রিয়ালের ওপর চাপ বাড়াল বার্সেলোনা
Published: 14th, December 2025 GMT
লা লিগার শিরোপার দৌড়ে রিয়াল মাদ্রিদের ওপর চাপ বাড়িয়েছে বার্সেলোনা। শনিবার রাতে ওসাসুনাকে ২-০ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থান আরও সংহত করেছে কাতালান ক্লাবটি। আজ রাতে আলাভেসের মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ। জিততে না পারলে ১৭ রাউন্ডে বার্সার সঙ্গে ব্যবধান হয়ে যাবে ৬ বা ৭।
গতকাল রাতে বার্সেলোনা ক্যাম্প ন্যুতে জিতেছে রাফিনিয়ার জোড়া গোলে। দুটি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। প্রথমার্ধে মোট ১৩টি শট নিয়েও ওসাসুনার রক্ষণ ভাঙতে পারেনি বার্সেলোনা।
বার্সা প্রথম গোল পায় ৭০ মিনিটে। এই গোলে একটি মাইলফলকও স্পর্শ করেছে লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। লা লিগায় সর্বশেষ ৩৭ ম্যাচেই অন্তত একটি করে গোল করেছে বার্সা। দলটি সর্বশেষ এমন কীর্তি গড়েছিল ২০১৮-১৯ সালে। সে সময় লুইস এনরিকে ও আর্নেস্তো ভালভার্দের অধীনে ভিন্ন দুই মৌসুম মিলিয়ে টানা ৩৭ গোলে গোল করেছিল বার্সা।
প্রথম গোল করা রাফিনিয়া ৮৬ মিনিটে আরেকটি গোল করে বার্সার জয় প্রায় নিশ্চিত করেন। এটি ছিল এবারের লিগে তাঁর ষষ্ঠ গোল। ফুটবলের খুঁটিনাটি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান অপটার পরিসংখ্যান বলছে, চলমান ২০২৫-২৬ মৌসুমে বার্সেলোনাই শীর্ষ পাঁচ লিগের একমাত্র ক্লাব, যাদের ভিন্ন চারজন খেলোয়াড় পাঁচ বা তার বেশি গোল করেছেন।
বার্সার হয়ে এবার লিগে রাফিনিয়া ছাড়াও পাঁচ বা তার বেশি গোল করেছেন ফেরান তোরেস (১১), রবার্ট লেভানডফস্কি (৮) ও লামিনে ইয়ামাল (৬)।
রাফিনিয়ার জোড়া গোলে ওসাসুনাকে হারানোর পর বার্সেলোনার মোট পয়েন্ট ১৭ ম্যাচে ৪৩। রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ১৬ ম্যাচে ৩৬। জাবি আলোনসোর দলের আজকের প্রতিপক্ষ আলাভেস ১৫ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে ১১ নম্বরে আছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল কর ছ
এছাড়াও পড়ুন:
সেন্ট মার্টিনে যেতে পর্যটকের চাপ, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব টিকিট আগাম বিক্রি
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটকের চাপ বেড়েছে। কক্সবাজার শহর থেকে প্রতিদিন ছয়টি জাহাজে প্রায় দুই হাজার পর্যটক দ্বীপটিতে যাচ্ছেন। মৌসুমের শুরুতে দৈনিক যেতেন ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ জন। জাহাজমালিকেরা জানিয়েছেন, পর্যটকের চাপে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব জাহাজের টিকিট আগাম বিক্রি হয়ে গেছে।
জাহাজমালিকদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন অন্তত তিন হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তবে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দৈনিক দুই হাজারের বেশি পর্যটক বহনের অনুমতি নেই। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।
গত ১৩ দিনে অন্তত ২১ হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করেছেন। এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বার আউলিয়া, কেয়ারি সিন্দাবাদ ও কেয়ারি ক্রুজের পরিচালকেরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত টিকিট বিক্রি শেষ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো জাহাজের টিকিট অবিক্রীত নেই। এমভি কর্ণফুলী জাহাজের টিকিট আগামী ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। অন্য পাঁচটি জাহাজের প্রায় ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
এর আগে গত ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য সেন্ট মার্টিন দ্বীপ উন্মুক্ত করা হয়। তবে নভেম্বর মাসে রাতযাপনের অনুমতি না থাকা ও জাহাজ চলাচল সীমিত থাকায় সে মাসে কোনো পর্যটক দ্বীপে যাননি। চলতি ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের সুযোগ রাখায় পর্যটক বেড়েছে।
কক্সবাজার হোটেল-গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্র ও শনিবার কক্সবাজার সৈকতে অন্তত দুই লাখ পর্যটক এসেছেন। তাঁদের অনেকেরই সেন্ট মার্টিন যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আসনসংখ্যা সীমিত হওয়ায় সেই ইচ্ছা অনেকের পূরণ হয়নি।
কঠোর নজরদারিতে পর্যটকসেন্ট মার্টিন যেতে পর্যটকদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। নির্দেশনা অনুযায়ী, বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্ট মার্টিনে চলাচল করতে পারবে না। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে।
এ ছাড়া দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় রাতের বেলায় সৈকতে আলো জ্বালানো, উচ্চ শব্দ, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা কেনাবেচা, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ সব ধরনের মোটরচালিত যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয় উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা প্রথম আলোকে বলেন, দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের ১২ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কিউআর কোড সংযুক্ত টিকিট ছাড়া কাউকে জাহাজে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। দৈনিক দুই হাজারের বেশি পর্যটকও যেতে পারবেন না। যাত্রীরা প্লাস্টিক বা পলিথিন বহন করছেন কি না, তা জাহাজে ওঠার আগেই তদারকি হচ্ছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, সেন্ট মার্টিন যাতায়াত ও দ্বীপে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণেও নজরদারি চলছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী, দ্বীপসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।