ডাকেট-ক্রাউলির তাণ্ডবে ছায়ার মতো পিছিয়ে ভারত
Published: 25th, July 2025 GMT
ম্যানচেস্টারের চতুর্থ টেস্টে দ্বিতীয় দিনটা একেবারেই ইংল্যান্ডের নামে লিখে ফেলা যায়। বল হাতে শুরুটা করেছিলেন স্টোকস, শেষটাও তিনিই করেছেন। আর তারপর ব্যাটে এসে ইংলিশ ওপেনাররা ম্যাচে চালকের আসনে বসে পড়েছেন।
দিনের শুরুতে ভারত ব্যাটিংয়ে ছিল। যদিও লাঞ্চের পরে যেন দিকভ্রান্ত দল হয়ে পড়ে তারা। জোফরা আর্চারের ধারালো স্পেল প্রথমে চাপে ফেলে। তারপর অধিনায়ক বেন স্টোকস যেন তলোয়ার চালালেন। এক ওভারেই ফিরিয়ে দেন ওয়াশিংটন সুন্দর ও অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা অংশুল কম্বোজকে। স্টোকসের উইকেট সংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচে। আর ভারতের রান আটকে যায় ৩৫৮–এ। ঋভষ পন্ত একপ্রান্তে লড়াই চালিয়ে হাফসেঞ্চুরি করলেও শেষরক্ষা হয়নি।
এরপর শুরু হয় ইংল্যান্ডের আগ্রাসী জবাব। ব্যাটিংয়ে নামে জ্যাক ক্রাউলি ও বেন ডাকেট—দুজনেই যেন মাঠে নামেন প্রতিপক্ষকে বার্তা দিতে। শুরুতে কয়েকটা বল মিস করলেও তারা দ্রুত খাপ খাইয়ে নিয়ে কাঁপিয়ে তোলেন ভারতীয় বোলিং লাইনআপ। ডাকেট ছিলেন আরও আক্রমণাত্মক, প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারতীয় বোলারদের চাপে ফেলতে শুরু করেন। অন্যদিকে ক্রাউলি ম্যাচ পড়ার মুন্সিয়ানা দেখিয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন।
আরো পড়ুন:
আহত পন্তের লড়াকু ফিফটির পর ৩৫৮ রানে অলআউট ভারত
পায়ের পাতায় চিড় নিয়ে দলের প্রয়োজনে ব্যাট হাতে ফিরলেন পন্ত
জাসপ্রিত বুমরাকে শুরুতেই নিষ্প্রভ দেখা গেছে। নতুন বল হাতে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি। অংশুল কম্বোজের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। নতুন বলে ছিল না ধার। ১১তম ওভারেই ইংল্যান্ড স্কোরবোর্ডে ৫০ রান তুলে নেয়, কোনো উইকেট না হারিয়ে।
শেষ পর্যন্ত ৫.
বিরতির পর এসেও তাণ্ডব চালাতে থাকেন তারা। দুজনেই তুলে নেন ফিফটি। এগিয়ে যেতে থাকেন সেঞ্চুরির দিকে। ১৬৬ রানের মাথায় রবীন্দ্র জাদেজা ক্রাউলিকে ফিরিয়ে ভাঙেন এই জুটি। ক্রাউলি ১৩টি চার ও ১ ছক্কায় ৮৪ রান করে যান। ডাকেট অবশ্য সেঞ্চুরির খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। ১৩ চারে ৯৪ রানে যখন তিনি অবস্থান করছিলেন তখন তার উইকেটটি নেন অভিষিক্ত কম্বোজ। ইংল্যান্ডের দলীয় রান তখন ১৯৭।
এরপর অলি পোপ ও জো রুট মিলে দিন শেষ করে আসেন। ৪৬ ওভারে ২ উইকেটে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ২২৫। ভারতের চেয়ে এখনো তারা পিছিয়ে ১৩৩ রানে। পোপ ২০ ও রুট ১১ রানে অপরাজিত আছেন। তারা দুজন আজ শুক্রবার বিকেলে তৃতীয় দিনে ব্যাট করতে নামবেন।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র উল উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।