রাজমিস্ত্রির জোগালি, হোটেল বয় ও ফুডপ্যান্ডার রাইডার থেকে রিফাদুল এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
Published: 14th, December 2025 GMT
দুপুর গড়িয়ে বিকেল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যানটিনের সামনে অপেক্ষা করছি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কড়িঘর উচ্চবিদ্যালয় থেকে উঠে আসা রিফাদুল ইসলামের জন্য। একটু পরেই তিনি এলেন। মুখে বিজয়ের হাসি, কিন্তু সেই হাসির আড়ালে লুকিয়ে আছে ফেলে আসা কঠিন দিনের দীর্ঘশ্বাস।
এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের ফি জোগাতে করেছেন রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজ। কখনো রেস্তোরাঁ কিংবা মুঠোফোন সারানোর দোকানে শ্রম দেওয়া, আবার কখনো ওষুধের দোকানে কাজ করা। ঢাকায় এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ চালাতে গায়ে জড়িয়েছেন ফুডপ্যান্ডার রাইডারের জ্যাকেট। জীবনের চড়াই–উতরাই পেরিয়ে দরিদ্র ঘরের এই ছেলে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিভাগের শিক্ষার্থী। রিফাদুল ইসলামের এই উঠে আসার গল্প কোনো রূপকথার চেয়ে কম রোমাঞ্চকর নয়।
দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেড়ে ওঠা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামে রিফাদুল ইসলামের জন্ম। বাবা আবুল কাশেম পেশায় দরজি এবং মা সুরাইয়া বেগম গৃহিণী। চার ভাই–বোনের মধ্যে রিফাদুল দ্বিতীয়, তবে বড় ছেলে হওয়ায় কাঁধে ছিল পাহাড় সমান দায়িত্ব। অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।
রিফাদুল ইসলাম যখন বুঝতে শিখলেন দারিদ্র্য কী, তখন থেকেই শুরু হলো তাঁর বেঁচে থাকার লড়াই। ছেলের কলেজের পড়াশোনা শুরুর সময় বাবা তাঁর সামান্য জমিটুকুও বিক্রি করে দিয়েছিলেন। রিফাদুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন বুঝি, আমাদের সামান্য যতটুকু জমি ছিল, সেটা আমাদের পড়াশোনা চালানোর জন্যই বাবাকে বিক্রি করতে হয়েছে।’
এসএসসির রেজিস্ট্রেশন ফি জোগাতে রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজ
জীবনের অন্যতম কঠিন সময় ছিল এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের সময়ের দিনগুলো। বাবার পকেটে টাকা নেই। কী করবেন? কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র নন রিফাদুল। টানা এক সপ্তাহ রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজ করলেন। হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে পারিশ্রমিক পেলেন ২ হাজার ১০০ টাকা। রিফাদুল সেই টাকা দিয়েই এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করলেন। স্মৃতিচারণা করে রিফাদুল বলেন, ‘আমার পরিষ্কার মনে আছে, ওই টাকা দিয়ে আমি আমার রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়েছিলাম। রেজিস্ট্রেশন না করলে হয়তো ওখানেই পড়াশোনার ইতি টানতে হতো।’
রিফাদুল ইসলাম.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ফ দ ল ইসল ম র
এছাড়াও পড়ুন:
এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত, অপেক্ষা ফলাফলের, মেধাক্রম যেভাবে
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর ২০২৫) অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন ফলাফলের অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা।
সকাল ১০টা থেকে দেশের ১৭টি কেন্দ্র ও ৪৯টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয় এ পরীক্ষা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করেন।
গত মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর ২০২৫) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, পরীক্ষার সময় গত বছরের তুলনায় ১৫ মিনিট বাড়িয়ে এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট করা হয়েছে। লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তর প্রদানের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর কর্তন করা হবে।
আরও পড়ুনশিক্ষক-কর্মচারীরা আইন পেশা, সাংবাদিকতাসহ একই সঙ্গে অন্য চাকরি করতে পারবেন না, নীতিমালা জারি০৯ ডিসেম্বর ২০২৫মেধাতালিকা নির্ধারণ কীভাবে—এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএ মিলিয়ে মোট ১০০ নম্বর নির্ধারণ করা হবে।
(ক) এসএসসির জিপিএর-৮ গুণ = ৪০।
(খ) এইচএসসির জিপিএর ১২ গুণ = ৬০।
লিখিত পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে এই দুইয়ের যোগফলেই মেধাতালিকা চূড়ান্ত হবে।
*২০২৪ সালের পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে মোট নম্বর থেকে ৩ নম্বর এবং গত শিক্ষাবর্ষে কোনো সরকারি মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজে ভর্তি থাকা প্রার্থীর ক্ষেত্রে ৫ নম্বর কেটে মেধাতালিকা করা হবে।
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে আসনসংখ্যা ৫ হাজার ৬৪৫টি যার মধ্যে এমবিবিএস ৫ হাজার ১০০ এবং বিডিএস ৫৪৫টি। বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে আসনসংখ্যা ৭ হাজার ৪০৬টি। যার মধ্যে এমবিবিএস ৬ হাজার ১ এবং বিডিএস এক হাজার ৪০৫টি। সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ মিলিয়ে মোট আসন ১৩ হাজার ৫১টি। যার মধ্যে এমবিবিএস কোর্সে ১১ হাজার ১০১ এবং বিডিএস কোর্স এক ৯৫০টি আসন। ১৩ হাজার ৫১ টি আসনের জন্য এমবিবিএস এবং বিডিএস কোর্সে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে এ বছর মোট আবেদনকারী ১ লাখ ২২ হাজার ৬৩২ জন।
২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫