হাকিমপুরে চিকিৎসককে মারধরের মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাসহ ১০ জন গ্রেপ্তার
Published: 1st, August 2025 GMT
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর ছাড়পত্র দেওয়াকে কেন্দ্র করে একজন সহকারী সার্জনসহ চার স্বাস্থ্যকর্মীকে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হাকিমপুর পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
হাকিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও পৌর শহরের চণ্ডীপুর এলাকার আবদুল্লাহ আল মামুন (৩৫), সাদ্দাম হোসেন (৩৬), ওয়াদুদ হোসেন (৩৬), আলতাফ হোসেন (৪৫) ও মো.
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল রাতে হাকিমপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুনের পদ স্থগিত করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। এ ঘটনায় আজ দুপুরে মামলা করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল আটটায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত ছিলেন সহকারী সার্জন মশিউর রহমান। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের দেখতে যান। পরে তিনি হাসপাতালের ৩ নম্বর কেবিন পরিদর্শনে গিয়ে চিকিৎসাধীন ওমর ফারুক ও তাঁর স্ত্রী সুখী খাতুনের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ছাড়পত্র নেওয়ার পরামর্শ দেন। এ সময় তাঁরা ছাড়পত্র নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে সহকারী সার্জন মশিউর রহমান হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চলে যান। পরে বেলা সোয়া একটার দিকে ওমর ফারুক ও তাঁর স্ত্রী সুখী খাতুন তাঁদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিয়ে বাইরে থেকে ১০–১১ জনকে হাসপাতালে ডেকে আনেন। এ সময় পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন ও তাঁর সঙ্গীরা জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মশিউর রহমান, স্বাস্থ্য সহকারী ফয়সাল হোসেন, স্বাস্থ্যকর্মী রুহুল আমিন ও হোসনে মোবারককে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখান। এ সময় সহকারী সার্জন মশিউর রহমান গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুল্লাহ তাঁর (মশিউর) গালে ঘুষি ও লাথি মারেন। এ সময় তাঁকে বাঁচাতে স্বাস্থ্যকর্মী ফয়সাল হোসেন, রুহুল আমিন, হোসনে মোবারক এগিয়ে গেলে আসামিরা তাঁদেরও এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মেরে জখম করেন।
এ বিষয়ে হাকিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় আজ দুপুরে থানায় একটি মামলা হয়েছে। পরে বিকেলে দিনাজপুর ডিবি পুলিশের সহযোগিতায় মামলার এজাহারনামীয় ১০ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স স ব স থ যকর ম আবদ ল ল হ ম রধর র স র জন উপজ ল এ সময় সহক র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
চিকিৎসককে মারধর করলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা
দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মশিউর রহমানকে মারধর ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. মামুনের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত অবস্থায় মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমানের উপর হামলা চালান মামুনসহ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল।
মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমান বলেন, ‘‘হাসপাতালে ফারুক ও তার স্ত্রী ১২ থেকে ১৩ দিন ধরে ভর্তি আছেন। তাদের সব ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এখন তারা সুস্থ। তাদের আজকে রিলিজ দিতে চেয়েছি কিন্তু তারা রিলিজ নিতে চান না। এ বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার বাগবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে মামুনসহ ১০ থেকে ১২ জন এসে আমার উপর আক্রমণ করেন। মামুন আমার মুখে কিল-ঘুষি মারেন এবং সবাই আমার গলা চেপে ধরে বাহিরে নিয়ে যান। আমার মোবাইল ফোনও তারা কেড়ে নেন।’’
আরো পড়ুন:
অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা
সাভারে গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন, দগ্ধ দম্পতি হাসপাতালে
হাকিমপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মামুন বলেন, ‘‘ডা. মশিউর রহমান আমাকে ধাক্কা দেন। তখন এ ঘটনা ঘটে। তবে আমি তাকে মারিনি। আমার সঙ্গের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।’’ মশিউর রহমানের মোবাইল ফোন তখনি ফেরত দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘‘হাসপাতালের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। অভিযুক্ত মামুনকে চিকিৎসকদের সামনে মারধর করেছি। বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছে।’’
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছি। তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।’’
হাকিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘হাসপাতালের ঘটনা অবগত হয়েছি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’
দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. আসিফ ফেরদৌস বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে উপজেলা বিএনপির নেতারা হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় যাবো।’’
ঢাকা/মোসলেম/বকুল