সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন কুয়েত প্রবাসী বাংলাদেশির ঘরের ছবিতে দেখা গেছে, প্রবাসে কঠোর পরিশ্রমে উপার্জিত অর্থের হিসাব কিছু কাগজপত্র আকারে একটি দেয়ালের হ্যাঙ্গারে ঝোলানো রয়েছে। স্পষ্ট বুঝা যায় যে, সেগুলো ব্যাংকের মাধ্যমে প্রেরিত অর্থের রসিদ ছিল। পাশেই ঝোলানো রয়েছে পরিধানের জন্য কয়েকটি সাধারণ পোশাক। এই দৃশ্যটি একজন প্রবাসীর জীবনের এক কঠিন বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে। যেখানে দীর্ঘদিনের ত্যাগ ও কষ্টের পর উপার্জিত অর্থ শেষে প্রায় শূন্যের কোঠায় এসে দাঁড়ায়।

কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। দিনের পর দিন পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে, উন্নত জীবনের আশায় তারা নিজেদের প্রিয়জন ও মাতৃভূমি ছেড়ে পাড়ি জমান প্রবাসে। এখানে এসে তারা দিনরাত পরিশ্রম করেন, অনেক সময় অমানবিক পরিবেশেও কাজ করতে বাধ্য হন। তাদের উপার্জিত প্রতিটি পয়সা আসে কঠোর সংগ্রাম এবং ঘাম ঝরিয়ে।

কিন্তু এই বিপুল আত্মত্যাগের শেষ ফল কী? প্রবাসে উপার্জিত অর্থের একটি বড় অংশ চলে যায় নানান খরচপাতিতে। এর মধ্যে রয়েছে নিজের থাকা-খাওয়া, বাসস্থান ভাড়া, বিভিন্ন বিল পরিশোধ, যাতায়াত খরচ এবং আরো অনেক আনুষঙ্গিক ব্যয়। এছাড়া, দেশে থাকা পরিবারের খরচ, যেমন– সন্তানদের লেখাপড়া, চিকিৎসা, বিয়ে-শাদি, জমি কেনা বা বাড়ি তৈরির মতো বিষয়গুলো তো আছেই। অনেকের ক্ষেত্রে আত্মীয়-স্বজনের আবদার মেটাতেও অর্থের একটি অংশ চলে যায়।

আরো পড়ুন:

কুয়েতে অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে প্রবাসী বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত

কুষ্টিয়ায় প্রবাসীর বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

দীর্ঘদিন এভাবে অর্থ পাঠানোর পর, যখন প্রবাসীরা নিজেদের উপার্জিত অর্থের চূড়ান্ত হিসাব করেন, তখন প্রায়শই দেখা যায় যে, তাদের নিজেদের সঞ্চয় বলে কিছুই নেই। বছরের পর বছর হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর, দিনশেষে তাদের নিজেদের হাতে থাকে প্রায় শূন্য। যে স্বপ্নের বীজ বুনে তাঁরা দেশ ছেড়েছিলেন, সেই স্বপ্নের ফসল ঘরে তোলার আগেই তা খরচের খাতায় মিলিয়ে যায়।

এই চিত্র অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এটি শুধু আর্থিক শূন্যতা নয়, এটি মানসিক হতাশারও জন্ম দেয়। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো বিদেশে কাটিয়েও যখন একজন প্রবাসী দেখেন যে তার নিজের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত নয়, তখন তা গভীর বেদনার কারণ হয়।

প্রবাসীরা মনে করেন, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সকলের উচিত প্রবাসীদের এই দুর্দশার দিকে নজর দেওয়া। তাদের উপার্জিত অর্থের সঠিক ব্যবস্থাপনা, দেশে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি এবং তাদের সঞ্চয়কে সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি। প্রবাসীরা যেন শুধু দেশের অর্থনীতির চাকাই ঘোরানোর উপাদান না হয়ে, নিজেদের জীবনও সমৃদ্ধ করতে পারেন, সেদিকে খেয়াল রাখা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। ছবির এই একটি দৃশ্য যেন সেই নীরব আর্তনাদই প্রকাশ করছে, যা লাখ লাখ প্রবাসীর অন্তরে লুকিয়ে আছে।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রব স প রব স র ন প রব স

এছাড়াও পড়ুন:

সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন

র‍াস্টফ ব্যান্ডের ভোকাল আহরার মাসুদ মারা গেছেন। সেমাবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ভক্তদের কাছে দীপ নামে পরিচিত ছিলেন আহরার মাসুদ। 

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ শিল্পীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। 

আরো পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা

রাস্টফ ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে দীপের মৃত্যুর খবর জানিয়ে লেখা হয়, “এমন এক বেদনাদায়ক মুহূর্তে সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া বা কোনো শব্দ খুঁজে পাওয়া—প্রায় অসম্ভব। প্রিয় ভোকালিস্ট, বন্ধু ও সহযাত্রী আহারার ‘দীপ’ মাসুদের মৃত্যুসংবাদ আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা শোকে ভেঙে পড়েছি, এখনো অবিশ্বাসের ভেতর ডুবে আছি। গত রাতেই তিনি আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন।” 

দীপের শূন্যতা ব্যাখ্যা করে লেখা হয়, “তার পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের অন্তরের সমবেদনা ও প্রার্থনা। আপনাদের মতো আমরাও এই অপূরণীয় ক্ষতি বোঝার চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি দীপের অসাধারণ প্রতিভাকে সম্মান জানাতে এবং তার চেয়েও বড় কথা—মানুষ হিসেবে তিনি আমাদের কাছে যে অমূল্য ছিলেন, তাকে স্মরণ করতে। এই কঠিন সময়ে সবার কাছে অনুরোধ, দয়া করে পরিবার ও কাছের মানুষদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন এবং তার আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন। শান্তিতে ঘুমাও, দীপ। তোমার শূন্যতা চিরকাল বেদনাময় হয়ে থাকবে।” 

তরুণদের কাছে জনপ্রিয় আরেকটি ব্যান্ড পাওয়ারসার্চও দীপের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, “স্মরণ করছি আহরার মাসুদ দীপকে। কিছুক্ষণ আগে আমরা হারিয়েছি আমাদের প্রিয় ভাই, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং এক সত্যিকারের শিল্পীকে। এক্লিপস, কার্ল, ক্যালিপসো ও সবশেষ রাস্টফ ব্যান্ডের অবিস্মরণীয় কণ্ঠ আহরার মাসুদ দীপ আমাদের মাঝে আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” 

পাওয়ারসার্চ আরো লেখেন, “আহরার মাসুদ দীপ শুধু একজন ভোকালিস্টই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শক্তি, সৃজনশীলতা আর আবেগের প্রতীক, যিনি তার চারপাশের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছেন; একই সাথে তার অত্যন্ত নমনীয় ব্যবহার, যা সবাইকে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীই করে ফেলত! শান্তিতে থাকো ভাই, তুমি সব সময় আমাদের গল্পের অংশ হয়ে থাকবে।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোররাতে রণক্ষেত্র: নরসিংদীতে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ৫
  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন