নববর্ষের দিন টিএসসি-শাহবাগ মেট্রো স্টেশন ‘সাময়িক বন্ধ থাকবে’
Published: 11th, April 2025 GMT
বর্ষবরণের আয়োজন নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও সংলগ্ন শাহবাগ মেট্রো স্টেশন পয়লা বৈশাখের দিন সাময়িক বন্ধ থাকবে।
পহেলা বৈশাখ ও বর্ষবরণের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম শেখ।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বেলা ১১টায় চারুকলা অনুষদের ওসমান জামাল মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম বলেন, নববর্ষের দিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত টিএসসি ও শাহবাগ মেট্রো স্টেশন সাময়িক বন্ধ থাকবে।
আরো পড়ুন:
বর্ষবরণে থাকছে ‘অন্ধকার কাল থেকে উত্তীর্ণ হবার বার্তা’
বৈশাখী মেলা সামনে রেখে মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা
গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের প্রথম বর্ষবরণের যাবতীয় আয়োজনে থাকছে অন্ধকার কাল থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার বার্তা; সেই সঙ্গে ফ্যাসিবাদ ও নিপীড়নের কালপর্ব শেষে বাংলাদেশের সংস্কৃতি চর্চার মুক্তির আলোয় উদ্ভাসিত এক বৈশাখ এবার দেখা যাবে বলে মনে করছেন আয়োজকরা।
সংবাদ সম্মেলনে বর্ষবরণের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনার বিষয়ে অবহিত করা হয়। এবার বর্ষবরণের শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনসহ আয়োজনে বেশ কিছু নতুনত্ব রাখা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের জন্য রয়েছে কিছু নির্দেশনা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এবারের বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় বাঙালি ছাড়াও সারা দেশের ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর উপস্থিতি থাকবে। এসব জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছ- ম্রো, মারমা, লুসাই, বম, খিয়াং, চাকমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, পাংখোয়া, রাজোয়াড়, সাঁওতাল (দাঁসাই), মাহালী, কোল, মালপাহাড়িয়া, সাঁওতাল (ডম), মাহাতো, ওঁরাও, মনিপুরী, খাসিয়া, চা জনগোষ্ঠী, কোচ, গারো, হাজং, বানাই, তুরী, মালো, মুন্ডা, রাখাইন।
এবার শোভাযাত্রার সামনে কোনো পুলিশ বা সোয়াত সদস্য থাকবেন না। তার পরিবর্তে পুলিশ সদস্যরা শোভাযাত্রার দুই পাশে থাকবে। পুলিশের ৮ ঘোড়ার পর শোভাযাত্রায় পর্যায়ক্রমে ২৮টি ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ৪৬৪ জন সদস্যবৃন্দ, চারুকলা অনুষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বান্দরবানের কিশোর ব্যান্ডদল, বামবা ব্যান্ডসংগীত শিল্পীর দল, বাউল সাধু, কৃষকদল ও মূলধারা শিল্পীগোষ্ঠী, সাধনা নৃত্য সংগঠন, রংধনু পোশাকশ্রমিক শিল্পী সংগঠন, নারী ফুটবলার, অ্যাক্রোবেটিক শিল্পী, রিকশা র্যালি, ঘোড়ার গাড়ির বহর এবং সব শেষে সাধারণ মানুষ থাকবে।
বড় মোটিফ: ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, কাঠের বাঘ, ইলিশ মাছ, শহীদ মুগ্ধর পানির বোতল, শান্তির পায়রা,পালকি, তরমুজের ফালি।
মাঝারি মোটিফ: সুলতানি ও মুঘল আমলের মুখোশ ১০টি, রঙিন চরকি ২০টি, তালপাতার সেপাই ৮টি, তুহিন পাখি ৫টি, পাখা ৮টি, ঘোড়া ২০টি, লাঙল ৫টি, ১০০ ফুট লোকজ চিত্রাবলির ক্যানভাস।
ছোট মোটিফ: ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ৮০টি, মাছের ডোলা ৫টি, বাঘের মাথা ২০০টি, পলো ১০টি, মাছের চাই ৬টি, মাথাল ২০টি, লাঙল ৫টি।
নববর্ষের দিন সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হবে। এ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধু নীলক্ষেত-পলাশী ফটক দিয়ে জনসাধারণ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে। বাকি ফটকগুলো বন্ধ থাকবে। শোভাযাত্রার শেষ অংশ যখন শাহবাগ মোড়ে পৌঁছাবে তখন জনসাধারণ শাহবাগ অংশের প্রবেশ পথ দিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় প্রদক্ষিণ করে টিএসসি-শহীদ মিনার-দোয়েল চত্বর থেকে বাংলা একাডেমি-টিএসসি দিয়ে আবার চারুকলা অনুষদে এসে শেষ হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ, শোভাযাত্রাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক এ এম কাওসার হাসান উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/রায়হান/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পয়ল ব শ খ নববর ষ শ হব গ ম র চ র কল সদস য ট এসস
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো ‘জনপদের বর্ষবরণ ১৪৩২’
কক্সবাজার জেলার লোকসংগীত শিল্পী বুলবুল আক্তার। এই শিল্পী নিজের মধ্যে ধারণ করেছেন চট্রগ্রাম ও কক্সবাজারের নিজস্ব ভাষা, সুর ও সংস্কৃতি। কালো বোরকার ফ্যাশনে সাধারণ ও সরল চেহারার এই শিল্পীর দরদি কণ্ঠে ফুটে ওঠে প্রেম, বিরহ, সমাজ ও প্রান্তিক জীবনের গল্প। বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি গেয়েছেন ‘মধু হইহই বিষ খাওয়াইলা’ ও ‘হালাসান গলার মালা’।
রসিক আড্ডার আয়োজনে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফোকলোর অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় আয়োজিত হয় জনপদের বর্ষবরণ ১৪৩২। দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মাঠে এই আয়োজন চলে। দুপুরে বৃষ্টি এলে ভিজে বৃষ্টিবিলাসে মেতে ওঠেন আয়োজক এবং অনুষ্ঠান দেখতে আসা অনেকে।
অনুষ্ঠানে মঞ্চে ছিল বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়া। দূর থেকে মঞ্চে তাকালে বাঙালির ঐতিহ্যই চোখে ভেসে ওঠে। মঞ্চ তৈরি করা হয় প্রতীকী গ্রামবাংলার দৃশ্য কলাগাছ ও খড়ের ঘর দিয়ে। তা ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদের বর্ষবরণকে ফুটিয়ে তুলতে এই আয়োজনে ছিল ধামাইল নাচ, চাকমা, মারমা ও খুমি জনগোষ্ঠীর নৃত্য ও আধুনিক নৃত্য। ব্যান্ডের মধ্যে ছিল ফিরোজ জঙ, আপনঘর, Sacrament-গারো ব্যান্ড, ব্যান্ড লাউ।
এই আয়োজনে গ্রামীণমেলায় ছিল নাগরদোলা, বানরখেলা, রণপা, বায়োস্কোপ ও পুতুলনাচ। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদের খাবার ও পোশাকের স্টল ছিল।
আয়োজকদের একজন নাহিয়ান ফারুক বলেন, রসিক আড্ডা বাংলাদেশের সংস্কৃতি পাঠ ও তা চর্চা করে। রসিক আড্ডার তিনটি ম্যাগাজিন রণপা, কলন্দর ও সিনেযোগ বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতি–নির্ভর আলোচনা করে এবং তা জনপরিসরে ফুটিয়ে তোলে। এরই ধারাবাহিকতায় এই আয়োজন করা হয়েছে।