সড়কে নিম্নমানের ইট-খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ, নির্মাণকাজ আটকে দিলেন ইউএনও
Published: 26th, April 2025 GMT
নিম্নমানের ইট-খোয়া ও বালু ব্যবহারের অভিযোগে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের একটি সড়কের নির্মাণকাজ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এসব অপসারণ করে ভালো মানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল কুমার হালদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঠিকাদারকে ভালো মানের ইট দিয়ে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে গতকাল শুক্রবার এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ইউএনও।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও রৌমারী উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চতলাকান্দা জিঞ্জিরাম নদীর মোড় থেকে গয়টাপাড়া এলাকা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে পাকাকরণের কাজ শুরু হয়। এতে চারটি প্যাকেজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রতিটি প্যাকেজের নির্মাণমূল্য ধরা হয়, ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কুড়িগ্রামের খলিলগঞ্জের মেসার্স দুলাল কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী জহুরুল হক কাজটি পেলেও রৌমারীর ঠিকাদার শহিদুল ইসলাম কাজটি কিনে নেন। কিন্তু কাজের শুরুতেই নিম্নমানের ইট-খোয়া ও মাটি মিশ্রিত বালু ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। পরে এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিকেলে ইউএনও সেখানে গিয়ে এসব সামগ্রী অপসারণের নির্দেশ দেন।
ঠিকাদার শহিদুল ইসলাম অভিযোগের বিষয়ে বলেন, যন্ত্র দিয়ে ট্রাক্টরে ইট তোলার সময় কিছু নিম্নমানের সামগ্রী এসেছিল। পরে নির্দেশনা অনুযায়ী সেগুলো সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।
রৌমারী উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, সড়ক নির্মাণের জন্য পরিপত্রে যে ধরনের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কথা আছে, সেরকম ভালো মানের নির্মাণসামগ্রী যাচাই–বাছাই করেই কাজের সুযোগ দেওয়া হবে। ওই ঠিকাদারের ট্রাক্টরে কিছু ইটের সঙ্গে নিম্নমানের ইট এসেছিল। সেগুলো ফেরত পাঠানো হয়েছে। ভালো মানের ইট এনে আবার কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র র ম ন র ইট র জন য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মতলব দক্ষিণে এক বিদ্যালয়ের ২০ এসএসসি পরীক্ষার্থীর রোল নম্বরে অন্য শিক্ষার্থীদের নাম
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় একটি বিদ্যালয়ের ২০ পরীক্ষার্থীর রোল নম্বরে অন্য শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের ফলাফল আসেনি। নিবন্ধন প্রক্রিয়ার ত্রুটির কারণে এমনটি হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
ওই বিদ্যালয়ের নাম আলহাজ তোফাজ্জল হোসেন ঢালী উচ্চবিদ্যালয়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে ২০ জুলাই লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে গতকাল রোববার মৌখিক অভিযোগ করে বিদ্যালয়টির আরও ১৯ পরীক্ষার্থী। ফলাফল না পেয়ে এসব পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা হলো সামিয়া, নাদিয়া আক্তার, আঁখি, মীম, মাহিয়া আক্তার মাহী, রিফাতুল ইসলাম, আরাফাত রহমান, তানজিনা আক্তার, অন্তরা, ফারিয়া ইসলাম, সাবিকুন্নাহার জুমা, জাকিয়া আক্তার মুন্নী, ইয়াসমিন আক্তার, নুসরাত, আসমা আক্তার, দ্বীপ চক্রবর্তী, মাহমুদা, শিরিনা আক্তার, আহাদ ঢালী ও খাদিজা আক্তার ফাতেমা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আলহাজ তোফাজ্জল হোসেন ঢালী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সব বিভাগ হতে মোট ৮৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৬৪ জনের ফলাফল পাওয়া যায়। বাকি ২০ জনের ফলাফল পাওয়া যায়নি। ওই ২০ জনের রোল নম্বরের বিপরীতে অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নাম-তথ্য পাওয়া যায়, যারা এবার এসএসসি পরীক্ষাতেই বসেনি। ছাত্রীর রোল নম্বরের বিপরীতে ফলাফল শিটে ছাত্রের নাম এবং ছাত্রের ফলাফল শিটে ছাত্রীর নাম দেখা যায়।
সাবিকুন্নাহার অভিযোগে জানায়, ১০ জুলাই প্রকাশিত ফলাফল শিটে তার রোল নম্বর সার্চ দিলে ফারদিন হোসেন নামের আরেক ছাত্রের নাম আসে, অথচ সে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেয়নি। ছাত্রটি একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ছে। পরীক্ষা দিয়ে ফলাফল না পেয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ জুমা।
জানতে চাইলে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মাজহারুল হক বলেন, হাফিজুর রহমান নামের এক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনলাইনে নিবন্ধনের কাজ করেন। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ডাউনলোড করে তাদের কাছে পৌঁছানোর দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হয়। তাঁর দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ড ও ভুলের কারণে ওই পরীক্ষার্থীরা ফলাফল পাচ্ছে না। নবম শ্রেণিতে তাদের নিবন্ধনই ঠিকমতো হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে ওই পরীক্ষার্থীদের নিবন্ধন কার্ড সংশোধন করে ফলাফল সংশোধনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে বিদ্যালয়টির একাধিক শিক্ষকের দাবি, এসএসসির ফলাফল প্রকাশের পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান বিদ্যালয়ে আসছেন না। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ। এই প্রতিবেদকও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পেয়েছেন।
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে ইউএনও আমজাদ হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করতে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্ত প্রতিবেদন কয়েক দিনের মধ্যে জমা দেওয়া হবে জানিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গাউছুল আজম পাটওয়ারী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ওই পরীক্ষার্থীদের নিবন্ধনই করা হয়নি। যেসব নিবন্ধন কার্ড ও প্রবেশপত্র পরীক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে, সেগুলো ভুয়া। ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে আগামীকাল মঙ্গলবার কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের একটি প্রতিনিধিদল ওই বিদ্যালয়ে যাবে।