পাবনায় পুলিশ দেখে পালালেন শিকারিরা, উদ্ধার ৪৫টি ঘুঘু অবমুক্ত
Published: 17th, September 2025 GMT
প্রকৃতিতে লেগেছে শীতের আমেজ। গ্রামাঞ্চলের মাঠ-বিল-চরাঞ্চলে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। আর এই সুযোগে নির্বিচারে এসব পাখি শিকারে নেমেছেন শিকারিরা। পাবনার সুজানগর উপজেলায় এমন একদল শিকারির কাছ থেকে ৪৫টি ঘুঘু উদ্ধার করে অবমুক্ত করেছে উপজেলা প্রশাসন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে এসব পাখি অবমুক্ত করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামান ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই শিকারিরা উপজেলার বিভিন্ন বিল ও গ্রাম থেকে পাখি শিকার করে বাজারে বিক্রি করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল উপজেলার কেষ্টপুর বাজারে বেশ কিছু ঘুঘু বিক্রি করতে যান শিকারিরা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পাখি রেখেই পালিয়ে যান শিকারিরা। পরে সেখান থেকে ৪৫টি ঘুঘু পাখি উদ্ধার করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে নেওয়া হয়।
ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামান জানান, প্রকৃতিতে শীতের আমেজ শুরু হতেই রং-বেরঙের অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। কলতানে মুখর হচ্ছে উপজেলার সবচেয়ে বড় গাজনার বিল ও পাশের পদ্মা নদীর তীরবর্তী চরগুলো। এসব জায়গায় দেখা মিলছে সাদা বক, বালিহাঁস, মাছরাঙা, সারস, পানকৌড়িসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পাখি। খাবারের সন্ধানে এসে এসব পাখি শিকারিদের ফাঁদে পড়ছে।
ইউএনও আরও বলেন, স্থানীয়ভাবে পাখি শিকার বন্ধে সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে। পাখি শিকার করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
ওসি মজিবর রহমান বলেন, ‘উপজেলার বাজারগুলোতে যেভাবে পাখি বিক্রি করা হয়, তা শুধু বেআইনি নয়, নিষ্ঠুরতাও। আমরা পাখি শিকার বন্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করব।’
এ প্রসঙ্গে প্রকৃতি ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ক জেলার সংগঠন নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন কমিউনিটির সভাপতি এহসান আলী বিশ্বাস বলেন, লোভে পড়ে শিকারিরা পাখি শিকার করেন। কিন্তু প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় পাখি শিকার বন্ধে আরও সচেতনতা জরুরি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মাদ্রাসার বরাদ্দের দুম্বার মাংস ছিনতাইয়ের অভিযোগ
সৌদি আরব থেকে মাদ্রাসা ও এতিমখানার জন্য পাঠানো দুম্বার মাংস ছিনতাই করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছিনতাইকারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি এখনো।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা পরিষদের মসজিদের পাশে এ ছিনতাই হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তাড়াশ উপজেলার ৪৪টি মাদ্রাসা ও এতিমখানার জন্য ১৬৪ কার্টন দুম্বার মাংস বরাদ্দ দেওয়া হয়। বুধবার বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে সেই মাংস বিতরণের খবর পেয়ে শত শত মানুষ ভিড় জমান। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহানের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও দুই দিনের সরকারি প্রশিক্ষণ থাকায় উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত উপস্থিত হন। তিনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবু ছাঈদ মল্লিককে সঙ্গে নিয়ে পুলিশি পাহারায় মাংস বিতরণ শুরু করেন। বরাদ্দের তালিকা অনুযায়ী সদর ইউনিয়নের মথুরাপুর মহিলা মাদ্রাসার পক্ষে শিক্ষক সুলতান মাহমুদ এক কার্টন দুম্বার মাংস বুঝে নেন। পরে এ মাংস নিয়ে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন মসজিদের রাস্তায় গেলে ভিড়ের মধ্যে কয়েকজন মিলে তাকে আটকে মাংসের কার্টন জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেন।
শিক্ষক সুলতান মাহমুদ বলেছেন, দুস্থদের হক এভাবে মানুষ ছিনতাই করে নিয়ে যাবে, কখনো ভাবিনি। তবে, আমি কাউকে চিনতে পারিনি। এর বিচার আল্লাহ করবেন।
মাংস বিতরণকালে দায়িত্বে থাকা তাড়াশ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, দুম্বার মাংস বিতরণকালে কোনো প্রকার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেনি। বিতরণের সময় উল্লাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত বলেছেন, ছিনতাইয়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি কেউ এ ধরনের কাজ করে থাকে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/অদিত্য/রফিক