২৩ এপ্রিল ২০২৫। নিউইয়র্ক শহরের আকাশে তখন সন্ধ্যা নেমেছে। স্যাক্স ফিফথ অ্যাভিনিউয়র আলো ঝলমলে এক রেস্তোরাঁয় ছোট্ট এক জমকালো আয়োজন। সেদিন ছিল সুপার মডেল গিগি হাদিদের ৩০তম জন্মদিন। কিন্তু সেই রাতের আলোয় এক টুকরো সোনালি রহস্য লুকিয়ে ছিল, যা সবার মনে নতুন কল্পনার জন্ম দিয়েছে। সেদিনের আয়োজনে গিগি সাদা বডিস্যুট, কালো লেদার প্যান্ট আর উজ্জ্বল লাল লিপস্টিকে নিজেকে সাজিয়েছিলেন। তাঁর হাত ধরে এগিয়ে এলেন দীর্ঘদিনের প্রেমিক অভিনেতা ও প্রযোজক ব্র্যাডলি কুপার। তিনি পরেছিলেন নীল প্যান্ট-শার্টের সঙ্গে কালো লেদার জ্যাকেট। হাতে হাত ধরে যখন তারা পার্টির ভেতর ঢুকলেন, মনে হচ্ছিল রাতের আলোও যেন একটু বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠল তাদের জন্য। কিন্তু সবার দৃষ্টি আটকে গেল গিগির বাঁ হাতের অনামিকায় থাকা সোনালি আংটি। যা ছিল নিঃশব্দে বলে ওঠা এক ঘোষণা। হয়তো, নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চলেছেন এই দুই তারকা।
পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন গিগির মা ইয়োলান্ডা, বাবা মোহাম্মদ, বোন বেলা, আর কাছের বন্ধুরা, যার মধ্যে ছিলেন অভিনেত্রী অ্যানা হ্যাথাওয়ে ও তাঁর স্বামী অ্যাডাম শুলম্যান। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার। ২০২৩ সালের অক্টোবরে নিউইয়র্কের এক পার্টিতে গিগি ও ব্র্যাডলির প্রথম দেখা হয়েছিল। তারপর, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, সম্পর্কটা যেন চুপিসারে নিজেদের গভীরতা খুঁজে পেয়েছে। একসঙ্গে সময় কাটানো, ছোট ছোট মুহূর্ত ভাগাভাগি করা। কিছুদিন আগে ভোগ ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গিগি বলেছিলেন, ‘এই সম্পর্কটা খুব শান্তিময়। আমরা চাই স্বাভাবিকভাবে একে অপরের পাশে থাকতে। আজকের দিনে, সেটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
যদিও গিগি কিংবা ব্র্যাডলি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেননি। সময় হয়তো বলে দেবে, গিগির হাতের সেই আংটি সত্যিই কি একটি প্রতিশ্রুতির প্রতীক, নাকি শুধু জন্মদিনের একটি বিশেষ উপহার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ ন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।