ঢাকায় ৬ দিনের গ্যাগারিন বিজ্ঞান ও শিল্প উৎসব
Published: 8th, April 2025 GMT
ইউরি গ্যাগারিনের ঐতিহাসিক মহাকাশ যাত্রার বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ঢাকায় শুরু হয়েছে গ্যাগারিন বিজ্ঞান ও শিল্প উৎসব-২০২৫। মানবজাতির প্রথম মহাকাশ যাত্রার ৬৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই উৎসবের আয়োজন করেছে ঢাকার রাশিয়ান হাউস।
সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।
ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউজের পরিচালক মিস্টার পাভেল এ.
দ্ভইচেনকভ রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের উপর জোর দেন।
তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো চলমান প্রকল্পগুলোর কথা উল্লেখ করেন এবং রাশিয়া ও সোভিয়েত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছয় হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি স্নাতকদের অবদানের কথা স্বীকার করেন যাদের প্রত্যক্ষ ও সক্রিয় ভূমিকা বাংলাদেশের উন্নয়নকে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে নিয়েছে। তিনি মহাকাশ বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞানে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রশংসা করেন এবং তরুণদের বড় স্বপ্ন দেখতে ও মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচনে উৎসাহিত করেন।
বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে আয়োজিত এই উৎসবের লক্ষে সপ্তাহব্যাপী ধারাবাহিক কার্যক্রমের মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক কৌতূহল, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনকে অনুপ্রাণিত করা।
উদ্বোধনী আলোচনার পর, দ্ভইচেনকভ আনুষ্ঠানিকভাবে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘রাশিয়ান স্পেস এক্সপিডিশনস’ উদ্বোধন করেন। এরপর ‘ইউরি গ্যাগারিনের মহাকাশ থেকে ফিরে আসার পরে প্যারেড’ তথ্যচিত্রের প্রদর্শনীর পর এবং একটি জ্যোতির্বিজ্ঞান কর্মশালা শুরু হয়।
সপ্তাহব্যাপী উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে থাকবে সেমিনার এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান কর্মশালা; রকেট মডেল তৈরির প্রতিযোগিতা; মহাকাশ বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা; ‘মহাকাশে প্রথম মানুষ’ বিষয়ের উপর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।
উৎসবটি ১২ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউসের পরিচালক কর্তৃক সকল অংশগ্রহণকারীদের সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাপ্তি হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথি বক্তারা ইউরি গ্যাগারিনকে ‘বিশ্ব বীর’ এবং মানুষের সাহস ও কৌতূহলের চিরন্তন প্রতীক বলে অভিহিত করেন।
সমাপনী বক্তব্যে মিস্টার দ্ভইচেনকভ এই অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনসহ সকল অংশগ্রহণকারী ও অতিথিদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি সবাইকে তাদের অন্বেষণের যাত্রা অব্যাহত রাখতে উৎসাহিত করেন, সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন যে ‘আকাশ সীমা নয়, এটি কেবল শুরু’। তিনি একটি অনুপ্রেরণামূলক আহ্বান দিয়ে শেষে বলেছিলেন ‘আসুন এগিয়ে যাই একসাথে, তারার দিকে!’
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সিডনিতে ড্র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কেউ না থাকায় হতাশ প্রবাসীরা
সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে সিডনির ঐতিহাসিক টাউন হল যেন পরিণত হলো এক রঙিন উৎসবের মঞ্চে। ঝকঝকে আলোর ঝলকানি, দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জা, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা আর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে দলে দলে আসা অতিথিদের পদচারণে মনে হচ্ছিল এ যেন কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। অথচ এটি ছিল ২০২৬ নারী এশিয়ান কাপ ফুটবলের ড্র অনুষ্ঠান, যেখানে এশিয়ার সেরা নারী ফুটবল দলগুলোর ভাগ্য নির্ধারিত হচ্ছিল।
বিকেল সাড়ে পাঁচটায় দরজা খোলার আগেই টাউন হলের সামনে জড়ো হয়েছিলেন নানা দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। তাঁদের হাতে নিজ নিজ দেশের পতাকা, পরনে ঐতিহ্যবাহী পোশাক। অস্ট্রেলিয়া, চীন, উত্তর কোরিয়া, জাপান, ভারত, ভিয়েতনাম, উজবেকিস্তান, ফিলিপাইন, ইরানসহ ১১টি দেশের ফুটবল দলের প্রতিনিধি, অধিনায়ক বা কোচের কেউ না কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ব ফুটবলের এই মিলনমেলায় সবাই নিজ দেশের নাম উজ্জ্বল করতে এসেছেন। কিন্তু এই আলো ঝলমলে মঞ্চে ছিলেন না বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের কোনো প্রতিনিধি।
অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্ব ফুটবলের এত বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়োজন হলো, অথচ বাংলাদেশের কোনো প্রতিনিধি নেই—এটা মেনে নেওয়া যায় না, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এখানে এসেছিলাম আমাদের মেয়েদের দেখতে, নিজেদের দেশের জার্সি গায়ে দেওয়া তারকাদের সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলাম।সাঈদ ফয়েজ, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংস্কৃতিক কর্মী ও ইভেন্ট সংগঠকঅথচ এটা বাংলাদেশের জন্য ইতিহাস গড়ার বছর। এই প্রথম বাংলাদেশের মেয়েরা এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছেন। কিন্তু সেই গৌরবময় মুহূর্তে, যখন বিশ্ব ফুটবল পরিবার সিডনিতে একত্র, তখন মঞ্চে অনুপস্থিত বাংলাদেশ। না কোনো ফুটবলার, না কোচ, না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কোনো কর্মকর্তা। এই অনুপস্থিতি ছিল অত্যন্ত দৃষ্টিকটু এবং বেদনাদায়ক, কারণ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ভারতের তারকা খেলোয়াড়সহ অন্যান্য দেশের ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা। তাঁরা ট্রফির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, বিশ্ব গণমাধ্যমের সামনে নিজেদের দেশকে তুলে ধরেছেন, আর স্মৃতির ক্যামেরায় ধরে রাখছেন ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আর বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বের জায়গাটিতে খাঁ খাঁ শূন্যতা।
ভারত নারী দলের মিডফিল্ডার সংগীতা বাসফোর ড্র–তে বাংলাদেশের নাম তোলেন