দুবাইয়ের রাজকন্যাকে কতটা জানেন?
Published: 5th, September 2025 GMT
দুবাইয়ের রাজকন্যা শেখ মাহরা আল মাকতুম। শরীরি সৌন্দর্যের কারণে বহু আগে নজর কেড়েছেন। রাজপরিবারের এই কন্যার শোবিজ অঙ্গনেও পদচারণা রয়েছে। রাজকীয় আয়োজনে বিয়ে করে যেমন আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন, তেমনই বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েও খবরের শিরোনাম হন মাহরা। প্রথম সংসার ভাঙার এক বছরের মাথায় মার্কিন র্যাপারের সঙ্গে বাগদান সেরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। চলুন জেনে নিই, দুবাইয়ের এই রাজকন্যার আদ্যোপান্ত—
শেখ মাহরা কে
সংযুক্ত আর আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের কন্যা শেখ মাহরা। ২০০৬ সাল থেকে দুবাইয়ের শাসক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ মোহাম্মদ। তার ভাই মাকতুম বিন রশিদের মৃত্যুর পর এই পদে আসেন তিনি। শেখ মোহাম্মদের একাধিক স্ত্রী রয়েছে। তার ঔরসজাত সন্তান ২৬ জন। শেখ মাহরা তাদেরই একজন। শেখ মাহরার মা হলেন গ্রিক সোশ্যালাইট জোই গ্রিগোরাকোস। ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন শেখ মাহরা। তার বয়স এখন ৩১ বছর।
শেখ মোহাম্মদ মূলত রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্ট থেকে বিপুল সম্পদ আয় করেছেন। দুবাইকে আধুনিক শহরে রূপান্তরের পেছনে অন্যতম কারিগর শেখ মোহাম্মদ। পাম আইল্যান্ডস ও বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফার মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন শেখ মাহরা। তারপর বাবার পথ অনুসরণ করে উদ্যোক্ত হন। ‘মাহরা এম১’ নামে পারফিউম ব্র্যান্ড চালু করেন।
রাজকন্যার বিয়ে
২০২৩ সালের মে মাসে পারিবারিক আয়োজনে বিয়ে করেন শেখ মাহরা আল মাকতুম। তার বরও ওই রাজবংশেরই সদস্য। তার নাম শেখ মানা বিন মোহাম্মদ বিন রশিদ বিন মানা আল মাকতুম। শেখ মাহরার বর শেখ মানা একজন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা। দুবাইয়ে আবাসন ব্যবসা ও প্রযুক্তি খাতে কয়েকটি সফল ব্যবসায়িক উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
শেখ মাহরার নাটকীয় বিচ্ছেদ
২০২৩ সালে বিয়ে করেন শেখ মাহরা। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ইনস্টাগ্রামে বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন রাজকন্যা। এ পোস্টে শেখ মাহারা লেখেছিলেন, “প্রিয় স্বামী, যেহেতু আপনি অন্য সঙ্গীদের সঙ্গে ব্যস্ত, আমি আমাদের বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দিচ্ছি। আমি আপনাকে তালাক দিচ্ছি, আমি আপনাকে তালাক দিচ্ছি, আমি আপনাকে তালাক দিচ্ছি।” যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলেন রাজকুমারী। জানা যায়, মাহরার বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছিলেন তার বাবা।
রাজকন্যাও একজন মা
শেখ মানা ও শেখ মাহরা দম্পতির বিচ্ছেদ হলেও তার একটি সন্তান রয়েছে। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শেখ মাহরা। কন্যার নাম রেখেছেন শেখ মাহরা বিনত মানা বিন মোহাম্মদ আল মাকতুম।
মাহরার নতুন প্রেমের গুঞ্জন
২০২৪ সালের অক্টোবরে গুঞ্জন চাউর হয়, মার্কিন গায়ক ফ্রেঞ্চ মন্টানার সঙ্গে প্রেম করছেন শেখ মাহরা। মূলত, মন্টানাকে নিয়ে দুবাইয়ে ঘোরাঘুরির ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করার পর এই গুঞ্জন চাউর হয়। এরপর প্যারিস ফ্যাশন উইকে হাতে হাত রেখে অংশ নেন তারা; যা তাদের সম্পর্ককে জনসমক্ষে নিয়ে আসে। তারপর শেখ মাহরা ও মন্টানার বিশ্ব ভ্রমণ ও রেস্টুরেন্টে খাওয়ার ছবি প্রকাশ করে মার্কিন গণমাধ্যম টিএমজেড। তাছাড়া ডিজনি ওয়ার্ল্ড ঘোরাঘুরি ও প্যারিসে ভালোবাসার তালায় নিজেদের নাম লেখেন তারা। পরবর্তীতে সেই ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন।
ফ্রেঞ্চ মন্টানার আসল নাম করিম খারবুশ। মরক্কোয় জন্ম ও বেড়ে ওঠা খারবুশ ১৩ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ২০০০ সালের শুরুতে ‘ইয়াং ফ্রেঞ্চ’ নামে আনুষ্ঠানিক সংগীতজীবন শুরু করেন। ‘আনফরগেটেবল’, ‘নো স্টাইলিস্ট’ ও ‘ওয়েলকাম টু দ্য পার্টি’ এর মতো বিখ্যাত গানের এই জনক ‘ফ্রেঞ্চ মন্টানা’ নামে খ্যাতিলাভ করেছেন।
মাহরাকে প্রেমিকের বিয়ের প্রস্তাব
চলতি বছরের জুনে প্যারিস ফ্যাশন উইকে র্যাম্পে হাঁটার পর গায়ক মন্টানা মাহরাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এরই মধ্যে তারা বাগদান সম্পন্ন করেছেন। গত ২৭ আগস্ট মন্টানার এক প্রতিনিধি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনোদন ও তারকাদের খবরবিষয়ক ওয়েবসাইট টিএমজেডকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। মরক্কোর বংশোদ্ভূত এই মার্কিন র্যাপারের প্রতিনিধি টিএমজেডকে জানান, গত জুনে প্যারিস ফ্যাশন সপ্তাহের সময় মন্টানা আনুষ্ঠানিকভাবে মাহরাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তবে কবে তারা পাকাপাকিভাবে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন, তা নিয়ে কিছু জানা যায়নি।
মন্টানা-মাহরার বিয়েতে দুই পরিবারই সম্মতি দিয়েছেন। এ বিষয়ে মন্টানার প্রতিনিধি বলেন, “বিয়ের পরিকল্পনা শুরু হয়েছে, তবে নির্দিষ্ট তারিখ ও আয়োজন এখনো চূড়ান্ত হয়নি। উভয় পরিবার এই সম্পর্কে খুশি ও সমর্থন জানিয়েছে।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ খ ম হ ম মদ মন ট ন র র জকন য কর ছ ন পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ