ঢাকার ধানমন্ডি থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় দিয়েছিলেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে ডিবি পুলিশ তাকে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। 

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম 

সম্প্রতি তার গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি দাবি করেছে, ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ তিনি।

খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে বয়স অনুযায়ী অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি হিসেবে তার সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত রায় ছিল সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়। এই রায়ের ফলে দেশে আর কোনো নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়নি।

বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১১ সালে এই রায় ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থি। এরপর থেকে নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই সরকারে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করছে। বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই রায়ের মধ্য দিয়েই দেশে একতরফা নির্বাচন ও গণতন্ত্রহীনতার ভিত্তি তৈরি হয়।

২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে তিনি আইন সংস্কার সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব ও গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময় আইনি সেমিনার, বক্তৃতা এবং পরামর্শমূলক কাজে অংশ নিয়েছেন তিনি।

আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী ও মহলগুলো তাকে ‘সংবিধান রক্ষার সাহসী রূপকার’ হিসেবে অভিহিত করলেও, বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মতে তিনি ‘বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণের পথপ্রদর্শক’। 

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বলেছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে তিনি দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন।’

ঢাকা/এমআর/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ ব চ রপত

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রাখতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট

বাগেরহাটের চারটি নির্বাচনী আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করা সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেট সংশ্লিষ্ট আইনের লঙ্ঘন দাবি করে কেন তা আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগের মতো বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রুল দেন।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারা গড়ে তোলে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি এবং হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেন।

নির্বাচন কমিশন ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। এতে চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে বাগেরহাটকে তিন আসনে ভাগ করা হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গতকাল সোমবার রিটটি করা হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কাজী সামান্তা এনাম ও রাজিয়া সুলতানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জামিলা মমতাজ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী, বাগেরহাট সদর, চিতলমারী ও মোল্লাহাট নিয়ে বাগেরহাট-১; ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা নিয়ে বাগেরহাট-২ এবং কচুয়া, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ গঠিত হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৭২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন ছিল। নির্বাচন কমিশন ৪ সেপ্টেম্বর গেজেটের মাধ্যমে একটি কমিয়ে তিনটি সংসদীয় আসন করে। এটি সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ এবং জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইনের ৬(২) ধারার পরিপন্থী। এ কারণে রিটটি করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত রুল দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের সচিবসহ বিবাদীদের ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুনবাগেরহাটে ৪টি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে হরতাল চলছে১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘বাগেরহাটে ৪টি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে হরতাল চলছে’ শিরোনামে ১০ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোতে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে বাগেরহাট প্রেসক্লাব, বাগেরহাট জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াতে ইসলামী, বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতি, সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন, বাগেরহাট জেলা ট্রাক ট্যাংকলরি কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে বাগেরহাট–১ আসন থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মো. শেখ মাসুদ রানা ওই রিট করেন।

আরও পড়ুনচারটি আসন বহালের দাবিতে বাগেরহাটে নির্বাচন কার্যালয় ঘেরাও, উচ্চ আদালতে দুটি রিট৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ভোটারদের আস্থা নিশ্চিত করা বিএনপির দায়িত্ব’
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • ভাঙ্গা থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়া প্রশ্নে রুল
  • বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রাখতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ