ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশনের ডাক শিক্ষার্থীদের
Published: 16th, August 2025 GMT
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বিশ্ববিদ্যালয় আইনে অন্তর্ভুক্তি ও নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণার দাবিতে আমরণ অনশনে বসছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১৭ আগস্ট) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বেশ কিছুদিন থেকে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছাত্র সংসদ চেয়ে হলেও বিভাগে শিক্ষার্থীদের নিকট লিফলেট বিতরণ, উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রধান, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়।
আরো পড়ুন:
নিহত আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান
হাসপাতালে শিক্ষার্থীকে মারধর: বেরোবিতে প্রতিবাদ-সমাবেশ
তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, তারা প্রশাসনকে অনেক সময় দিয়েছেন কিন্তু দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাননি। তাই তারা কঠোর কর্মসূচি নিয়ে ভাবছেন।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সংসদের সাধারণ সম্পাদক মো.
ইলেকট্রনিক অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, “দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছাত্র সংসদ নির্বাচন।এমনকি কোটা আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ৯ দফার অন্যতম ছিল—প্রত্যেক ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু, জুলাই বিপ্লবের এক বছর পেরিয়ে গেলেও, আবু সাঈদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দৃশ্যমান কিছু দেখতে পাইনি। ছাত্র সংসদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করা হয়। কিন্তু প্রায় তিন মাস সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। ৩৬ দিনে আমরা স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি, কিন্তু ছাত্র সংসদের মতো যৌক্তিক বিষয়ের জন্যও আমাদের দীর্ঘসূত্রিতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে—এটি শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত হতাশার।এরই পরিপ্রেক্ষিতে দাবি আদায় এর লক্ষ্যে আগামীকাল থেকে আমরণ অনশন এ বসতে যাচ্ছি।”
এ বিষয়ে প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, “যে ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা হয়েছে, তাদের পূর্ব থেকেই আইন পাস করা ছিল। আমরাও ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় খসড়া করে ইউজিসিতে পাঠিয়েছি। ইউজিসি একটি কমিটি করেছে, যেখানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জনকে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউজিসি সেই খসড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে গেলেই চূড়ান্ত হবে। এরপর আমরা ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারব।”
রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন অর রশিদ বলেন, “আমরা নীতিমালা করেছি। এখন রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লাগবে। এইটা তো আর আমাদের হাতে না।”
বেরোবি/আজম/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আমরণ অনশন
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।”
আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”
দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”
তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”
দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”
ঢাকা/ফিরোজ