ফেনী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত, আহত ১
Published: 25th, July 2025 GMT
ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বাসপদুয়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মিল্লাত হোসেন (২১) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আফছার উদ্দিন (৩১) নামে অপর একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত ১২টার দিকে উপজেলার গুথুমা বিওপির আওতাধীন ২১৬৪/৩-এস নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মিল্লাত হোসেন বাসপদুয়া গ্রামের ইউছুফ মিয়ার ছেলে এবং আহত আফছার উদ্দিন একই এলাকার মৃত এয়ার আহমদের সন্তান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতের আঁধারে সীমান্ত পিলার অতিক্রম করে তারা ভারতের অভ্যন্তরে তারকাঁটার কাছে পৌঁছালে বিএসএফ সদস্যরা তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে দুজনই গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিল্লাত হোসেনের মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে ৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, “বাসপদুয়া সীমান্ত এলাকা চোরাকারবারি প্রবণ। ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক হতাহত হওয়ার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে মৌখিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে।”
বিএসএফ সূত্রের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারতের একটি সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি দল সীমান্ত অতিক্রমকালে বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে তাড়া করে। কিন্তু তারা পালানোর পরিবর্তে উল্টো বিএসএফ সদস্যদের দিকে এগিয়ে গেলে বিএসএফ গুলি চালায়। এতে বাংলাদেশের দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে একজন নিহত ও একজন আহত হয়েছে। তাদের সঙ্গে আরও একজন ছিল বলে খবর পেয়েছি। সে আত্মগোপনে আছে। যতদূর জেনেছি, তাদের অংশেও (ভারতে) হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।”
বিজিবি অধিনায়ক আরও বলেন, “সীমান্তে মাদক ও চোরাচালান বন্ধে আমরা নিয়মিত নজরদারি এবং সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।”
ঢাকা/সাহাব উদ্দিন/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভাসানীরা না থাকলে শেখ মুজিব কখনো তৈরি হতেন না: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “ভাসানীরা না থাকলে শেখ মুজিব কখনো তৈরি হতে পারতেন না। বাংলাদেশে শুধু একজন জাতির পিতা নন, অনেক জাতির পিতা রয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম মওলানা ভাসানী।”
তিনি বলেন, “মওলানা ভাসানী কৃষক ও শ্রমিকদের জন্য লড়াই করেছিলেন। তিনি গণমানুষের জন্য লড়াই করেছিলেন। মওলানা ভাসানীর আদর্শকে ধারণ করে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি।”
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থান না হলে নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না: নাহিদ
‘পারলে শেখ হাসিনাকে পুশইন করুন’, ভারতের উদ্দেশে নাহিদ
নাহিদ বলেন, “আমরা এই সমাবেশে মওলানা ভাসানীকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে চাইা। মওলানা ভাসানীকে ইতিহাসে স্মরণ করা হয় না। ভাসানীর মতো মহান রাজনৈতিক পুরুষ, বাংলাদেশের স্থপতি থাকা সত্ত্বেও শুধু একজনকে জাতির পিতা ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৫৪ বছর একজন ব্যক্তিকে পূজা করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “মওলানা ভাসানী শুধু বাংলাদেশ নয়, উমহাদেশের রাজনৈতিক পুরুষ ছিলেন। তার রাজনীতি শুরু হয়েছিল আসামে। সেই আসামে তিনি বাঙালি মুসলিম কৃষকদের অধিকার ও তাদের ভূমির অধিকারের জন্য লড়াই করেছিলেন। সেই লড়াই এখন পর্যন্ত আসামের বাঙালি মুসলমান ও হিন্দুদের লড়তে হয়। সেখানে তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে পরিচিত হতে হয়।”
তিনি আরো বলেন, “মওলানা ভাসানী প্রথম ব্যক্তি যিনি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীদের বিদায় ঘোষণা করেছিলেন কাগমারী আন্দোলনের মাধ্যমে। মওলানা ভাসানী হচ্ছেন, এমন রাজনৈতিক পুরুষ যিনি স্বাধীনতার পরে বলেছিলেন ‘আমার পিঞ্জির ভেঙেছি, দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়, দিল্লির গোলামী করার জন্য নয়’।”
টাঙ্গাইল শাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নামে জিআই পণ্যের স্বীকৃতির কড়া সমালোচনা করে এনসিপির এই নেতা বলেন, “তাঁত শিল্পকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে, দেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে আমরা কৃষকদের সংগঠিত করতে চাই।”
সমাবেশে এনসিপির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক আজাদ খান ভাসানী , টাঙ্গাইল জেলার মুখ্য সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান রাসেলসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, এনসিপির নেতারা টাঙ্গাইল সার্কিট হাউজের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। তারা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশস্থল শহীদ মিনার চত্বরে যান।
এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে টাঙ্গাইল শহরে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ