গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় কনের বাড়িতে আটকে রাখা বর পক্ষকে উদ্ধার করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে পুলিশ। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ঘটনাটি ঘটে। গত শনিবার (৫ এপ্রিল) রাতে পুলিশ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে। 

রবিবার (৬ এপ্রিল) সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল হাকিম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাতে উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের দুখু মিয়ার মেয়ের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী রামজীবন ইউনিয়নের মো.

আয়নাল হকের ছেলের বিয়ে হয়। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে গিয়ে গেট পাসের টাকা এবং নরম ও নষ্ট ভাতকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় দুই পক্ষ। এক পর্যায় সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। স্থানীয় লোকজন এসে বর পক্ষের কয়েকজনকে আটকে রাখেন। অনেকে পালিয়ে যান।

আরো পড়ুন:

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৭

সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

গত শুক্রবার বর পক্ষের অবরুদ্ধ লোকজনকে উদ্ধারে থানায় লিখিত আবেদন করা হয়। এরপর সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় কনে পক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী গিয়ে পুলিশসহ বর পক্ষের লোকজনকে উদ্ধার করে। 

সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ওয়াজেদ হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, “ওসি ফোন করলে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। এলাকাবাসী কাজটা খুব খারাপ করেছেন। বারবার অনুরোধের পরও তারা আমাদের কথা শুনতে চাননি।”

সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, “অবরুদ্ধ লোকজনকে উদ্ধারের জন্য গেলে কনে পক্ষের লোকজন আমাদের লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে। পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নিলে লোকজন আমাকে ঘিরে ধরেছিল। সরকারি কাজে বাধা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।”

ঢাকা/মাসুম/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দরগঞ জ ল কজন

এছাড়াও পড়ুন:

গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার

নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল। 

আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’ 

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’ 

আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’ 

নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে। 

বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঢাকা/মাসুম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাঁকো বিড়ম্বনার ৪০ বছর 
  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা, নারী আটক
  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
  • শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন, দুই দিন পর যুবকের মৃত্যু