এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় ম্যাচে মঙ্গলবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর। যে ম্যাচকে ঘিরে আলাদা উত্তাপ, উন্মাদনা তৈরি হয়েছে।

এই ম্যাচে জয় ভিন্ন অন্য কিছু চিন্তা না করছে বাংলাদেশ। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুরের থেকে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট পেতেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

সোমবার (৯ জুন)  দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জামাল বলেন, “আমরা যদি এক গোল আগে দিতে পারি ভালো হবে। এটাও ঠিক আমাদের কিন্তু ক্লিনশিটও ধরে রাখতে হবে। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তবে ফুটবলে জয়টাই মুখ্য। আপনি তিন গোলে জেতেন বা এক গোলে দিনশেষে পয়েন্ট পাওয়াই সবকিছু। আমাদেরও লক্ষ্য, তিন পয়েন্ট তুলে নেওয়া।”

আরো পড়ুন:

পা ভাঙতে হলে ভাঙুক, আমাকে ট্রফি জিততে হবে: রোনালদো

ধ্বংসস্তূপে শিরোপার ফুল ফোটালেন আলকারাজ

মূল ম্যাচের আগে ৪ জুন ভুটানের সঙ্গে জয় দিয়ে প্রস্তুতি সেরেছে বাংলাদেশ। এছাড়া নিয়মিত অনুশীলনেও প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দল। নিজেদের প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্ট বাংলাদেশের কোচ কাবরেরা, “আমাদের প্রস্তুতিটা ভালো হয়েছে। যদিও কম সময় পেয়েছি, তবু মন্দ নয়। আমরা ভুটানের সঙ্গে একটা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি, যেটা আমাদের মনোবল বাড়িয়েছে। এখন চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামার অপেক্ষা। সবাই সেই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।”

নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করায় এক পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৭ সালের এএফসি এশিয়ান কাপে অংশ নিতে বাংলাদেশকে নিজেদের গ্রুপে সেরা হতে হবে। বাংলাদেশসহ বাকি তিন দল হংকং, ভারত ও সিঙ্গাপুরের পয়েন্ট সমান এক করে।

এখন থেকে প্রতিটি ম্যাচই বাংলাদেশের কাছে ফাইনাল বলেছেন কাবরেরা, “আমার বিশ্বাস, এটা খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হতে যাচ্ছে। সিঙ্গাপুরও চায় তিন পয়েন্ট নিয়ে বাড়ি ফিরতে। প্রতিটি ম্যাচই এখন ফাইনালের মতো। চার দলের লক্ষ্য একটাই-মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়া। সেজন্য প্রতিটি ম্যাচই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।”

১০ বছর পর বাংলাদেশে এসেছে সিঙ্গাপুর ফুটবল দল। সবশেষ ২০১৫ সালে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশে এসেছিল তারা। সেবারের সফরে জয়ের স্বাদ পেয়েছিল অতিথিরা। ম্যাচ জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। সেই সুখ স্মৃতি সাথে থাকলেও বাংলাদেশকে হালকাভাবে নিচ্ছে না সিঙ্গাপুর।

সিঙ্গাপুর কোচ সুতোমু ওগুরা বলেছেন, “এই ম্যাচ ঘিরে সবার মনোযোগ দেখে আমি অনুভব করতে পারছি, বাংলাদেশ ভালো দল। আমাদের প্রস্তুতিও ভালো। কেবল আগামীকালের ম্যাচ নয়, এশিয়ান কাপের বাছাই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আগামীকালের ম্যাচে আপাতত আমাদের মূল মনোযোগ। বাংলাদেশের প্রতি আমাদের কোনো অশ্রদ্ধা নেই। তবে তাদের নিয়ে ভীত হওয়ার দরকার নেই, কেননা, আমরাও চ্যালেঞ্জিং দল।”

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল প রস ত ত আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ