ফেনীর দাগনভূঞায় বিএনপির শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে দলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে দাগনভূঞা পৌর শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রার আয়োজন করে দাগনভূঞা উপজেলা ও পৌর বিএনপি। শোভাযাত্রাটি চৌমুহনী সড়ক হয়ে জিরো পয়েন্টে পৌঁছালে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া দলের আরেকটি পক্ষ সেখানে অতর্কিতে হামলা চালায়।

এ সময় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি জাহানারা বেগম, ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইমুন হক, সদস্যসচিব তৌহিদুল ইসলাম, ছাত্রদলের কর্মী সোহেল, সরোয়ার, বেলাল, সিফাত ও মিলন। তাঁদের দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

দাগনভূঞা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকবর হোসেন বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রায় পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইফুর রহমান, আবুল হাশেম ও ছাত্রদল থেকে বহিষ্কৃত জামশেদুর রহমানের নেতৃত্বে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে ১০ থেকে ১৫ নেতা–কর্মী আহত হন।’ তিনি বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইফুর রহমান বলেন, ‘আমরা জিরো পয়েন্টে পূর্বঘোষিত রক্তদান কর্মসূচি পালন করছিলাম। শোভাযাত্রা চলাকালে তাঁদের কয়েকজন নেতা–কর্মী কটূক্তি করলে কথা–কাটাকাটি হয়। পরে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। বরং তাঁদের হামলায় আমাদের পাঁচ কর্মী আহত হয়েছেন।’

দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ এস এম সোহরাব আল সোহাইন তানভীর বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়ে ১২ জন চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১১ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন, একজনকে ফেনী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। এ ঘটনায় কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র দ গনভ ঞ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জোট বেঁধে প্যানেল দিল ছাত্র অধিকার ও মজলিস, নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে জোট বেঁধে প্যানেল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ইসলামী ছাত্র মজলিস। এই প্যানেলের নাম দেওয়া হয়েছে সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ। এই প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) পদে লড়বেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের শাখা আহ্বায়ক ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী তামজিদ উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হিসেবে থাকবেন ইসলামী ছাত্র মজলিসের শাখা সভাপতি ও আরবি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব মাহামুদ।

আজ শনিবার বেলা একটায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কলার ঝুপড়ির সামনে সংবাদ সম্মেলন করে প্যানেল ঘোষণা করা হয়। এ সময় সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে কি না, তা নিশ্চিত নয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের পদত্যাগ দাবি করা হয়।

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক তামজিদ উদ্দিন প্যানেল ঘোষণা করেন। এ সময় প্যানেলের জিএস প্রার্থী ও ইসলামী ছাত্র মজলিসের শাখা সভাপতি সাকিব মাহামুদ বলেন, শুরুতে ছাত্র অধিকার ‘চাকসু ফর র‍্যাপিড চেঞ্জ’ নামে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছিল। পরে ক্যাম্পাসের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীসহ সব ধরনের শিক্ষার্থী নিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্যানেল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে কারণে প্যানেলের নাম ঘোষণা করা হয়েছে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’।

নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ সময় সাকিব মাহামুদ বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে আমরা শঙ্কিত। বিগত সময়ে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবি করা হয়েছে। তবে এখনো প্রক্টর চাকসু কমিটিতে রয়েছেন। যার কারণে এখনো আমাদের দাবি—প্রক্টরসহ প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ করবে। যেহেতু তারা তাদের ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা আশা করছি, শিক্ষার্থীদের দায় নিতে পারবে, এমন প্রক্টরিয়াল বডি আসবে। সব মিলিয়ে আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে নির্বাচনের বিষয়ে শঙ্কামুক্ত নই।’

এই প্যানেল থেকে সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে লড়বেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের শাখা সদস্যসচিব ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রোমান রহমান। এ ছাড়া খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে মো. সবুজ, সহ–খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে মো. জাহাঙ্গীর আলম, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে দেওয়ান আব্দুর, সহ–সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে সিয়াম আল ইহসান, দপ্তর সম্পাদক পদে তৌহিদুল ইসলাম, সহ–দপ্তর সম্পাদক পদে শাফিন রহমান, ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে সানজিদা আক্তার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক পদে মাজহারুল ইসলাম, গবেষণা ও উদ্ভাবনবিষয়ক সম্পাদক পদে তৌহিদুল ইসলাম, সমাজসেবা ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক পদে মেহেদী হাসান, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক পদে জহিরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক পদে জিয়াউদ্দিন সায়েম, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে নাজমুস সাদাত, যোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক পদে মো. নাজমুছ ছাকিব, সহ–যোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক পদে রায়হান আব্দুল্লাহ, আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক পদে ইয়াছিন আরাফাত, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক পদে মো. মারুফ এবং নির্বাহী সদস্যপদে মো. মুজাহিদুল্লাহ, কাজী বেলাল হোসেন, আবিদ হাসান ও সালমান মাহাম্মদের নাম ঘোষণা করা হয়।

বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্টের আংশিক প্যানেল ঘোষণা করা হচ্ছে। আজ দুপুরে চাকসু ভবনের সামনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ