Risingbd:
2025-12-13@17:54:00 GMT

মামলা করবেন না সাজিদের বাবা

Published: 13th, December 2025 GMT

মামলা করবেন না সাজিদের বাবা

রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে গভীর নলকূপের পরিত্যক্ত বোরহোলে পড়ে দুবছরের শিশু সাজিদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ দেশ। যে ব্যক্তি বোরহোলটি খুঁড়েছিলেন, সেই কছির উদ্দিন ঘটনার পর থেকেই পলাতক। মাটির প্রায় ৫০ ফুট গভীর থেকে সাজিদের নিথর দেহ উদ্ধারের পর প্রথমে অবহেলার অভিযোগ তুলে তার বিচার দাবি করলেও এখন মামলা করতে চান না শিশুটির বাবা রাকিবুল ইসলাম।

শনিবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘‘আল্লাহর মাল আল্লাহই নিয়েছেন। আমরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি মামলা করব না।’’ 

পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। 

আগে অবহেলার অভিযোগ তুলে বিচার চাওয়ার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিলে রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘‘সেটা বলেছিলাম যেন গোটা দেশ সতর্ক হয়। এই ভুলটা আর কেউ যেন না করে- এ জন্যই কথাটা বলেছিলাম। আমার বাচ্চাটা যেভাবে গেছে, সবাই যদি আগে থেকেই সচেতন হয়, তাহলে ইনশাআল্লাহ এমন ক্ষতি আর হবে না। আমার ঘটনার মধ্য দিয়ে যদি অন্যরা শিক্ষা পায়, সেটাই চাই।’’

মামলা না করতে কোনো ধরনের চাপ আছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘আমার ওপর কোনো চাপ নেই। গোটা দেশ আমাদের পক্ষে আছে। ইনশাআল্লাহ পুলিশ-প্রশাসনও আমাদের পাশে আছে।’’

পলাতক কছির উদ্দিন এলাকায় ফিরে কোনো সহানুভূতি জানিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘‘না। উনি এখনও এলাকায় আসেননি। আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করেননি।’’

উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশেই কছির উদ্দিনের জমিতে থাকা গভীর নলকূপের ৮ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের পরিত্যক্ত বোরহোলে পড়ে যায় শিশু সাজিদ। ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৩১ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের পর বৃহস্পতিবার রাতে মাটির ৫০ ফুট নিচ থেকে সাজিদের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় সাজিদের মা রুনা খাতুন শুরু থেকেই বিচার দাবি করে আসছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কছির উদ্দিন আমার বাড়ির পাশে এভাবে তিন জায়গায় গর্ত করে ফেলে রেখেছে। কেন এভাবে ফেলে রাখল, গর্তগুলো কেন বন্ধ করল না? আমি বিচার চাই। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কছির উদ্দিন আগে বিদেশে ছিলেন। দেশে ফিরে তিনি পানির ব্যবসা শুরু করেন এবং এলাকায় পাঁচটি অগভীর নলকূপ (সেমিডিপ) স্থাপন করেন। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে এসব সেমিডিপ চালানো হচ্ছিল।

বছরখানেক আগে উপজেলা সেচ কমিটির অনুমোদন ছাড়াই আরও একটি সেমিডিপ বসাতে বোরহোল করান কছির উদ্দিন। মাটির প্রায় ৯০ ফুট গভীরে যাওয়ার পর পাথর উঠতে থাকায় তিনি পরপর তিনটি স্থানে বোরহোল করেন। তবুও পানির সন্ধান না মেলায় সেখানে সেমিডিপ বসানো হয়নি। সেই পরিত্যক্ত বোরহোলগুলোর একটিতে পড়ে মারা যায় শিশু সাজিদ। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা খান বলেন, ‘‘কছির উদ্দিনের অবহেলার কারণেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ভিকটিমের পরিবার যেভাবে চাইবে, সেভাবেই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

পদাধিকারবলে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি হিসেবে ইউএনও জানান, কছির উদ্দিনের আগের কয়েকটি সেচপাম্প বৈধ কি না যাচাই করা হবে। তবে যে বোরহোলে পড়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে, সেটির জন্য কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এটি ছিল বেআইনি কাজ।

এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে নাঈমা খান বলেন, ‘‘সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ঘটনার পর থেকেই কছির উদ্দিন আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

ঢাকা/শিরিন//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ক ব ল ইসল ম ব রহ ল আল ল হ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠন

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বা তালিকাভুক্ত হতে চাওয়া কোম্পানিগুলোর নিরীক্ষা সম্পন্ন করা যোগ্য নিরীক্ষক ও নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করার নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এরই ধরাবাহিকতায় দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাদের অতিরিক্ত আরো ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম কমার শীর্ষে মেঘনা পেট্রোলিয়াম

ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম বাড়ার শীর্ষে জিল বাংলা সুগার মিলস

সম্প্রতি এই বিষয়ে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘প্যানেল অব অডিটরস অ্যান্ড অডিট ফার্মস তালিকাভুক্তির জন্য নীতিমালা’-এর বিদ্যমান খসড়ায় প্রয়োজনীয় সংশোধন এবং ‘আইপিওর জন্য উপযুক্ত এবং যথাযথ তালিকাভুক্তির মানদণ্ড’-সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুসারে নীতিমালা পুনর্নির্মাণ করতে বলা হয়েছে।

তাই কমিশন দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটির দায়িত্ব পালন করবেন বিএসইসির প্রধান হিসাব রক্ষক কামরুল আনাম খান এবং বিএসইসির সহকারী পরিচালক তন্ময় কুমার ঘোষ।

কমিশন এই কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত ত্রিশ কার্যদিবস বৃদ্ধি করেছে। আদেশের অন্যান্য শর্তাবলি অপরিবর্তিত থাকবে।‌ এই আদেশ যথাযথ অনুমোদনের সঙ্গে জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অথবা কোনো কোম্পানি যখন তালিকাভুক্ত হতে চায়, তখন বিএসইসির নির্দিষ্ট তালিকা থেকে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তার আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করতে হয়। এর বাইরে অন্য কোনো নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে নিরীক্ষা করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। ইতোমধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও রুলসেরে নতুন বিধিমালার খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বর্তমানে অংশীজনদের সঙ্গে আইপিও আইনের মতামত নিয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে। তাই এই আইনের সঙ্গে যোগ্য নিরীক্ষক বা নিরীক্ষা ফার্মের নতুন তালিকা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত তালিকা কার্যকর হলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও আইপিও প্রক্রিয়ায় আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষার মান আরো উন্নত হবে। এতে করে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা সহজ হবে।

বিএসইসি জানিয়েছে, কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা আরো ৩০ কর্মদিবস বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে এ আদেশের অন্যান্য শর্তাবলি অপরিবর্তিত থাকবে। যথাযথ অনুমোদন সাপেক্ষেই এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলেও কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বাজার-সংশ্লিষ্টদের মতে, নিরীক্ষক ও নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি স্পষ্ট ও মানসম্মত তালিকা প্রণয়ন হলে আর্থিক অনিয়ম কমবে এবং করপোরেট গভর্ন্যান্স জোরদার হবে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে দেশের পুঁজিবাজার আরো শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা/এনটি/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ