নিয়োগ ও পদোন্নতি দেওয়ার কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মচারীদের সম্মানী বাড়ল
Published: 21st, October 2025 GMT
সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও দপ্তরে নিয়োগ ও পদোন্নতি দেওয়ার কাজে যেসব কর্মকর্তা নিয়োজিত, তাঁদের সম্মানী বা পারিতোষিকের হার বাড়িয়েছে সরকার।
দুই বছর আট মাসের মাথায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গতকাল সোমবার এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করেছে। আগের পরিপত্রটি জারি করা হয়েছিল ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি। তার আগের পরিপত্র জারি করা হয়েছিল ২০১৯ সালের ৭ মার্চ।
নতুন পরিপত্রে বলা হয়েছে, প্রশ্নপত্র প্রস্তুতকারী সরকারি কর্মকর্তা, পদোন্নতি কমিটির সদস্য ও মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা) নেওয়া সদস্যদের সম্মানী হবে এখন জনপ্রতি ছয় হাজার টাকা; এত দিন যা পাঁচ হাজার টাকা করে ছিল। তার আগের পরিপত্রে এটি ছিল তিন হাজার টাকা।
২০১৯-২০২৫ সময়ের তিন পরিপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ছয় বছরে প্রশ্নপত্র প্রস্তুতকারী সরকারি কর্মকর্তা, পদোন্নতি কমিটির সদস্য ও মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা) নেওয়া সদস্যদের সম্মানীর হার দ্বিগুণ হয়েছে।
উত্তরপত্র মূল্যায়নের হারও বাড়ানো হয়েছে নতুন পরিপত্রে। প্রতিটি পূর্ণাঙ্গ উত্তরপত্র দেখার জন্য এত দিন সম্মানী ছিল ১২০ টাকা; এখন তা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে। অবজেকটিভ টাইপ উত্তরপত্র দেখার জন্য এত দিন সম্মানী ছিল ২০ টাকা; এখন তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩৫ টাকা।
উত্তরপত্র মূল্যায়নের আপ্যায়ন ব্যয় ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দুপুরের খাবার বা নাশতার বিল আগের মতোই ২০০ টাকা রাখা হয়েছে।
লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষার জন্য জড়িত গ্রেডভেদে কর্মচারীরা পাবেন প্রতিদিনের জন্য ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা করে। এত দিন এটি ছিল ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা।
এ ছাড়া পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রধানের মনোনীত সমন্বয়ক আগের ৩ হাজার টাকার বদলে এখন ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে পাবেন। লিখিত পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শক পাবেন প্রতিদিন ১ হাজার ৮০০ টাকা; এটি এত দিন ছিল ১ হাজার ৫০০ টাকা করে।
এ ছাড়া নিয়োগ ও পদোন্নতিবিষয়ক কাগজ-কলম ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচের জন্য সর্বোচ্চ আট হাজার টাকার নতুন সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি আগে পাঁচ হাজার টাকা ছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ এত দ ন র জন য সরক র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে কেন উড়োজাহাজভাড়া এত বেশি, মোদির ‘উড়ান’ কি তাহলে ফাঁপা বুলি
সালমান শহীদ ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর অঞ্চলের বৃহত্তম শহর শ্রীনগর ও নয়াদিল্লির মধ্যে নিয়মিত যাতায়াত করেন। তিনি শ্রীনগরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজিতে (আইআইটি) ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ব্যক্তিগত কোচিং সেন্টার চালান। কিন্তু তাঁর পরিবার থাকে রাজধানী নয়াদিল্লিতে।
উড়োজাহাজে যাতায়াত শহীদের সময় অনেকটা বাঁচিয়ে দেয়। কিন্তু এখন এই খরচ মেটানো তাঁর জন্য ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে।
শহীদ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির আগে শ্রীনগর থেকে নয়াদিল্লি পর্যন্ত একমুখী ফ্লাইটের গড় ভাড়া ছিল প্রায় ৩ হাজার ৩০০ রুপি (প্রায় ৩৭ দশমিক ২০ মার্কিন ডলার)। এখন একই টিকিটের দাম ৫ হাজার রুপির (প্রায় ৫৬ ডলার) বেশি। তা–ও আবার খুব সীমিত সময়ে টিকিট করলে এমন দামে পাওয়া যায়।
উড়োজাহাজ ভাড়ার এই প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি শহীদের যাতায়াতের রুটিনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। তিনি বলেন, ‘আমি এখন ততটা ঘন ঘন যাতায়াত করি না। আগে মাসে অন্তত চারটি আসা-যাওয়া করতাম। এখন তা কমে দুটিতে দাঁড়িয়েছে।’
শহীদ মনে করেন, ২০১৯ সালে ভিস্তারা এয়ারলাইনসের মাত্র ১ হাজার ৭০০ রুপিতে টিকিট বুক করার কথা। এখন সেই ধরনের দাম স্বপ্ন মনে হয়। এত কম সময়ের মধ্যে ভাড়া এতটা বাড়ল কেন, তা কোনোভাবেই তাঁর মাথায় ঢুকছে না। এই না বোঝার তালিকায় শহীদ একা নন।
ভাড়া বৃদ্ধির হার দ্বিতীয় সর্বোচ্চনভেম্বরে প্রকাশিত এয়ারপোর্টস কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনালের (এসিআই) এক গবেষণা অনুসারে, ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ভারতে অভ্যন্তরীণ উড়োজাহাজভাড়া ২০১৯ সালের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে ভিয়েতনামের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আন্তর্জাতিক ভাড়াও ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই খাতে ভারতের অবস্থান তৃতীয়।
এসিআই এবং ফ্লেয়ার অ্যাভিয়েশন কনসাল্টিংয়ের যৌথ গবেষণায় এই বৃদ্ধির কারণ হিসেবে উচ্চ চাহিদা, কিছু রুটে সীমিত প্রতিযোগিতা এবং ২০১৯ সাল থেকে বিমান টারবাইন জ্বালানি (এটিএফ) ব্যয়ের ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধিকে অজুহাত হিসেবে দেখানো হয়েছে।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে দিল্লিতে প্রতি কিলোলিটার জেট ফুয়েলের দাম ছিল ৬৮ হাজার ৫০ রুপি (প্রায় ৭৫৯ ডলার), যা ২০২৫ সালের অক্টোবরে বেড়ে হয়েছে ৯৩ হাজার ৭৬৬ রুপি (প্রায় ১ হাজার ৪৬ ডলার)। এয়ারলাইনসগুলো মহামারির সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতেও ভাড়া বাড়াচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৫ সালে সুনির্দিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কোনো গবেষণা না এলেও সারা বছর ধরেই দাম বাড়তে দেখা গেছে।
ভারতের বড় এয়ারলাইনস প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম একটি হচ্ছে ইন্ডিগো