এখনই পদক্ষেপ না নিলে ভারতের মানচিত্রে হিমাচল প্রদেশ থাকবে না: সুপ্রিম কোর্ট
Published: 2nd, August 2025 GMT
এখনই প্রকৃতির দিকে নজর না দিলে ভারতের মানচিত্র থেকে হিমাচল প্রদেশ একদিন মুছে যাবে। লাগামছাড়া উন্নয়নের রাশ টানতে সবাইকে এভাবে সতর্ক করেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ওপর জোর দিয়ে সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, পরিস্থিতির বদল না হলে গোটা রাজ্যটাই একদিন হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জে বি পর্দিওয়াল ও বিচারপতি আর মাধবনের ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল শুক্রবার এক মামলায় এই উদ্বেগ প্রকাশ করে জনস্বার্থে একটি মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মামলায় হিমাচল প্রদেশ সরকারকে চার সপ্তাহের মধ্যে মতামত জানাতে বলেছেন।
হিমাচল প্রদেশের এক হোটেল সংস্থা নির্মাণকাজে বাধা পেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছিল। নির্মাণকাজে বাধা দিয়েছিল রাজ্য সরকার। গত জুনে রাজ্যের শহর ও শহরতলি উন্নয়ন পর্ষদের ঘোষিত ‘গ্রিনজোন’ এলাকায় ওই নির্মাণকাজ চালানো হচ্ছিল। এর বিরুদ্ধে ওই হোটেল সংস্থা হাইকোর্টে মামলা করে।
ওই সংস্থার করা মামলায় হাইকোর্টের রায় বিধিনিষেধের পক্ষে যাওয়ায় তারা সুপ্রিম কোর্টে যায়। হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ করতে সুপ্রিম কোর্ট অস্বীকার করেন। কিন্তু বিচারপতিরা বলেন, তাঁরা বৃহত্তর স্বার্থে ও মানুষের ভালোর জন্য কিছু মন্তব্য করতে চান।
এরপর বিচারপতিরা বলেন, এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। বিধিনিষেধ অনেক আগে থেকেই জারি করা উচিত ছিল। হিমাচল প্রদেশের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ থেকে আরও খারাপ হয়ে গেছে। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। সেই কারণে বেশ কিছু বছর ধরে ভয়ংকর ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটে চলেছে। এই বছরেও শত শত মানুষ বন্যায় ভেসে গেছেন। ভূমিধসে প্রাণ হারিয়েছেন। ধ্বংস হয়েছে বিপুল সম্পত্তি।
বিচারপিতরা বলেন, ‘রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে আমরা এটাই বোঝাতে চাই, শুধু রাজস্ব আদায়ই একমাত্র লক্ষ্য হতে পারে না। উচিতও নয়। পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের বারোটা বাজিয়ে রাজস্ব আদায় চলতে থাকলে একদিন আসবে, হিমাচল প্রদেশ রাজ্যটাই বিলীন হয়ে যাবে।’
আরও পড়ুনভারতে উড়োজাহাজে সহযাত্রীর থাপ্পড়ের পর খোঁজও মিলছে না যাত্রীর: পরিবারের দাবি৪ ঘণ্টা আগেসুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বলেন, এই অবস্থার জন্য প্রকৃতি নয়, মানুষই দায়ী। মানুষ প্রকৃতিকে রক্ষা করতে পারেনি। অত্যাচার চালিয়ে গেছে। লাগামছাড়া উন্নয়নের পথে হেঁটেছে। চার লেনের রাস্তা তৈরি হয়েছে। রোপওয়ে করা হয়েছে। পাহাড়ে সুড়ঙ্গ তৈরি হয়েছে। বসতি বিস্তার হয়েছে। ভূতত্ত্ববিদ, পরিবেশবিশেষজ্ঞ, স্থানীয় মানুষ কারও মতামত নেওয়া হয়নি। আয় বাড়াতে পরিবেশ–সংক্রান্ত যাবতীয় নিয়ম উপেক্ষা করে কাজ চালানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা আরও বলেন, পর্যটনই রাজ্যের আয়ের মূল উৎস। কিন্তু পরিবেশের তোয়াক্কা না করে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটক বৃদ্ধি রাজ্যকে রসাতলে পাঠাবে। এখনই সতর্ক হতে হবে। দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে গোটা রাজ্যই একদিন বিলীন হয়ে যাবে।
কয়েক বছর ধরে হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখন্ডের মতো হিমালয়ের দুই রাজ্যে হড়পা বান, অতিবৃষ্টি, ভূমিধসের প্রকোপ বেড়ে চলেছে। নানা ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে। এক মাস আগেই হিমাচল প্রদেশে বন্যায় ১৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্য সরকারের হিসাবে গত ২০ জুন বর্ষা শুরু হওয়ার দিন থেকে এ পর্যন্ত দেড় হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৫২টি বাড়ি।
বিচারপতিরা বলেন, দেদার গাছ কাটা ও লাগামছাড়া জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি বন্ধ করা দরকার। অপ্রয়োজনীয় নির্মাণকাজেরও রাশ টানা উচিত। যত পর্যটক আসছে, তত ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের। এখনই সতর্ক না হলে মানচিত্র থেকে রাজ্যটাই মুছে যাবে।
আরও পড়ুনটানা বৃষ্টি, ভারতের হিমাচল ও উত্তরাখন্ডে রেড অ্যালার্ট১২ জুলাই ২০২৩.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ব চ রপত ব চ রপত র পর ব শ র সরক র একদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমস্যা কী, সমাধান কোথায়: শুনুন তামিমের মুখে
এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? কোন বিষয়টি সবার আগে সমাধান করা উচিত?
দুটি প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই অনেক কথাই বলবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কারও বিষয়টি ভালো জানার কথা। যেমন তামিম ইকবাল। প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র তামিমের সামনে দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। তামিমের উত্তর, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের ফ্যাসিলিটিজ (অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধা) নাই।’
প্রথম আলোর কার্যালয়ে উৎপল শুভ্রকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আড্ডার মেজাজে তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। নিজের ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য—এসব নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন সাবেক এই ওপেনার।
আলাপচারিতার একপর্যায়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ মুহূর্তের সমস্যার প্রসঙ্গ উঠেছিল। অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধার অভাবকে সামনে টেনে এনে তামিম বলেছেন, ‘একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার হয় কিংবা বাংলাদেশের মতো দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার একটি (ক্রিকেট), যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, তার আশপাশেও নেই। পৃথিবীর তৃতীয়, চতুর্থ ধনী বোর্ডের যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, আমরা এর আশপাশেও নেই।’
তামিম বিষয়টি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করলেন, ‘ক্রিকেট দলের প্রতি ভক্তদের যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণের জন্য যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার, আমরা তার আশপাশেও নেই। আপনি মাঝারি মানের ক্রিকেটার হতে পারেন কিংবা মাঝারি মানের ব্যাটসম্যান হতে পারেন, সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে কিন্তু আপনি মাঝারি মান থেকে দুই ধাপ ওপরে উঠতে পারবেন।’
মুশফিকুর রহিম