একটি বিয়ের ঘোষণা, এক তরুণীর দুর্ঘটনা, একটি গুজব আর সেখান থেকেই রহস্যের শুরু। ঈদে দীপ্ত প্লেতে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা মাহমুদুর রহমান পরিচালিত ওয়েব ফিল্ম হাইড এন সিক-এ উঠে এসেছে গ্ল্যামারজগতের রঙিন আলোর আড়ালে লুকিয়ে থাকা অন্ধকার নানা দিক।

গল্পের শুরু সিনেমার তারকা ইমতিয়াজ খানের বিয়ের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে। সেই রাতেই ঘটে যায় এক ‘অ্যাকসিডেন্ট’। আহত হয় রাশা নামের এক তরুণী।

‘হাইড এন সিক’-এর দৃশ্য। ছবি : দীপ্ত প্লে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সৌরজগৎ আসলে কতটা জটিল

সৌরজগৎ বলতে আমরা অনেকেই শুধু সূর্য ও তার চারপাশে ঘূর্ণমান আটটি গ্রহের সমষ্টিকে বুঝি। গ্রহ, উপগ্রহ, বামন গ্রহ, গ্রহাণু, ধূমকেতু ও আন্তঃগ্রহ ধূলিকণার এক বিশাল পরিবার নিয়ে গঠিত হওয়ায় সৌরজগতের প্রতিটি অঞ্চলেরই আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

সৌরজগতের কেন্দ্রে রয়েছে সূর্য। এটি সৌরজগতের মোট ভরের ৯৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ ধারণ করছে। সূর্য তার শক্তিশালী মহাকর্ষীয় আকর্ষণের মাধ্যমে অন্যান্য সব বস্তুকে কক্ষপথে ধরে রেখেছে। সূর্য মূলত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাসের একটি বিশাল জ্বলন্ত গোলক। এখানে নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আলো ও তাপ উৎপন্ন হয়। অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন গ্রহ সূর্যকে ঘিরে রেখেছে। এসব গ্রহকে টেরেস্ট্রিয়াল প্ল্যানেটস বলে। সূর্যের নিকটতম চারটি গ্রহ হচ্ছে বুধ, শুক্র, পৃথিবী ও মঙ্গল। এসব গ্রহ পাথুরে ও তুলনামূলকভাবে ছোট। এদের কঠিন পৃষ্ঠ, সিলিকেট শিলা ও ধাতব কোর রয়েছে।

বুধ সূর্যের সবচেয়ে কাছের এবং সৌরজগতের ক্ষুদ্রতম গ্রহ। এর কোনো প্রাকৃতিক উপগ্রহ নেই ও ক্ষীণ বায়ুমণ্ডল রয়েছে। দিনের তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি ও রাতের তাপমাত্রা খুব কম। ঠিক পরেই আছে শুক্র গ্রহের অবস্থান। এখানে ঘন কার্বন ডাই–অক্সাইড সমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডল রয়েছে। একটি উত্তপ্ত ও আগ্নেয়গিরিপ্রবণ গ্রহ শুক্র গ্রহ। শুক্র গ্রহ সৌরজগতের উষ্ণতম গ্রহ আর এর কোনো প্রাকৃতিক উপগ্রহ নেই। শুক্র গ্রহের পরেই পৃথিবীর অবস্থান। এটিই একমাত্র গ্রহ যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে বলে জানা যায়। পৃথিবীর তরল পানি, অক্সিজেনসমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডল ও একটি প্রাকৃতিক উপগ্রহ চাঁদ রয়েছে। ঠিক পরেই মঙ্গল গ্রহের অবস্থান। রুক্ষ, লালচে পৃষ্ঠ ও পাতলা বায়ুমণ্ডলের একটি শীতল গ্রহ মঙ্গল গ্রহ। এর দুটি ছোট প্রাকৃতিক উপগ্রহ ফোবস ও ডিমোস।

মঙ্গল গ্রহের ঠিক পরেই বৃহস্পতি গ্রহের অবস্থান। মঙ্গল ও বৃহস্পতি কক্ষপথের মাঝের অঞ্চলে লাখ লাখ পাথুরে ও ধাতব বস্তু সূর্যের চারপাশে ঘুরছে। এদের আকার কয়েক মিটার থেকে শুরু করে কয়েক শ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। বামন গ্রহ সেরেস এই বেল্টের বৃহত্তম বস্তু। এই বেল্টের পর থেকেই সৌরজগতের বাহ্যিক গ্রহের অবস্থান। এরা গ্যাস জায়ান্টস হিসেবে পরিচিত। বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন গ্রহ আকারে বেশ বিশাল ও গ্যাসীয়। এদের কোনো কঠিন পৃষ্ঠ নেই। এরা মূলত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে গঠিত। এদের সবারই নিজস্ব বলয়ব্যবস্থা ও অসংখ্য প্রাকৃতিক উপগ্রহ রয়েছে।

বৃহস্পতি গ্রহ সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ, যার শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র ও ৭৯টিরও বেশি পরিচিত উপগ্রহ রয়েছে। আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড ও ক্যালিস্টো চারটি বড় উপগ্রহ ঘুরছে বৃহস্পতিকে ঘিরে। ঠিক পরেই শনি গ্রহের অবস্থান। এটি সুবিশাল ও দৃশ্যমান বলয়ব্যবস্থার জন্য বিখ্যাত। শনির ২৭৪টিরও বেশি পরিচিত উপগ্রহ রয়েছে। টাইটান এদের বৃহত্তম ও এখানে মিথেনের হ্রদ রয়েছে।

এরপরেই ইউরেনাস নামের বরফের দৈত্যকার গ্রহের অবস্থান। গ্রহটি নিজের কক্ষপথে কাত হয়ে আছে। ইউরেনাসের ২৭টি পরিচিত উপগ্রহ রয়েছে। এরপরেই নেপচুন গ্রহের অবস্থান। এটি সৌরজগতের দূরতম গ্রহ। এখানকার শক্তিশালী ঝোড়ো বাতাসের তথ্য জানা যায়। এ ছাড়া ১৪টি পরিচিত উপগ্রহ রয়েছে নেপচুনের। যার মধ্যে ট্রাইটন বৃহত্তম ও বিপরীত দিকে ঘোরে বলে জানা যায়।

আরও পড়ুনসৌরজগতের নবম গ্রহের খোঁজে নতুন তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা ২০ মে ২০২৫

নেপচুনের কক্ষপথের বাইরে অবস্থিত বরফ ও পাথরের ছোট ছোট বস্তুর একটি বিশাল চাকতি কুইপার বেল্ট। বামন গ্রহ প্লুটো, হাউমিয়া ও মেকমেক এই অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য সদস্য। ধারণা করা হয়, অনেক ধূমকেতুর উৎপত্তি এই কুইপার বেল্টেই। এরপরেই অবস্থান একটি ছড়ানো চাকতির। কুইপার বেল্টের বাইরে অবস্থিত বরফের বিভিন্ন বস্তুর একটি বিক্ষিপ্ত অঞ্চল এটি। বামন গ্রহ এরিস এই অঞ্চলের বৃহত্তম বস্তু। এটি প্লুটোর চেয়েও বড়। এরপরেই ওর্ট মেঘ নামের বিশেষ অঞ্চলের অবস্থান। সৌরজগতের একেবারে প্রান্তে আছে বিশাল গোলাকার মেঘ, যা ওর্ট মেঘ নামে পরিচিত। এটি সূর্য থেকে প্রায় ৫ হাজার থেকে ১ লাখ জ্যোতির্বিদ্যা একক দূরত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত। দীর্ঘ যাত্রার ধূমকেতুর উৎস এই ওর্ট মেঘ বলে মনে করা হয়। এর অস্তিত্ব সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা যায়নি। বিভিন্ন গাণিতিক মডেল ও ধূমকেতুর গতিবিধি থেকে ওর্ট মেঘের ধারণা পাওয়া যায়।

এ ছাড়া সৌরজগতে অসংখ্য ধূমকেতু রয়েছে। এসব ধূমকেতু বরফ, ধুলা ও গ্যাসের মিশ্রণে তৈরি। সূর্যের কাছাকাছি এলে লেজ তৈরি করে। এ ছাড়া রয়েছে অগণিত উল্কা ও উল্কাপিণ্ড। এসব গ্রহাণু বা ধূমকেতুর অংশ। বিভিন্ন এলাকায় আন্তঃগ্রহ স্থানে অত্যন্ত ক্ষীণ গ্যাস ও ধূলিকণা বিদ্যমান বলে জানা যায়।

আরও পড়ুনসৌরজগতের কোন গ্রহ কীভাবে ঘুরছে২৩ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌরজগৎ আসলে কতটা জটিল
  • সৌরজগতের বাইরে থাকা নক্ষত্রগুলোর দূরত্ব কত