সংকট ও বিধিনিষেধ পণ্য রপ্তানির জন্য চ্যালেঞ্জ
Published: 1st, June 2025 GMT
দেশি–বিদেশি চ্যালেঞ্জের মধ্যেও দেশের পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের আরেক উৎস প্রবাসী আয়েও স্বস্তি আছে। ফলে বিদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা, গ্যাস–বিদ্যুতের সংকটসহ বিভিন্ন সংকটে দেশের ব্যবসা–বাণিজ্যের গতি এখন কম। সেই সঙ্গে বিনিয়োগে খরা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকঋণের সুদের হার বেশি। এমন পরিস্থিতিতে পণ্য রপ্তানি খাত কত দিন এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারবে, সেটি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। কারণ, রপ্তানি খাতের সামনে রয়েছে নতুন ধরনের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ।
একাধিক পণ্য রপ্তানিকারক জানান, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পাল্টা শুল্কের কারণে দেশটিতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে একধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। প্রতিযোগী দেশগুলো এ শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর–কষাকষিতে এগিয়ে গেলেও বাংলাদেশ সরকারের দিক থেকে এখনো দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। এ ছাড়া সম্প্রতি ভারত কয়েকটি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করায় দেশটিতে রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন সংকট দেখা দিয়েছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, রপ্তানি কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বৈদেশিক লেনদেনেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই পণ্য রপ্তানিতে গতি ধরে রাখার বিষয়ে বাজেটে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। আগামীকাল সোমবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ টেলিভিশনের মাধ্যমে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করবেন।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই–এপ্রিল) ৪ হাজার ২১ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। এ ধারা বজায় থাকলে অর্থবছর শেষে পণ্য রপ্তানি সাড়ে চার হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
দেশের পণ্য রপ্তানি ৮০ শতাংশের বেশি তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে। ফলে তৈরি পোশাকের রপ্তানির প্রবৃদ্ধির কাছাকাছি সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে পোশাক রপ্তানিতে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তৈরি পোশাকের পর রপ্তানি আয়ের শীর্ষ চার খাত—চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হোমটেক্সটাইল এবং পাট ও পাট পণ্য। এর মধ্যে পাট ও পাটপণ্য ছাড়া বাকিগুলোর রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় আছে।
সংকটে জর্জরিত রপ্তানি খাত
দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস–বিদ্যুতের সংকটে ভুগছে শিল্পকারখানা। গত মাসে সেটি প্রকট আকার ধারণ করে। গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় টাওয়েল টেক্স কারখানায় গ্যাস থাকলে দিনে সাড়ে চার হাজার কেজি টাওয়েল উৎপাদিত হয়। গত ১৪ এপ্রিল থেকে কারখানাটিতে গ্যাস নেই। বিকল্প ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করে প্রতি ২৮ ঘণ্টায় ১ হাজার ৬০০ কেজি টাওয়েল উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির টাওয়েল রপ্তানি মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
টাওয়েল টেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম শাহাদাত হোসেন গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘জ্বালানি উপদেষ্টার ঘোষণার পর আমরা আশায় ছিলাম ২৮ মে থেকে গ্যাসের সরবরাহ বাড়বে, তবে কিছু হয়নি। অধিকাংশ সময় গ্যাসের চাপ শূন্যের কাছাকাছি।’
শুধু গ্যাস–বিদ্যুৎ নয়, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহারও সংকটে ফেলেছে রপ্তানিকারকদের। গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরি পোশাকশিল্পকে বেশ চাপের মুখে ফেলে দেয়। এমনকি সাভার, গাজীপুর, আশুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষের কারণে রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছিল।
জানতে চাইলে নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিভিন্নভাবে তৈরি পোশাকশিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধ্বংস করা হচ্ছে। ব্যাংকের অসহযোগিতা, গ্যাস–বিদ্যুতের সংকট, অযৌক্তিক আইনকানুনসহ অনেক সমস্যায় ভুগছে পোশাক কারখানা। আমরা প্রত্যাশা করি, আাগামী বাজেটে ব্যবসা–বাণিজ্য সহজ করার উদ্যোগ থাকবে।’
পাল্টা শুল্ক ও বিধিনিষেধ
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর ২ এপ্রিল ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বা রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৫৭ দেশের ওপর বিভিন্ন হারে বাড়তি পাল্টা শুল্ক বসানো হয়। ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক কার্যকরের দিন অনেকটা ‘ইউটার্ন’ করে তা তিন মাসের জন্য স্থগিতা করা হয়। যদিও সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর করা হয়। বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। তাই এ শুল্প নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এ দেশের রপ্তানিকারকেরা।
ট্রাম্পের শুল্কের রেশ না কাটতেই স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে ভারত সরকার। গত ১৭ মে আরোপ করা এ বিধিনিষেধের কারণে অনেক ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে। অন্য খাতের চেয়ে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও প্লাষ্টিক পণ্য খাতের কোম্পানিগুলোর ঝুঁকির মাত্রা বেশি, যারা সেভেন সিস্টার–খ্যাত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যে রপ্তানি করে।
ভারতের বিধিনিষেধের পর মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে শাকসবজি রপ্তানিকারকেরা চাপে পড়েছেন। বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ভারতের বিধিনিষেধের কারণে কার্গোতে তৈরি পোশাকের চাপ আরও বেড়েছে। ফলে শাকসবজি রপ্তানি আরেকটু কঠিন হয়েছে।
ব্যবসার ব্যয় কমাতে হবে
অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জকে ব্যবসার নতুন বাস্তবতা উল্লেখ করে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রথম আলোকে বলেন, ব্যবসা খরচ কমিয়ে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। জ্বালানি ব্যয় হ্রাস করার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। রপ্তানি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সহজে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যেতে পারে, সে জন্য সরকার প্রণোদনা দিতে পারে। এ ছাড়া গ্যাস কূপ অনুসন্ধানে বাজেটে পর্যাপ্ত রাখা প্রয়োজন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র প রথম ব যবস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গ্যাস অপচয়ে বছরে ক্ষতি ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি: পেট্রোবাংলা
কারিগরি ক্ষতির (সিস্টেম লস) নামে গ্যাস অপচয় বাড়ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্যাস বিতরণ লাইনে অপচয় হয়েছে গড়ে ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ গ্যাস। এতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা। আর গত অর্থবছরের (২০২৪-২৫) মার্চ পর্যন্ত অপচয় হয়েছে ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এতে আর্থিক ক্ষতি ৩ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা। এর বাইরে সঞ্চালন লাইনে অপচয় হয়েছে ২ শতাংশ।
‘দেশের জ্বালানিনিরাপত্তা: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়; গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব তথ্য উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। এতে বলা হয়, ২ শতাংশ অপচয় গ্রহণযোগ্য, তাই ওইটুকু সমন্বয় করেই আর্থিক ক্ষতির হিসাব করা হয়েছে। গ্যাসের অপচয় রোধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ছয়টি গ্যাস বিতরণ সংস্থা।
পেট্রোবাংলা বলছে, গ্যাস অপচয়ের জন্য দায়ী হচ্ছে পুরোনো, জরাজীর্ণ পাইপলাইন; গ্যাস সরবরাহ লাইনের গ্যাসস্টেশন রাইজারে লিকেজ (ছিদ্র); তৃতীয় পক্ষের উন্নয়নকাজে পাইপলাইন ছিদ্র হওয়া এবং আবাসিক খাতে প্রচুর অবৈধ সংযোগ। তবে এসব অপচয় রোধে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানায় পেট্রোবাংলা। এর মধ্যে রয়েছে গ্যাস সরবরাহব্যবস্থায় মিটারিং/ মনিটরিং ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা; লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কারিগরি ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে রাখা; অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও উচ্ছেদ কার্যক্রম জোরদার করা এবং আবাসিক গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা।
দেশের গ্যাস খাতের চিত্র তুলে ধরে সেমিনারে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। তিনি বলেন, দেশে গ্যাসের উৎপাদন কমতে কমতে ১৫ বছর আগের জায়গায় চলে গেছে। গ্যাস অনুসন্ধান জোরদারের কোনো বিকল্প নেই। গ্যাস চুরি ও অপচয় কমাতে হবে। সঞ্চালন ও বিতরণ মিলে কারিগরি ক্ষতি প্রায় ১০ শতাংশ, যা অনেক বেশি। সঞ্চালন লাইনে কারিগরি ক্ষতি কোনোভাবেই ২ শতাংশ হওয়ার কথা নয়। এটা ভালো করে দেখা উচিত।
শিল্পে নতুন সংযোগে গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান বলেন, সঞ্চালন লাইনে কারিগরি ক্ষতির বিষয়টি গভীরভাবে দেখা হচ্ছে। অবৈধ সংযোগ বন্ধে পেট্রোবাংলা তৎপর আছে, খোঁজ পেলেই বিচ্ছিন্ন করা হবে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিল্পে নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, যেহেতু তারা বেশি দাম দেবে। তাই অগ্রাধিকার বিবেচনা করে তিনটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। প্রথম ধাপের তালিকায় থাকছে, যেসব কারখানায় এখনই সংযোগ দেওয়া যাবে। এগুলো পরিদর্শন প্রায় শেষের দিকে, আগামী সপ্তাহে শেষ হয়ে যাবে।
সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহ করতে নতুন টার্মিনাল নির্মাণে অগ্রাধিকার পাচ্ছে স্থলভাগের টার্মিনাল। মহেশখালীর মাতারবাড়ী এলাকায় এটি করা হবে। এটি হলে কম দামের সময় বাড়তি এলএনজি কিনে মজুত করা যাবে। তবে এগুলো রাতারাতি করা যায় না, পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে।
জাতীয় গ্রিডে নতুন করে দিনে ৭৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হয়েছে
তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে উৎপাদন অংশীদারত্ব চুক্তি (পিএসসি) নিয়ে একটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসসি) মো. শোয়েব। তিনি বলেন, স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য তৈরি পিএসসির খসড়া জ্বালানি বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ নিয়ে একটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ৫০টি কূপ সংস্কার, উন্নয়ন ও খননের প্রকল্পে ইতিমধ্যে ১৮টির কাজ শেষ হয়েছে। জাতীয় গ্রিডে নতুন করে দিনে ৭৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হয়েছে। ৪টি কূপের কাজ চলমান। এ ছাড়া পেট্রোবাংলার বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যক্রম তুলে ধরেন সংস্থাটির পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. আবদুল মান্নান পাটওয়ারী।
সবচেয়ে বেশি বকেয়া বিদ্যুৎ খাতে
পেট্রোবাংলার আর্থিক দিক তুলে ধরেন সংস্থাটির পরিচালক (অর্থ) এ কে এম মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, গত অর্থবছরে পেট্রোবাংলার রাজস্ব আয় ৫৪ হাজার ১১৭ কোটি টাকা, এর মধ্যে অর্ধেক বকেয়া। গত মে পর্যন্ত গ্যাস বিল বকেয়া ২৭ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। এটি ধীরে ধীরে কমে আসছে। ১৩–১৫ হাজার কোটিতে বকেয়া নেমে এলে সন্তোষজনক। সবচেয়ে বেশি বকেয়া বিদ্যুৎ খাতে ১৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এরপর সার কারখানায় বকেয়া আছে ৯৬৪ কোটি টাকা। তবে বিদেশি কোনো কোম্পানির কাছে বিল বকেয়া নেই পেট্রোবাংলার। সব বিল শোধ করা হয়ে গেছে।
গত অর্থবছরে প্রতি ইউনিটে লোকসান হয়েছে ৪ টাকা
পেট্রোবাংলা বলছে, এলএনজি আমদানি শুরুর পর থেকে লোকসান শুরু হয় সংস্থাটির। প্রতিবছর সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি নিচ্ছে পেট্রোবাংলা। ২০১৮-১৯ সালে এলএনজি আমদানি শুরু হয়, ওই বছর ভর্তুকি ছিল ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এরপর এলএনজি আমদানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভর্তুকিও বাড়তে থাকে। গত অর্থবছরে তারা ভর্তুকি নিয়েছে ৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত পেট্রোবাংলা মোট ভর্তুকি নিয়েছে ৩৬ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। পেট্রোবাংলার হিসাবে গত অর্থবছরে প্রতি ইউনিট গ্যাস সরবরাহে পেট্রোবাংলার খরচ হয়েছে ২৭ টাকা ৫৩ পয়সা। তারা বিক্রি করেছে ২২ টাকা ৯৩ পয়সায়। এর মানে প্রতি ইউনিটে লোকসান হয়েছে ৪ টাকা ৬০ পয়সা।