আত্মপ্রচারক ব্যাঙ
মোটেও আতঙ্কিত নই বেহায়াপনায়
অথবা অন্তর্নিহিত শব দর্শনে
পাখি নই, ব্যাঙও নই
নই কোনো শব্দহীন মূক ও
বধির গণতান্ত্রিক নাগরিক
নিজের দু পয়সা বুঝে নেওয়ার
পর থেকে গজ ফিতা মেপে
সিস্টেমকে কাঁপিয়ে বা কেঁপে
অহোরাত্র চিৎকার করে সার—
তাতে কী, নস্যির কৌটার
দু চিমটি জ্ঞান শুঁকে শুঁকে
জগৎ নাড়ানো হাঁচির শব্দে
কাঁপন জাগিয়ে তুলে বুকে
যাবতীয় যত এস্টাবলিশমেন্ট
ভেঙেচুরে তাই আজ আমার
জানার মনুমেন্টই, জাতির সমগ্র
পশ্চাৎপদতার চেয়েও অশ্লীল।
ধর্ষকামী রাষ্ট্র ও একটি সুচিন্তিত স্তনআমার ক্লান্ত নিশ্বাস গুঁজে রেখে এসেছি
একটি সুচিন্তিত স্তনের গৈরিক অলংকরণে
এখন যেখানে আমার অবিরাম ছুটে চলা
সেখানে একদণ্ডও বিশ্রাম নেবার অবকাশ নেই
কেবলই রমণ, ধর্ষকাম আর বেপথু নিঃসরণ
আবার সমকালীন বিষণ্নতায় ডুবে যাওয়ার
অভিনয়ে ততটাও পটু নই, যতটা হলে
একটা থেঁতলে যাওয়া বিড়ালের লাশ দেখেও
না–দেখার ভান করে দাঁত বসিয়ে দেওয়া যায়
পার্শ্ববর্তীনীর সুডৌল অন্ধকারে, তাই
এখনো ক্লান্ত হই, নুয়ে পড়ি, প্রশ্নহীনতার
উত্তর খুঁজতে খুঁজতে ঢুকে পড়ি নাগরিকের
আয়ু চুরি করতে করতে উত্থিত রাষ্ট্রের
অশ্লীল লিঙ্গের ভিতরে, সেখানে
আলো নেই, অন্ধকার নেই
নারী নেই, ঈশ্বর নেই
শব্দ নেই, নীরবতাও নেই
সেই অনিকেত শূন্যতার হাত থেকে যদি
পালিয়ে বাঁচাও যায়, বাকি সময়টুকু
আত্মহননের উদগ্র আহ্বান উপেক্ষা করে
কেবল এক পঙ্কিলতা থেকে আরেক
পঙ্কিলতা অভিমুখে যাত্রা ছাড়া
আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।
তাবোল আবোলজল ভরা বাঁশ
দ্বিতল আকাশ
সিঁড়িতে মাছেরা করে
গঞ্জিকা চাষ
খলবলে দই
টক টক কই
তিন পেগ মেরে আঁকো
কবিতার বই
অভিমান হত
বইখাতা যত
লেমিনেট করে ঢাকো
দগদগে ক্ষত
সুজলা কবর
সইছে না তর
ছেড়ে যাব অচিরেই
মৃতের শহর।
নির্বাক স্বাধীনতাআমি সত্যিই স্বপ্ন দেখতাম একদিন
বাক্স্বাধীনতার, মন খুলে কথা বলব
অনেক কথা,
যা আমি বুঝি তা জানাব আপনাদের
যা বুঝি না তা–ও, এইটুকুই ছোট্ট চাওয়া
যুগের পর যুগ চলে যায়, রাজার পর বাদশা,
আমার ছোট খায়েশ মনের মধ্যেই পড়ে থাকে
যা বোঝাতে চাই তা বলতে পারি না,
যেটুকু বোঝাতে চাই না, তা আরও বেশি
অবশেষে ভাবি, একদিন সীমানা পার হব,
সীমানার ঐপারেই নাকি বাক্স্বাধীনতা
ঐখানে হরিণেরা গুলতানি করে বাঘেদের সাথে
সাপ আর বেজি করে বিয়ারের মগে ঠোকাঠুকি
মদ খাওয়ার স্বাধীনতা দুই দিন পরে হোক
সমস্যা নাই,
শুধু পেটের ভেতরে আর ইথারে ভাসা
শব্দসমূহ হবে এক, এর বেশি আর কিছু নয়
কিন্তু সীমানার ঐপারের নির্বাক মানুষেরা
মুখ–হাত–বাহু নেড়ে বিচিত্র সব ইশারা–ভঙ্গিতে
জানান দিলেন, আরও সব সীমানার ঐপারে
যত কাঁটাতার, বাক্স্বাধীনতা ঝুলে আছে
সেখানে স্বর্ণা আর জয়ন্তর লাশের মতোই,
আর এদিকে মৃত্যুর সীমানার পরে মাটি
আর না–বলা কথার শোক নাকি গলা বেয়ে
পোকা হয়ে নামে, বিবেকের মতন,
অব্যবহৃত কণ্ঠনালিকে এ–জাতীয় যাতনার
হাত থেকে রক্ষা করার উৎসাহে, সাতপাঁচ
ভেবে, মরণোত্তর দেহদানই স্থির করি, উন্মুক্ত
ফরসেপ বেয়ে যদি উঠে আসে দুয়েকটা
অস্ফুট আর্তনাদ, এ আশায় জুতা খুলে
লাশ ঘরে প্রবেশের পূর্বমুহূর্তে দেখি জিহ্বাহীন
লাশেরা সব বর্ণিল প্ল্যাকার্ড হাতে দণ্ডায়মান—
‘জবান বাইরে রেখে প্রবেশ করুন’
ইনফার্নোতারপর কী যেন খেতে বসে
দাঁতে আটকে থাকা শক্ত প্রশ্নটা
বারবার খোঁচায় খালি, বারবার বাধে,
নৃশংস খিলালের আঘাতে তাকে
যতই ছিন্নবিচ্ছিন্ন করি ততই সে
চাগিয়ে ওঠে ধামাচাপা দেওয়া খিদার মতো,
আমি ভাবি গতকাল রাতে ওঠা টক
ঢেকুরটার মতোই যদি ওকে গিলে
ফেলা যেত, নিশ্চয়ই আমাদের
হজমশক্তি মহাবিশ্বের মতোই ক্রমপ্রসারমান
আর আমাদের নিস্পৃহতার পুষ্করিণীতে
যে ঢেউ ওঠে তাতে একটা চড়ুই পাখি
ডুবে গেলে যাক না বারংবার,
সকালে উঠে আবার নামজপে শেষে
খেতে বসতে ভুলে যাব, নিবু নিবু
আগুনে জ্বাল দিয়ে সুস্বাদু করে নেব,
নিকটবর্তী মানবের মর্মন্তুদ সুরুয়া।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব ধ নত
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
ইরান থেকে তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কেনার অভিযোগে ৬টি ভারতীয় কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বিশ্বজুড়ে মোট ২০টি প্রতিষ্ঠানকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে, যাদের মধ্যে ভারতের ৬টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা এসব প্রতিষ্ঠান ইরানের পেট্রোলিয়াম পণ্য কেনাবেচা ও বিপণনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেনদেনে ইচ্ছাকৃতভাবে অংশ নিয়েছে। এতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিষয়ক নিষেধাজ্ঞা ভেঙেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, যেসব ভারতীয় কোম্পানির ওপর মার্কিন সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেগুলো হচ্ছে, অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস, গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস, জুপিটার ডাই কেম, রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি, পার্সিসটেন্ট পেট্রোকেম ও কাঞ্চন পলিমার্স।
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের
ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
নিষেধাজ্ঞার ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে এবং মার্কিন নাগরিক ও কোম্পানিগুলো তাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না। এদের অধীন যেসব সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ৫০ শতাংশ বা তার বেশি মালিকানা রয়েছে, তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।
ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য ইরানের ‘ছায়া নৌবহর’ ও বিশ্বব্যাপী মধ্যস্বত্বভোগীদের দমন করা, যারা ইরানি তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য পরিবহনে সহায়তা করে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান থেকে এই ধরনের পণ্য কেনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো তেহরানকে অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহের সুযোগ করে দিচ্ছে। আর এই অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে হিজবুল্লাহ, হুথি বিদ্রোহী, হামাসসহ অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর সহায়তায় এবং যুদ্ধপরিস্থিতি উসকে দিতে। মার্কিন সরকারের মতে, ইরান সরকারের এই নীতিমালার কারণে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়ছে এবং এতে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় কোম্পানি ছাড়াও তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন ও ইন্দোনেশিয়ার কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ