Prothomalo:
2025-12-14@11:17:36 GMT

হিজরতের ৫টি শিক্ষা

Published: 14th, December 2025 GMT

সাহাবিদের হিজরতের ঘটনাবলি কেবল ইতিহাসের অংশ নয়, বরং তা মুমিন জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। তাদের হিজরতের ঘটনা ও ত্যাগের আদর্শ থেকে কয়েকটি মৌলিক শিক্ষা উঠে আসে:

১. হিজরত প্রথমত আল্লাহর আদেশ পালন

হিজরত কেবল কৌশলগত পরিকল্পনা ছিল না, বরং ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক ইবাদতমূলক নির্দেশ। এই কারণে সাহাবিরা সবচেয়ে প্রিয় বস্তু—ঘরবাড়ি, সম্পদ, আত্মীয়স্বজন—সহজে ত্যাগ করতে পেরেছিলেন। (মুহাম্মদ সাইদ রমাদান আল-বুতি, ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা: ১৫৬, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ২০০৪)

২.

ইমানের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ

হিজরত শেখায় যে একটি জাতির ভিত্তি স্থাপন এবং সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য চরম মূল্য দিতে হয়। সুহাইব তাঁর সব সম্পদ, আবু সালামা তাঁর পরিবার এবং বনু জাহশ (রা.) জন্মভূমি ত্যাগ করে এই মূল্য পরিশোধ করেছিলেন। এই ত্যাগ বিনা মূল্যে অর্জিত হয়নি।

আরও পড়ুনমদিনায় হিজরত: ইসলামের ৬টি মাইলফলক০২ জুলাই ২০২৫৩. ইমানের সম্পর্ক অন্য সব সম্পর্ক থেকে ঊর্ধ্বে

ওমর (রা.) আইয়াশকে যখন তার মায়ের দোহাইয়ের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছিলেন, তা প্রমাণ করে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আনুগত্যের বন্ধন অন্য সব জাগতিক সম্পর্ক (গোত্র, পরিবার, রক্ত) থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।

৪. ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসা

হিজরত মোটেই বিশৃঙ্খল ছিল না। ওমর (রা.)-এর পরিকল্পনা, কাফেলাবদ্ধ হয়ে যাত্রা এবং কৌশল অবলম্বন—সবই প্রমাণ করে যে আল্লাহর ওপর নির্ভরতার পাশাপাশি মানবীয় প্রচেষ্টা ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করাও আবশ্যক।

আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫৫. আল্লাহর দয়ার বিশালতা

এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফিতনা ও দুর্বলতা মানুষের জীবনে আসতে পারে। কিন্তু যখন তারা মক্কায় বন্দী হয়ে নিজেদের পাপী মনে করছিলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি নাজিল করে আশার দরজা খুলে দেন, ‘বলো, “হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ (পাপ করেছ), তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন।”’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)

এই আয়াতটি ছিল তাঁদের জন্য এক ঐশী ক্ষমা ও নতুন সুযোগের বার্তা।

হিজরত কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; এটি একটি অক্ষয়–দর্শন—যেখানে ইমান, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগের সমন্বয়ে একটি আদর্শ সমাজ গঠনের বীজ নিহিত ছিল। এই দর্শনই মুসলমানদের নতুন এক দিগন্তে পৌঁছে দেয়।

আরও পড়ুনআবিসিনিয়ায় নারী সাহাবিদের দ্বিতীয় হিজরত১৪ নভেম্বর ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য আল ল হ হ জরত

এছাড়াও পড়ুন:

ওসমান হাদির গ্রামের বাড়িতে নিরাপত্তা জোরদার

ইনকিলাব মঞ্চের গুলিবিদ্ধ আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির গ্রামের বাড়িতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ঝালকাঠির নলছিটিতে তাঁর বাড়িতে চুরির ঘটনার পর ওই বাড়িসহ আশপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ওসমান হাদির গ্রামের বাড়িতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ মোতায়েন থাকবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আলম।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বায়েজিদ ইবনে আকবর নলছিটির খাসমহল এলাকায় ওসমান হাদির বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, চুরির বিষয়ে তদন্ত চলছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় পালা করে সেখানে চারজন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সারা দেশের মতো শনিবার রাতে নলছিটিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এসব কর্মসূচি থেকে হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আহ্বান জানানো হয়। এদিকে শনিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা ঝালকাঠি-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন।

নলছিটি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক তৌহিদুল আলম বলেন, ‘ওসমান হাদির কাছে দেশপ্রেমই মুখ্য ছিল। আমরা অতি দ্রুত তাঁর ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দেখতে চাচ্ছি।’

ইসলামী আন্দোলনের নলছিটি উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা শাহজালাল হোসাইন বলেন, ‘ওসমান হাদি শুধু নলছিটি না, সারা দেশের সম্পদ। তাঁর রয়েছে অগাধ দেশপ্রেম ও তিনি ফ্যাসিস্টবিরোধী অগ্রদূত। সরকারকে অনুরোধ করব, দ্রুত তাঁর ওপর হামলার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করুন।’

গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি। তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেলেই ঢাকায় চলে যান পরিবারের সদস্যরা। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বাড়ির জানালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ