ঘন কুয়াশায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে দুই ঘণ্টা ও আরিচা-কাজিরহাটে দেড় ঘণ্টা ফেরি বন্ধ
Published: 12th, February 2025 GMT
ঘন কুয়াশার কারণে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়েছে। আজ বুধবার সকালে নৌপথ দুটিতে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। তবে কুয়াশা কেটে গেলে দুই ঘণ্টা পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং দেড় ঘণ্টা পর আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আজ ভোর থেকে কুয়াশার মাত্রা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে কুয়াশার ঘনত্ব আরও বেড়ে গেলে ফেরি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরে সকাল ছয়টার দিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ সময় পাটুরিয়া ঘাট প্রান্তে হাসনাহেনা, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, কেরামত আলী, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন, ভাষাশহীদ বরকত নামের ফেরি এবং দৌলতদিয়া প্রান্তে ফরিদপুর, বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, খান জাহান আলী, গোলাম মওলা, কপোতী ও এনায়েতপুরী নামের আরও ছয়টি ফেরি যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে নোঙর করে থাকে। এ ছাড়া পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ফেরি গৌরী পদ্মা নদীর মাঝে নোঙর করতে বাধ্য হয়।
অন্যদিকে ঘন কুয়াশার কারণে আজ সকাল সাতটা থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান, শাহ আলী, চিত্রা কাজিরহাট ঘাট প্রান্তে এবং ধানসিঁড়ি নামের অপর একটি ফেরি আরিচা ঘাট প্রান্তে নোঙর করে থাকে। কুয়াশা কেটে দুই ঘণ্টা পর আজ সকাল আটটার দিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং দেড় ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে আটটার দিকে আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল আবার শুরু হয়। এ সময় গন্তব্যের দিকে রওনা হয় ফেরিগুলো।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নাসিম মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথসহ আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আজ সকালে নৌপথ দুটিতে আবার ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। তবে ঘাট এলাকায় কোনো যানজট নেই। ঘাটে আসার পরপরই যানবাহন ও যাত্রীরা ফেরিতে নদী পারাপার হচ্ছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ লতদ য়
এছাড়াও পড়ুন:
দৌলতদিয়ায় ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে পন্টুনের কবজা, যানবাহন পারাপার ব্যাহত
তীব্র স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ৩ নম্বর পন্টুনের কবজা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে ঘাটটি। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে দৌলতদিয়ায় শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু আছে। এতে যানবাহন পারাপারে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে এবং সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় ও ঘাট-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে পদ্মায় তীব্র স্রোত দেখা দেয়। সন্ধ্যার পর এর তীব্রতা আরও বাড়ে। রাত ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা রো রো ফেরি শাহ পরান দৌলতদিয়ায় পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় ফেরিটি প্রচণ্ড বেগে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুনে ধাক্কা দিলে কবজা ভেঙে যায়। এর পর থেকে ঘাটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর আগে ২৩ আগস্ট থেকে তীব্র স্রোতের কারণে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটও বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে চারটি ঘাটের মধ্যে কেবল ৪ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে। সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী পরিবহন এবং জরুরি কিছু পণ্যবাহী গাড়ি পার করা হচ্ছে। তবে সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।
দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্টে (৩ নম্বর ঘাট) দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির নিরাপত্তা পরিদর্শক ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া বলেন, গতকাল রাতে ফেরি শাহ পরান ঘাটে ভেড়ার সময় প্রচণ্ড ধাক্কায় পন্টুনের কবজা ভেঙে যায়। তখন থেকে ঘাটটি বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কয়েক দিন ধরে সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা থেকে অনেক গাড়ি দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এ কারণেও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গাড়ির চাপ পড়ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়া প্রান্তে প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন তৈরি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির লাইন আরও লম্বা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় চালকসহ যাত্রীদের বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
সৌহার্দ্য পরিবহনের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, ‘শুধু একটি ঘাট চালু থাকায় যানবাহন স্বাভাবিকভাবে পার হতে পারছে না। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামুখী গাড়ি আটকে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। আমাদের চারটি যাত্রীবাহী বাস চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে আছে। বাসগুলো ফেরিতে উঠতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো সময় লাগছে।’
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে অনেক বেশি সময় লাগছে। গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। যাত্রীবাহী বাস ও কিছু জরুরি গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি আপাতত পার করা যাচ্ছে না।