ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অঞ্জলি লহ মোর’ নামের ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো প্রশাসনিক ভবন, বিজ্ঞান ও কলাভবনের সামনের পুকুরপাড়ে স্থাপিত এ ভাস্কর্যের বেশির ভাগ অংশ গত মঙ্গলবার ভেঙে ফেলা হয়। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, প্রাক্তন উপাচার্য সৌমিত্র শেখর দায়িত্বে থাকার সময় প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের কাজ হয়। সেই সময় নির্মাণ করা হয় ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য। এর নির্মাতা ভাস্কর মনীন্দ্র পাল। প্রকল্পের মূল নকশায় না থাকলেও প্রাক্তন উপাচার্যের ব্যক্তিগত ইচ্ছায় ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে বর্তমান প্রশাসন।
ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য সরকার বলেন, ভাস্কর্যে যদি আর একটা আঘাত করা হয় এবং তা পুনর্নির্মাণ না করা হয়, তাহলে আমরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, ভাস্কর্যটি আমাদের মূল নকশায় ছিল না। প্রাক্তন উপাচার্যের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়েই এটি করা হয়েছিল। ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর এটি ভাঙার জন্য ছাত্রদের পক্ষ থেকে চাপ ছিল। পরে নতুন প্রশাসনের নির্দেশেই ভাস্কর্য ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী বলেন, ভাস্কর্যটি যতটুকু ভাঙা হয়েছে, আপাতত এর বেশি ভাঙা হবে না। আগামী ২২ জুনের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলতে চেয়েছিল। খুব মজবুত থাকায় তা ভাঙতে পারেনি। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ ব শ বব দ য উপ চ র য ভ স কর য
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে হত্যা মামলার বাদীকে হুমকি, স্বজনদের মানববন্ধন
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মাকসুদুল হাসান জনি হত্যা মামলার বাদী ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে নিহতের পিতা শুক্কর আলী ও স্ত্রী ইভা আক্তার এ অভিযোগ করেন। এসময় মামলার পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান তারা।
নিহতের স্ত্রী ইভা আক্তার বলেন, আমাকে যারা অল্প বয়সে বিধবা ও ৩ বছরের প্রতিবন্ধী ছেলে জুনায়েদকে এতিম করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই। আসামিরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে এখন আবার হুমকিও দিচ্ছে।
মামলার বাদী নিহতের পিতা শুক্কুর আলী বলেন, আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। মামলার এজাহার নামীয় ৩ জন আসামি গ্রেফতার হলেও মূল পরিকল্পনাকারী মহাসিন ভূঁইয়াসহ ৪ জন এখনো গ্রেফতার হয়নি।
তারা পলাতক থেকে তাদের লোকজনের মাধ্যমে মিমাংসা করে মামলা তুলে দেয়ার জন্য আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে। এতে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।
নিহতের মা মাজেদা বেগম বলেন, আমার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর আমি ও ছেলের বউ ইভা তার সন্ধান করতে নূরুল আনোয়ারের নির্মাণাধীন তাকওয়া ভবনের সামনে গেলে নিরাপত্তারক্ষী আলমগীর আমাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি।
অথচ সে জানতো আমার ছেলেকে ওই ভবনের একটি কক্ষে হত্যা করেছে। লাশ ভনের লিফটের হাউজের নর্দমা পানিতে রয়েছে। আমি এ পাষাণদের ফাঁসি চাই। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন নিহতের ভাই জুয়েল, ফাহিম ও বোন সুমাইয়া।
মানববন্ধনে নিহতের স্বজন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আফজাল হোসেন, ফজলুল হক মাদবর, লিটন, মাসুদ, জসিম, আব্দুল মজিদ, সুমন, শাহিন, আসলাম ও বাধনসহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, নিখোঁজের ৩ দিন পর গত মাসের ১৮ জুলাই দুপুরে নিমাইকাশারী এলাকার নির্মাণাধীন তাকওয়া ভবনের লিফটের জন্য রাখা ফাঁকা জায়গায় জমে থাকা নর্দমা পানি থেকে জনির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ১৯ তারিখে নিহতের পিতা শুক্কুর আলী বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
মামলার এজাহার নামীয় আসামি আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন ও আকাশ হোসেনকে গ্রেফতার করে র্যাব ও পুলিশ।
গ্রেফতারের পর তারা পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন বলে নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম। গ্রেফতাররা বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে।