নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন বিএনপিতে, চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের স্থান নেই। আর আমরাও আমাদের দলে কোন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদেরকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। 

আর যদি এই এলাকায় কেউ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী , মাদক বেচাকেনা করে তাহলে আপনারা তাদেরকে ধরে বেঁধে পুলিশকে খবর দিবেন প্রয়োজনে আমাদেরকে খবর দিও আমরা এসে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবো। যারা এই সকল কর্মকান্ড করবেন আমাদের দলে তাদেরকে স্থান দেওয়া হবে না। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন বন্দর থানা ২৫নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১দফা বাস্তবায়নে জনসম্পৃক্ততা ও লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেল চারটায় বন্দরের উত্তর লক্ষণখোলায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে গডফাদার শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান, আজমেরী ওসমান ও অয়ন ওসমান সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে মানুষের জীবনকে অতিষ্ট করে রেখেছিল। আমরা চাইনা বিএনপি ক্ষমতায় আসলে নারায়ণগঞ্জে কোন গডফাদারদের সৃষ্টি হোক।

আমরা চাইনা বিগত দিনে ওই বিএনপির নামধারীরা যারা বিএনপি'র নাম ভাঙ্গে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সাথে আঁতাত করে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে নির্যাতন করেছে। আমরা চাইনা তারা বন্দরে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে কোন কার্যকলাপ করুক।

কারণ তারা দল করে না তারা সুবিধাবাদী। তারা দল থেকে পদত্যাগ করেছে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা যদি এখন বিএনপির নাম ভাঙ্গে কোন কিছু করতে চায় তাহলে আপনারা তাদেরকে বেঁধে রাখবেন। 

তিনি আরও বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুযোগ্য পুত্র তারেক রহমান দেশকে নতুন করে সংস্কারের জন্য ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের ঘোষণা করেছেন।

আগামী নির্বাচনে আপনারা বিএনপিকে ক্ষমতায় এনে ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর সুযোগ করে দিবেন। যখনই ক্ষমতায় এসেছিল দেশকে সমৃদ্ধশীল করেছিল এবং দেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর চেষ্টা করেছে। আগামী দিনও যেন আমরা আপনাদের মুখে হাসি ফুটাতে পারি তার জন্য আমরা আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি এবং আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন। 

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ২৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফারুক হোসেনের সভাপতিত্বে এবং মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান চুন্নু সাঈদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড.

সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেনশাহ আহম্মেদ। 

এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডাঃ মজিবর রহমান, মাকিত মোস্তাকিম শিপলু, ২৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি বাবুল হোসেন, সহ- সভাপতি মো.দাদন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আঃ সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান টুলু, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক আঃ রাহিম, প্রচার সম্পাদক মো. মিলন, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ, বন্দর থানা যুবদল নেতা আব্দুর রহমান, সজিব আহমেদ, মাহবুব আলমসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র স র রহম ন ওসম ন আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ

ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না। 
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস চালু হচ্ছে ১০ মাস পর
  • অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত
  • আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
  • মে দিবসের সমাবেশকে সফল করতে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভা 
  • নারায়ণগঞ্জে বালক (অনূর্ধ্ব-১৫) ফুটবল প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তরুণের মৃত্যু
  • নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবিতে স্মারকলিপি
  • জেলা প্রশাসককে ২৪’র শহীদদের স্মারক দিল জামায়াত
  • কমিউনিষ্ট পার্টির হাফিজের বিরুদ্ধে ইসমাইলের সংবাদ সম্মেলন
  • কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ