গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে দেশের অন‍্যতম জলপ্রপাত মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ডের প্রবেশ রাস্তা দেবে গেছে। ফাটল দেখা দিয়েছে পাশের গাইডওয়ালে। পর্যটকদের সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের আহ্বান জানিয়েছে বনবিভাগ। তাদের সতর্ক করার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে লাল পতাকা ও সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে।

এর আগে, ২০১৭ সালে ভারীবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সড়কের একইস্থান কয়েক ফুট মাটির নিচে দেবে গিয়েছিল। পরে কর্তৃপক্ষ তা মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করে।

স্থানীয়রা জানান, অব্যবস্থাপনা ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে জলপ্রপাতস্থলে যাওয়ার রাস্তাটি দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে ফের রাস্তাটি দেবে যেতে পারে। ফলে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনার শঙ্কা বাড়ছে।

আরো পড়ুন:

দর্শণার্থীদের পদভারে মুখর রাঙামাটি

কুয়াকাটায় কাঙ্ক্ষিত পর্যটক নেই

সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল নামে। এতে দেশের অন্যতম মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্কে যাওয়ার রাস্তার প্রায় ৩৫ মিটার স্থান নিচের দিকে দেবে যায়। রাস্তা ছাড়াও পাশের গাইডওয়ালেও ফাটল দেখা দেয়। স্থানীয় বনবিভাগ রাস্তার দেবে যাওয়া অংশে ইতিমধ্যে বালুর বস্তা ফেলে তা মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করেছে। 

মাধবকুণ্ড ইকোপার্কের পর্যটন রেস্তোরার সামনের রাস্তার একাংশ দেবে গেছে। গাইডওয়ালও ফেটে গেছে। বেকে গেছে রাস্তার পাশের রেলিং। বনবিভাগ রাস্তাটির দেবে যাওয়া অংশ মেরামত করে সেখানে সতর্কতামূলকভাবে লাল পতাকা টাঙিয়েছে। জলপ্রপাতে নামার সিঁড়ির নিচের মাটি অল্প অল্প করে সরে যাচ্ছে। 

সিরাজগঞ্জ থেকে মাধবকুণ্ডে বেড়াতে আসা শিক্ষার্থী আব্দুল আলিম ও আছের উদ্দিন জানান, তারা সবাই শিক্ষার্থী। এখানে তারা প্রথমবার ঘুরতে এসেছেন। মাধবকুণ্ডের জলপ্রপাত ও প্রকৃতি খুবই মনোমুগ্ধকর। জলপ্রপাতের রাস্তা দেবে যাওয়ার বিষয়টি তারা জানতেন না। এখানে এসে জানতে পেরেছেন। অনেক দূর থেকে আসায় ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হয়েছেন।

স্থানীয় ক্যামেরাম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, “কয়েকদিন আগে ভারী বৃষ্টি ও ঢলের কারণে জলপ্রপাতের যাওয়ার রাস্তা দেবে যায়। বর্তমানে এটি মেরামত করা হয়েছে।” 

মাধবকুণ্ড পর্যটন পুলিশের এসআই সুমন সিংহ বলেন, “বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে আমরা পর্যটকের নিরাপত্তায় কাজ করছি। ভারী বর্ষণে রাস্তা কিছুটা দেবে গেলেও কোনো অনাকাঙ্খিত কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা সবসময় সতর্ক রয়েছি।”

বন বিভাগের বড়লেখা রেঞ্জের দায়িত্বে থাকা সহকারী বন সংরক্ষক মো.

রেজাউল মৃধা বলেন, “চারদিনের ভারীবর্ষণ আর প্রবল পাহাড়ি ঢলে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্কে যাওয়ার রাস্তাটির প্রায় ৩৫ মিটার স্থান দেবে যায়। এর আগেও একইস্থান দেবে গিয়েছিল। ইতোমধ্যে দেবে যাওয়া স্থানে বালুর বস্তা ফেলে পর্যটক চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে।” 

তিনি জানান, এ বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে জানিয়েছেন। তিনি ঈদের ছুটিতে আগত পর্যটকদের সতর্কতার সঙ্গে চলাচল ও সৌন্দর্য উপভোগের আহ্বান জানিয়েছেন।

ঢাকা/আজিজ/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর যটক ম ধবক ণ ড সতর ক

এছাড়াও পড়ুন:

পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটি

ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১০ দিনের লম্বা ছুটি পেয়েছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। ছুটি উপভোগ করতে এ সময় অনেকেই বেড়ানোর পরিকল্পনা করেন। পর্যটকদের সেই পরিকল্পনা সার্থক এবং আনন্দময় করতে সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ করেছেন রাঙামাটির পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তাদের ধারনা, টানা ছুটিতে পর্যটকদের আগমন বাড়বে। 

পাহাড় ও হ্রদঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙামাটি বরাবরই পছন্দের তালিকায় থাকে পর্যটকদের। ভ্রমণপিপাসুরা যান্ত্রিক শহরের ক্লান্তি দূর করতে এখানে ছুটে আসেন। জেলার সাজেক ভ্যালি, ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই হ্রদ, পলওয়েল পার্ক, আরণ্যক ও সুবলং ঝরনাসহ মনোমুগ্ধকর সব পর্যটন স্পটগুলো মুখরিত হয়ে উঠবে পর্যটদের উপস্থিতিতে। 

টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঝরনাগুলো তাদের যৌবন ফিরে পেয়েছে। বর্তমানে যেসব পর্যটক রাঙামাটিতে অবস্থান করছেন তাদের অনেকেই ঝরনা দেখতে যাচ্ছেন।

আরো পড়ুন:

তিন শর্তে খুলল রুমা ও থানচির পর্যটন

এভারেস্ট দিবস
এ দেশে যে প্রশ্ন শুনতে হয় ‘এভারেস্টে উঠলে কী হয়?’ 

রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে ঝুলন্ত সেতু। ইতোমধ্যে ঝুলন্ত সেতু এবং এর আশপাশ রঙ করেছে কর্তৃপক্ষ। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যারা কাপ্তাই হ্রদে যাবেন তাদের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে ট্যুরিস্ট বোট ব্যবসায়ীরা।

রাঙামাটি পর্যটন নৌযান ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, “পর্যটক বরণে আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ। বোটগুলো সংস্কার, রঙ করাসহ সব কাজ শেষ। আমরা এখন পর্যটকদের জন্য অপেক্ষা করছি।”

জেলার আরেক অন্যতম বিনোদন স্পট পলওয়েল পার্কও প্রস্তত পর্যটক বরণে। পুরো পার্ক নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে পার্কের একমাত্র ঝুলন্ত সেতুটিও। 

পার্কটির দায়িত্বে থাকা মিজানুর রহমান বলেন, “আমাদের ১১টি কটেজ আছে। যেখানে ৩৬ জন থাকতে পারেন। ৮ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত আমাদের কটেজগুলো শতভাগ বুকিং রয়েছে।”

হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুফ বলেন, “টানা ছুটির কারণে এবার রাঙামাটিতে ভালো পর্যটকের সমাগম হবে। এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ভালো। সবমিলে এবারের ছুটিতে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আসবেন বলে আশা করছি।” 

তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে হোটেলগুলোর ৮০ ভাগ পর্যন্ত অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে।”

পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, “আমাদের হোটেল-মোটেল মিলে ৮৭টি রুমে ১৭০ জন থাকতে পারেন। ৯ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ৮০ ভাগ রুম অগ্রিম বুকিং আছে।”

ঢাকা/শংকর/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঈদের ছুটি কাটাতে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ভিড় বাড়ছে
  • দর্শণার্থীদের পদভারে মুখর রাঙামাটি
  • খাগড়াছড়িতে হোটেল-মোটেল খালি, ভিড় রেস্তোরাঁ ও পর্যটনকেন্দ্রে
  • নিস্তব্ধ পাহাড়ের পাদদেশে মুখরিত টাঙ্গুয়ার হাওর
  • কাঙ্ক্ষিত পর্যটক নেই কুয়াকাটায়
  • পাহাড়, নদী ও লেকের অপার সৌন্দর্য নিয়ে অপেক্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওর
  • পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটি
  • ঈদের লম্বা ছুটিতে পর্যটক টানতে ছাড়ের প্রতিযোগিতা 
  • তিন শর্তে খুললো রুমা ও থানচি