বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেছেন, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) প্রোটোকল মেনেই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। বিমানবন্দরে সপ্তাহে এক দিন ফায়ার ড্রিল (অগ্নিনির্বাপণ মহড়া) করা হয়। এমনকি আগুন লাগার পরও আইসিএওর সব নিয়ম মেনে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় বেবিচক ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান।

আরও পড়ুনশাহজালাল বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজে আগুনের ভিডিও১৮ অক্টোবর ২০২৫

ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে (পণ্য রাখার স্থান) গত শনিবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে আগুন লাগে। আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয় ২৬ ঘণ্টা পর। এ ঘটনায় কোনো প্রাণহানি হয়নি। তবে প্রাথমিক হিসাবে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার পণ্য ও কাঁচামাল পুড়ে গেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ক্ষয়ক্ষতি আরও বেশি হতে পারে বলে উল্লেখ করছেন তাঁরা।

মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, আগুনের কারণে বিমানবন্দরের কার্গো অপারেশন এক দিনের জন্যও বন্ধ রাখা হয়নি। ৯ নম্বর গেট দিয়ে কার্যক্রম চালু আছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, আগুনের সূত্রপাত কোনো আমদানি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। রানওয়ের অ্যাপ্রনে পণ্যসামগ্রী স্তূপ করে রাখা হয়েছিল। এর কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশে সমস্যা হয়। এর দায় বিমান, ঢাকা কাস্টম হাউস ও সিঅ্যান্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্টদের। নিয়ম অনুযায়ী ২১ দিনের মধ্যে পণ্য অপসারণের কথা। কিন্তু সেখানে বছর ধরে পণ্য পড়ে থাকে। তবে তিনি তদন্তের স্বার্থে কোনো সংস্থার ওপর দায় দিতে চান না।

আরও পড়ুনআজ পণ্য খালাসের কথা ছিল, ১৯ লাখ টাকা শুল্কও দিলাম, কিন্তু সব পুড়ে শেষ: ব্যবসায়ীর আহাজারি১৯ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুনআগুন পুরোপুরি নিভল ২৬ ঘণ্টায় ১৯ অক্টোবর ২০২৫

ফায়ার সার্ভিসের গাড়িকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি—এমন অভিযোগের বিষয়ে মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, এটা সত্য নয়। তিনি বিষয়টি নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছেন। ফায়ার সার্ভিস এমন কোনো অভিযোগ করেনি। তবে যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্সটি বেবিচকের উল্লেখ করে সংস্থার চেয়ারম্যান বলেন, তবে ভেতরের কার্যক্রম পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ঢাকা কাস্টম হাউস ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা।

মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, আগুনের ঘটনায় তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে বিমানবন্দরের ভাবমূর্তির কোনো ক্ষতি হবে না।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, আর্থিক বিষয়ে সমঝোতা না হওয়ায় বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে নতুন কার্গো ভবন বুঝে নেওয়া যাচ্ছে না। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যে টাকা দাবি করছে, তার সঙ্গে তাদের প্রায় হাজার কোটি টাকার একটি ব্যবধান রয়েছে।

দ্রুত জানতে পেরেও শুরুতে কেন কার্গো ভিলেজের আগুন নেভানো যায়নিআরও পড়ুনশাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন নিয়ন্ত্রণে, ৭ ঘণ্টা পর উড়োজাহাজ ওঠানামা শুরু ১৮ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুনশাহজালাল বিমানবন্দরে আগুন নিয়ন্ত্রণে, ফ্লাইট চালু১৮ অক্টোবর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ হজ ল ল আগ ন র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

যাঁরা জাতির ভবিষ্যৎ গড়েন, তাঁদের সুবিধা দিতে কেন পিছুটান দেখাই রাশেদা কে চৌধূরী

দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা টানা ১০ দিন ধরে ঢাকার রাস্তায় আন্দোলন করেছেন বাড়িভাড়া ও অন্যান্য সুবিধা বাড়ানোর দাবিতে। এ সময়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে নানা ধরনের বক্তব্য এসেছে; কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপের ঘাটতি ছিল স্পষ্ট। শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারকে ধন্যবাদ জানাই—তিনি নিজেও একজন শিক্ষক হিসেবে বিষয়টি অনুধাবন করে অর্থ বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন এবং বিভিন্ন পর্যায়ে উদ্যোগও নিয়েছেন। কিন্তু জানা গেছে, প্রস্তাবটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে আটকে ছিল।

শিক্ষা পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আমার প্রশ্ন, সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বেতন–ভাতা বাড়াতে যখন বেতন কমিশন হয়, তখন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–কর্মচারীদের বিষয়টি কেন গুরুত্ব পায় না? তাঁদের জন্য আলাদা বেতন কমিশন গঠন করা যেতে পারে। সরকারি কর্মচারীদের সুযোগ–সুবিধা ক্রমেই বাড়ছে, অথচ যাঁরা জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণের কারিগর, তাঁদের ক্ষেত্রে কেন পিছুটান দেখা যায়—এটাই দুঃখজনক।

আরও পড়ুনএমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া বাড়ছে ১৫ শতাংশ, কার্যকর দুই ধাপে২ ঘণ্টা আগে

নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও অন্তর্বর্তী সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত (দুই ধাপে কার্যকর হবে) নিয়েছে—এর জন্য তাঁদের ধন্যবাদ। আশা করব, আগামীতে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, তারা যেন শিক্ষক–কর্মচারী ও শিক্ষাকে রাজনৈতিক দৃষ্টিতে না দেখে, মানবসম্পদ গঠনের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে শোনা যাচ্ছে। সক্ষমতা অনুযায়ী সেটি করা যেতে পারে, তবে শুধু জাতীয়করণই সমস্যার পূর্ণ সমাধান নয়। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের দিকও ভাবতে হবে।

বাড়ি ভাড়া বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে ১২ অক্টোবর থেকে আন্দোলন করছেন এমপিওভূক্ত শিক্ষক–কর্মচারিরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ