জুলাই অভ্যুত্থানের নেতারা এখন পরাজিত শক্তির ‘টার্গেট’: আসিফ মাহমুদ
Published: 14th, December 2025 GMT
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনাকে জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের ওপর পরিকল্পিত হামলা হিসেবে দেখছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।
জুলাই অভ্যুত্থানের এই নেতা বলেছেন, ‘আমরা দেখেছি গত দুই দিনে বাংলাদেশে কী কী ঘটে গেছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে পরাজিত হওয়ার আভাস পেয়ে এ দেশকে মেধাহীন করতে চেয়েছিল, ঠিক একইভাবে চব্বিশের পরাজিত শক্তি, ফ্যাসিস্ট শক্তি পরাজিত হওয়ার পর এ দেশকে নেতৃত্বহীন করার জন্য জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদের টার্গেট করছে। তার অংশ হিসেবে ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি এখন জীবন–মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।’
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আজ রোববার সকালে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আসিফ মাহমুদ, যিনি এখন সংসদ নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় ওসমান হাদি ঢাকা–৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে প্রচার চালানোর সময় গত শুক্রবার দুপুরে বিজয়নগরে আক্রান্ত হন। মোটরসাইকেলে আসা দুই ব্যক্তি তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায়। মাথায় গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদি এখন সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওসমান হাদির ওপর হামলার জন্য গত বছরের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে দায়ী করছেন তাঁর সমর্থকেরা। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদির ওপর হামলাকে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি এই হামলার নিন্দা জানিয়ে যেকোনো ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি শুধু ওসমান হাদি নয়, আরও অনেককে হিটলিস্টে রাখা হয়েছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, একাত্তরে যেমন হানাদার বাহিনীর এবং তাদের এদেশীয় দোসরদের ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। ঠিক একইভাবে এবারও পরাজিত ফ্যাসিবাদের দোসরদের কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র সফল হবে না।’
আরও পড়ুনওসমান হাদির ওপর আঘাত মানে জুলাইয়ের ওপর আঘাত: নুরুল হক১৯ ঘণ্টা আগেওসমান হাদির মতো আসিফ মাহমুদও স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ঢাকা–১০ আসনে লড়তে চাইছেন তিনি। জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদে শপথ নিয়েছিলেন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর গত ১০ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন।
বুদ্ধিজীবী দিবসে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে যান আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, যে প্রত্যাশা নিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়েছিল, ৫৪ বছর পরে এসেও প্রাপ্তি অনেক কম। সে কারণেই ২০২৪ সালে জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে।
আরও পড়ুনষড়যন্ত্র ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে দলগুলোর সাড়া২০ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওসম ন হ দ র পর জ ত র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি এবং ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা শ্রদ্ধা জানান। এসময় সেখানে তারা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল তাদের গার্ড অব অনার দেয়। বিউগলে বেজে ওঠে করুন সুর।
আরো পড়ুন:
শহীদ মিনারে বদরুদ্দীন উমরের প্রতি সর্বস্তরের শ্রদ্ধা
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: শরীয়তপুরের ২ শিক্ষার্থীর কবরে বিমান বাহিনীর শ্রদ্ধা
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মসমর্পণ শুরু করে। অনিবার্য পরাজয় উপলব্ধি করতে পেরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মেধাবী মানুষদের ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও নতুন রাষ্ট্রকে মেধা শূন্য করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের মেধাবী মানুষদের চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যাযজ্ঞ চালায়। বাঙালি জাতি যাতে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের তালিকা করে হত্যা করা হয়।
ঢাকা/মাসুদ