নিম্নমানের ইট-খোয়া ও বালু ব্যবহারের অভিযোগে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের একটি সড়কের নির্মাণকাজ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এসব অপসারণ করে ভালো মানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল কুমার হালদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঠিকাদারকে ভালো মানের ইট দিয়ে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে গতকাল শুক্রবার এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ইউএনও।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও রৌমারী উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চতলাকান্দা জিঞ্জিরাম নদীর মোড় থেকে গয়টাপাড়া এলাকা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে পাকাকরণের কাজ শুরু হয়। এতে চারটি প্যাকেজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রতিটি প্যাকেজের নির্মাণমূল্য ধরা হয়, ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কুড়িগ্রামের খলিলগঞ্জের মেসার্স দুলাল কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী জহুরুল হক কাজটি পেলেও রৌমারীর ঠিকাদার শহিদুল ইসলাম কাজটি কিনে নেন। কিন্তু কাজের শুরুতেই নিম্নমানের ইট-খোয়া ও মাটি মিশ্রিত বালু ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। পরে এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিকেলে ইউএনও সেখানে গিয়ে এসব সামগ্রী অপসারণের নির্দেশ দেন।

ঠিকাদার শহিদুল ইসলাম অভিযোগের বিষয়ে বলেন, যন্ত্র দিয়ে ট্রাক্টরে ইট তোলার সময় কিছু নিম্নমানের সামগ্রী এসেছিল। পরে নির্দেশনা অনুযায়ী সেগুলো সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।

রৌমারী উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, সড়ক নির্মাণের জন্য পরিপত্রে যে ধরনের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কথা আছে, সেরকম ভালো মানের নির্মাণসামগ্রী যাচাই–বাছাই করেই কাজের সুযোগ দেওয়া হবে। ওই ঠিকাদারের ট্রাক্টরে কিছু ইটের সঙ্গে নিম্নমানের ইট এসেছিল। সেগুলো ফেরত পাঠানো হয়েছে। ভালো মানের ইট এনে আবার কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র র ম ন র ইট র জন য উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • পড়াশোনায় ফিরছেন দিনাজপুরের ‘ইংলিশম্যান’ হৃদয়, শেখাবেন ইংরেজি
  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ
  • দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিলেন ইউএনও