং নেপালের নাগরিক এখনো জীবিত আছেন।

আরও পড়ুনজিম্মিদের একসঙ্গে মুক্তি দিতে ‘রাজি’ হামাস১৭ ঘণ্টা আগে

দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় একটি আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপের ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতির সময় ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা হামাসের।

গত শনিবার হামাস ছয় জিম্মিকে মুক্তি দেয়। তাঁরা হলেন এলিয়া কোহেন, ওমের শেম-তোভ, ওমের ওয়েনকার্ট, তাল শোহাম, আভেরা মেনজিসটু ও হিশাম আল-সাইয়েদ। তাঁদের মধ্যে আভেরা ও হিশাম বেসামরিক নাগরিক। এ দুজন প্রায় এক দশক ধরে গাজায় বন্দী ছিলেন।

যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এরই মধ্যে হামাস কয়েকবারে ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে বলে শনিবার এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুনজিম্মি শিরির মরদেহ কোথায় ছিল, কেন ভুল হয়েছিল, জানাল হামাস৪ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য় ইসর য় ল ইসর য় ল র জন জ ম ম আল জ জ র র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের কিস্তির প্রস্তাব উঠছে আইএমএফ পর্ষদে

আগামী ২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের সভায় বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব উঠছে। সভায় অনুমোদন হলে একসঙ্গে দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ শুক্রবার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের সভার এ তারিখ নির্ধারণের তথ্য প্রকাশ করেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ পর্ষদের বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির পর্যালোচনা প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে।

বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা দিতে আইএমএফ ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে।

২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার।

আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও শর্ত পরিপালন নিয়ে বিশেষত টাকা–ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া নিয়ে  জটিলতা তৈরি হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ঢাকায় আসে। তবে সমঝোতা না হওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হয়।

সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতা হয় এবং বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং পর্ষদ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৭৬ কোটি ডলার বাড়তি ঋণ চেয়েছে। বাড়তি ঋণ যোগ হলে মোট দাঁড়াবে ৫৪০ কোটি ডলার। বিবৃতিতে বিনিময় হার, রাজস্ব আদায়, ব্যাংক খাতসহ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৫ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়ে তিন গুণ
  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা
  • পাল্টাপাল্টি হামলায় ইরান ও ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে
  • শাহরুখের পারিশ্রমিক ৪২৩ কোটি টাকা!
  • অন্য বছরের চেয়ে এই জুনে ডেঙ্গু বেশি
  • ইরানকে পরমাণু জগতে ঠেলে দিয়েছে ইসরায়েলই
  • আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের কিস্তির প্রস্তাব উঠছে আইএমএফ পর্ষদে
  • সামরিক শক্তিতে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে কে এগিয়ে  
  • চার দেশের পাঁচ লাখ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার নির্দেশ
  • চার দেশের পাঁচ লাখ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করার নির্দেশ