কোটালীপাড়ায় বিএনপির এক পক্ষের সভা পণ্ড করল অপর পক্ষ
Published: 4th, February 2025 GMT
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বিএনপির এক পক্ষের সভা পণ্ড করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অপর পক্ষের বিরুদ্ধে। এসময় সভাস্থলের চেয়ার টেবিলও নিয়ে যান তারা।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গারহাট বাজারের উত্তর পাশে ঘটনাটি ঘটে।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেওয়া ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে সভা আহ্বান করা হয়। সভায় আনোয়ারের পক্ষেরর নেতাকর্মীরা আসার আগেই উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ গাইনের নেতৃত্বে একটি দল সভাস্থলে ঢুকে চেয়ার টেবিল নিয়ে যায়। পরে আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ও তার সমর্থকেরা সভাস্থলে না গিয়ে ভাঙ্গারহাট বাজার থেকে আবার উপজেলা সদরে ফিরে যান।
আরো পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সুযোগ নেই: অনিন্দ্য ইসলাম
নাটোরে মহাসড়কে বিক্ষোভ, বিএনপি নেতার কুশপুতুল দাহ
কোটালীপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, “দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে আমরা একটি সভার আহ্বান করি। এই সভার খবর পেয়ে সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ গাইনের নেতৃত্বে কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি আমাদের সভাস্থলের চেয়ার ও টেবিল নিয়ে যায়। সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের প্রবীণ নেতা কমল বৈদ্য এই সভার আয়োজন করেছিলেন। আমরা সংঘর্ষ এড়াতে সভা না করে ফিরে আসি।”
উপজেলা বিএনপি নেতা কমল বৈদ্য বলেন, “আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে ভাঙ্গারহাট বাজারের উত্তর পাশে প্রমথ বাড়ৈর বাগানবাড়িতে প্রবীণ নেতাদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করি। সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন বিএনপির কিছু উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মী আমাদের সভা পণ্ড করে দেয়। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।”
সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ গাইন বলেন, “কিছুদিন আগে সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটির বাইরে এখানে কোনো সভা করতে হলে আমাদের সঙ্গে লিয়াজো করে করা উচিত ছিল। আজকের সভার ব্যাপারে আমাদের অবগত করা হয়নি। আমরা মনে করি তারা দুষ্কৃতকারী। তাই তাদের সভা করতে দেওয়া হয়নি।”
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এস এম মহিউদ্দিন বলেন, “কেউ যদি আওয়ামী লীগের দালাল হয়ে (আনোয়ার হোসেন হাওলাদার) বিএনপির মিটিং করতে চায় তাহলে নেতাকর্মীরা মেনে নেবে না। সেই মিটিং তো হতে পারে না। কোটালীপাড়ায় যারা বিএনপি করে তাদের মাধ্যমেই মিটিং হতে হবে। সেটা না হলে কেউ মেনে নেবে না।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র স ন ব এনপ র ন ত কর ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রতিদিন মনে হয়, আজ বুঝি ম্যাডামকে নিয়ে ভালো খবর পাব’
‘প্রতিদিন এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে আসি। প্রতিদিন মনে হয়, আজ বুঝি ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভালো কোনো খবর পাব।’
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁকে নিয়ে কথাগুলো বলেন মীর জসিম।
আজ রোববার সকালে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে কথা হয় মীর জসিমের সঙ্গে। তিনি নিজেকে বিএনপির একজন সমর্থক হিসেবে পরিচয় দেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের পাশের একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন বলে জানালেন মীর জসিম। তিনি বলেন, প্রতিদিন আশুলিয়া থেকে ঢাকায় আসেন। অফিসে ঢোকার আগে এক বার হাসপাতালের সামনে আসেন।
মীর জসিম বলেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা নন। তবে খালেদা জিয়ার কারণে তিনি ছোটবেলা থেকে বিএনপিকে সমর্থন করেন।
মীর জসিম বলেন, ‘প্রতিদিন এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে আসি। প্রতিদিন মনে হয়, আজ বুঝি ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভালো কোনো খবর পাব। গণমাধ্যমে যেসব খবর প্রচার হয়, সেগুলো দেখি ঠিকই। কিন্তু মনকে বোঝাতে পারি না। তাই এখানে ছুটে আসি। না এলে ভালো লাগে না। মনের ভেতরে কেমন জানি করে।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে লোকজন ভিড় করেছেন। তাঁদের মধ্যে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষ আছে। তাঁরা এখানে এসে দোয়া করছেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খবর নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
যারা এখানে আসছেন, তাঁরা বলছেন, তাঁদের প্রত্যাশা একটাই—খালেদা জিয়া যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
বিএনপির আরেক সমর্থক আনোয়ার হোসেন। তিনি এসেছেন নেত্রকোনা থেকে। আনোয়ার হোসেন বলেন, গত দুদিন ধরে তিনি ঢাকায় আছেন। তিনি মূলত খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতেই এসেছেন। তিনি জানেন, খালেদা জিয়াকে দেখার সুযোগ হবে না। তারপরও এসেছেন মনের টানে।
সকাল নয়টা থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে অবস্থান করে দেখা যায়, ধীরে ধীরে নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা এখানে জড়ো হচ্ছেন। তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে কথা বলছেন। খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করেছেন।
গত ২৩ নভেম্বর রাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।
আরও পড়ুনএখনো বিদেশে নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া ১০ ঘণ্টা আগেখালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো স্থিতিশীল নয়। এ কারণে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি বলে চিকিৎসক ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত আছে। তবে বিদেশে চিকিৎসার বিষয়টি নির্ভর করছে তাঁর শারীরিক অবস্থার অর্থাৎ দীর্ঘ যাত্রার ধকল নিতে শারীরিকভাবে উপযোগী কি না, সেটার ওপর।
আরও পড়ুনখালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিলেই ঢাকায় আসবে কাতারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স২০ ঘণ্টা আগেসাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র গতকাল শনিবার রাতে প্রথম আলোকে জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার নানা শারীরিক জটিলতার মধ্যে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসের সমস্যা ওঠানামা করছে। এর কিছু কিছু কখনো নিয়ন্ত্রিত, আবার হঠাৎ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কিডনির সমস্যার কারণে খালেদা জিয়ার শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে গিয়েছিল, সেটি বেড়েছে। কিডনির কার্যকারিতা সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে, ফুসফুসেরও উন্নতি আছে। তবে তিনি এখনো আশঙ্কা মুক্ত নন।
আরও পড়ুনখালেদা জিয়ার জন্য জার্মানির প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়া করে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছে কাতার০৫ ডিসেম্বর ২০২৫