অডিশনে নগ্ন হতে বলা হয় জনি লিভারের মেয়েকে
Published: 25th, July 2025 GMT
অভিনেতা-কমেডিয়ান জনি লিভারের মেয়ে জেমি লিভার সম্প্রতি এক ভয়ঙ্কর ‘কাস্টিং কাউচ’-এর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। একটি আন্তর্জাতিক প্রজেক্টের অডিশনের নামে তাঁকে ভিডিও কলে নগ্ন হতে বলা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন জেমি।
ভারতীয় গণমাধ্যম জুমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেমি বলেন, ‘আমি খুবই রোমাঞ্চিত ছিলাম; কারণ, এটা ছিল একটা আন্তর্জাতিক প্রজেক্ট। তারা বলেছিল ভিডিও কলে অডিশন হবে। স্ক্রিপ্ট দেয়নি, বলেছিল ইম্প্রোভাইজ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে আমাকে একটা লিঙ্ক পাঠানো হয়, আমি যুক্ত হই। বলা হয় পরিচালক সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলবেন। ভিডিও বন্ধ রেখেই এক ব্যক্তি নিজেকে পরিচালক বলে পরিচয় দেন। বলেন, তিনি ট্র্যাভেল করছেন, তাই ভিডিও অন করতে পারছেন না। এরপর বলেন, “এটা একটি আন্তর্জাতিক সিনেমা, আপনি চরিত্রের দিক থেকে একদম পারফেক্ট, কিন্তু কিছু টেস্ট করা প্রয়োজন।”’
‘ভাবুন, সামনে ৫০ বছরের একজন লোক বসে আছেন’
জেমি বলেন, ‘তিনি বলেন চরিত্রটা বোল্ড, কোনো কমেডি থাকবে না। আমিও নতুন কিছু এক্সপ্লোর করতে আগ্রহী ছিলাম। আমি জানতে চাইলাম, কী করতে হবে। তিনি বলেন, “ভাবুন আপনার সামনে ৫০ বছরের একজন ব্যক্তি বসে আছেন, আপনি তাঁকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। শেষ পর্যন্ত আপনাদের মধ্যে একটা ঘনিষ্ঠ দৃশ্য রয়েছে।”
আমি তখন বলি, স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী করতে চাই। তিনি বলেন, কোনো স্ক্রিপ্ট নেই, পুরোটা ইম্প্রোভাইজড। আপনাকে যদি নগ্ন হতে হয়, কিছু বলতে হয় বা কোনো কিছু করতে হয়, আপনি করতে পারেন।” আমি তখনও স্বস্তি বোধ করছিলাম না। তবু তিনি বারবার বলছিলেন, “এটা একটা বড় প্রজেক্ট, আমরা আপনাকেই কাস্ট করতে চাই।” আমি তখন স্পষ্ট জানিয়ে দিই—আপনারা যদি ভিডিও কলে নগ্ন হতে বলেন, আমি মোটেই স্বাচ্ছন্দ্য নই। এসবের কোনো কথা আমাকে আগে বলা হয়নি। এরপরই আমি ভিডিও বন্ধ করে দিই। তখনই বুঝি, পুরো ব্যাপারটাই একটা বড় প্রতারণা হতে পারে।’
জেমি লিভার। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লাইলীকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান আনোয়ার
বরগুনার বিষখালী নদীর পাড়ে বেড়ে উঠেছেন লাইলী বেগম। বাবার মৃত্যুর পর ভাইয়েরা অসুস্থ মায়ের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান, তখন কন্যা হয়েও লাইলী সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। অভাব, ক্ষুধা আর সমাজের অবহেলা তার নিত্যসঙ্গী হয়। তারপরও থেমে যাননি লাইলী।
জীবনের চাকা ঘুরাতে, মাছ ধরা থেকে বর্গাচাষ—সবই করেছেন লাইলী। গত ২১ বছর ধরে নদী ও সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বরগুনা জেলার সরকারিভাবে নিবন্ধিত একমাত্র নারী জেলে তিনি। এই লাইলীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ‘উত্তরের বৈঠা’। এটি নির্মাণ করেছেন আনোয়ার হোসেন।
পরিচালক আনোয়ার হোসেন
আরো পড়ুন:
জসীমের কবরে রাতুলকে সমাহিত করে দুই ভাইয়ের আবেগঘন পোস্ট
নীনার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে কী বলেছিলেন ক্রিকেটার ভিভ?
এ নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেন পরিচালক আনোয়ার হোসেন। তরুণ এই নির্মাতা বলেন, “এই চলচ্চিত্র শুধু একজন নারী জেলের গল্প নয়, এটি একজন মানুষের বেঁচে থাকার অদম্য চেষ্টা, একাকিত্বে গড়ে ওঠা সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি। লাইলী বেগম যখন নদীতে জাল ছুঁড়ে দেন, সেই মুহূর্তে তিনি শুধু মাছ খোঁজেন না—তিনি খুঁজে ফেরেন নিজের অবস্থান, নিজের সম্মান, আর অস্তিত্বের উত্তর।”
লাইলীর চোখ দিয়ে বাস্তবতা দেখাতে চেয়েছেন নির্মাতা। তার ভাষায়, “এই ফিল্মে আমি কোনো কৃত্রিম কণ্ঠ বা নাটকীয় ভাষা ব্যবহার করিনি। কারণ আমি চেয়েছি দর্শক যেন লাইলীর চোখ দিয়েই এই বাস্তবতা দেখেন। তার নীরবতা, তার কথাবার্তা, তার দৃষ্টি—সবই যেন একেকটি দৃশ্যপট হয়ে ওঠে। একজন নির্মাতা হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিল শুধু একটি ফ্রেম তৈরি করে দেওয়া, বাকিটা বলে গেছেন লাইলী নিজেই—তার জীবনযাত্রা, নদী এবং অব্যক্ত যন্ত্রণা দিয়ে।”
‘লাইলী’-কে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান পরিচালক। তা জানিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই ফিল্মটি তাদের জন্য, যারা নিঃশব্দে লড়াই করেন এবং যারা কখনো আলোয় আসেন না। এখানে আমি সংক্ষিপ্ত আকারে প্রামাণ্য চিত্রটি তৈরি করেছি, পূর্ণদৈর্ঘ্য আকারে তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে। আপনাদের সহযোগিতা ও আগ্রহ আমাকে অনুপ্রাণিত করবে। এই জীবন সংগ্রামের কথা বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চাই।”
সমাজের বাঁকা চোখ উপেক্ষা করে লাইলী প্রমাণ করেছেন, নারীর স্থান কেবল ঘরে নয়, সাহস আর সংগ্রামেও। লাইলী কেবল একজন নারী জেলে নন, এক অনুপ্রেরণার নাম। নারী চাইলে সব পারে—লাইলী তা নিঃশব্দে প্রমাণ করেছেন বলেও মনে করেন নির্মাতা।
ঢাকা/শান্ত