হট্টগোলের মুখে বগুড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কমিটি স্থগিত
Published: 3rd, February 2025 GMT
বগুড়া জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটি সাত দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
রোববার রাতে বগুড়ার পর্যটন মোটেলে নাগরিক কমিটির মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে বগুড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় কথা কাটাকাটি ও তুমুল হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। পরে কমিটি স্থগিতের সিদ্ধান্তে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়া জেলা শাখার ৩৩৫ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে চাঁদাবাজ, অছাত্র, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লেজুড়বৃত্তিতে জড়িত ব্যক্তিরা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীদের একাংশ। শনিবার তারা সংবাদ সম্মেলন করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই কমিটি বাতিলের সময় বেঁধে দেন।
এদিকে রোববার বগুড়া পর্যটন মোটেলে নাগরিক কমিটির মতবিনিময় সভায় কেন্দ্রীয় নেতা সাকিব মাহাদীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সেখানে যায়। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা গাজী সালাউদ্দীন তানভীর ও বগুড়া জেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরাও সেখানে যান। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে কমিটি বাতিল করার দাবি জানান এবং ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দেন। এ সময় কথা কাটাকাটি ও তুমুল হট্টগোল হয়। একপর্যায়ে হাসনাত আবদুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সদ্যঘোষিত বগুড়া জেলা কমিটি সাত দিনের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান সাহেদ বলেন, পর্যটন মোটেলে সন্ধ্যায় পূর্বনির্ধারিত নাগরিক কমিটির মতবিনিময় সভা ছিল। সেখানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিতর্কিত কমিটির সদস্যদের ডাকা হয়েছিল। প্রতিবাদে জুলাই আন্দোলনে যুক্ত বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে বিতর্কিতদের নিয়ে সভা করার প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে কেন্দ্রীয় নেতারা সদ্যঘোষিত বগুড়া জেলা কমিটি সাত দিনের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দেন। তারা সংশোধিত কমিটি ঘোষণা করবেন বলেও আশ্বস্ত করেছেন।
তবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি বগুড়া জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটির কোনো সদস্য।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেলের অনুমোদন দেওয়া বগুড়া জেলা কমিটিতে সরকারি আজিজুল হক কলেজের মাহমুদুল হাসানকে আহ্বায়ক ও সরকারি শাহ সুলতান কলেজের সাকিব খানকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। গাবতলীর সৈয়দ আহম্মেদ কলেজের আজিম উদ্দিনকে মুখ্য সংগঠক ও সরকারি আজিজুল হক কলেজের মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক কম ট র কল জ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।
ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।
আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।