মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার পর তাঁদের আনা হয়।

সেনা কর্মকর্তাদের আনা উপলক্ষে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেনা, বিজিবি, পুলিশ, র‍্যাব, এপিবিএন সদস্যরা ট্রাইব্যুনাল এলাকায় সকাল থেকে অবস্থান নিয়ে আছেন।

যে তিন মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে, এর মধ্যে দুটি গুমের ঘটনায় করা মামলা। এর একটি হলো বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই সেল) গুম করে রাখার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা। এই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আসামি ১৭ জন। এ মামলার ১০ আসামি গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.

জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, মো. কামরুল হাসান, মো. মাহাবুব আলম এবং কে এম আজাদ; কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে); লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান, সাইফুল ইসলাম সুমন ও মো. সারওয়ার বিন কাশেম। তাঁদের আজ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) গুম করে রাখার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেকটি মামলার আসামি ১৩ জন। এর মধ্যে ১০ আসামি পলাতক। তিন আসামি গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক তিনজন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী। তাঁদের আজ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে।

এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় আসামি চারজন। এর মধ্যে দুজন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম। তাঁদের আজ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম নবত ব র ধ কর মকর ত অপর ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

টিএফআই সেলে গুমের মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের আদেশ ২১ ডিসেম্বর

টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই সেল) গুম করে রাখার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আগামী ২১ ডিসেম্বর আদেশ দেবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ রোববার আদেশের এই দিন ঠিক করেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আজ শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মামলার ১৭ আসামির অব্যাহতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। এরপর আদালত এই আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হবে কি না, সে বিষয়ে আদেশ দেওয়ার দিন ধার্য করেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে টিএফআই সেলে গুম করে রাখার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আসামি ১৭ জন।

তার মধ্যে ১০ আসামি গ্রেপ্তার রয়েছেন। তাঁরা হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, মো. কামরুল হাসান, মো. মাহাবুব আলম এবং কে এম আজাদ; কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে); লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, সাইফুল ইসলাম সুমন ও মো. সারওয়ার বিন কাশেম।

তাঁদের সবাইকে আজ কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। মামলা থেকে তাঁদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তাবারক হোসেনসহ দুই আইনজীবী।

ছাত্র গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, তাঁর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ পলাতক ৭ আসামির অব্যাহতির আবেদন করেন তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত তিন আইনজীবী।

আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনকালে গুমের বহু অভিযোগ ওঠে। গত বছর অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গুমসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে।

গুমের ঘটনায় দুটি মামলার অন্যটিতে আসামি ১৩ জন। জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) গুম করে রাখার ওই মামলার আসামিদের মধ্যে ১০ জন পলাতক। গ্রেপ্তার আছেন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক তিনজন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।

জুলাই আন্দোলন দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে আলাদা মামলায় গত ১৭ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

গুমের অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রেখে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন আইন করেছে। গত ২ ডিসেম্বর গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করা হয়।

আরও পড়ুনগুমে জড়িতদের মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে০২ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টিএফআই সেলে গুমের মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের আদেশ ২১ ডিসেম্বর